এখনো চলছে ‘বাতিল’ ওয়েবিলে গণপরিবহন সেবা
রাজধানীর গণপরিবহনগুলোতে সিটিং সার্ভিস বন্ধ করে ওয়েবিল পদ্ধতি বাতিল ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সেই নিয়মের তোয়াক্কা করছে না মোহাম্মদপুর থেকে যাতায়াতকারী গণপরিবহনগুলো।
মোহাম্মদপুর থেকে ছেড়ে আসা স্বাধীন পরিবহন কোম্পানির কোনো গাড়িতেই নেই কোনো মূল্য তালিকা। ইচ্ছামতো কন্ডাকটররা যাত্রীদের কাছ থেকে ভাড়া আদায় করছে। এ নিয়ে প্রায় প্রতিদিন বিতর্ক থেকে হাতাহাতি হচ্ছে যাত্রীদের সঙ্গে বাসের কন্ডাকটর ও চালকরা ।
মঙ্গলবার ও সোমবার যাত্রী ও পরিবহনকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।
স্বাধীন পরিবহনের এম বাসের কন্ডাকটর সাজ্জাদ। মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) মোহাম্মদপুর থেকে ফার্মগেট ১২ টাকা ভাড়া চাওয়া মাত্র গাড়িতে শুরু হয় হইচই। কেউ বলেন, এত কেন ভাড়া? তালিকা কই। বেশি ভাড়া, দেব না। কেউ বলেন, স্বাধীন গাড়ি ইচ্ছামতো ভাড়া আদায় করছে।
এ সময় প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরিরত আলমগীর হোসেন নামে এক যাত্রী ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ‘কে দেখবে। দেখার কেউ নেই। ৪০ বছর থেকে এই রোডে চলাচল করি। মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা আমি। তেলের দাম ৫ টাকা বাড়ালে গাড়িতে তিন/চার গুণ বৃদ্ধি করেছে। মোবাইল কোর্ট করলে সব ঠিক হয়ে যেত। মোবাইল কোর্ট চললে সব কোম্পানির যে গাড়ি অর্ধেকে নেমে যাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার নিজে মটরসাইকেলে মাপা আছে মোহাম্মদপুর থেকে ফার্ম গেট মাত্র তিন কিলোমিটার। আগে ভাড়া নেওয়া হতো ১০ টাকা। তখন স্বাধীন গাড়ি সিটিং ছিল। আর সরকার নিয়ম করেছে প্রতি কিলোতে আড়াই টাকা। তাহলে ভাড়া হবে সাড়ে সাত টাকা। এখন নেওয়া হচ্ছে ১৩ টাকা। তাও আবার গাদাগাদি করে উঠতে হচ্ছে। উঠলে আবার ভিড়ে সহজে নামা যায় না। এটা মগের মুল্লুক। এভাবে চলা যায় না। কাউকে না কাউকে দেখা দরকার।’
এ সময় একই ধরনের অভিযোগ করেন জসিম নামে অন্য একজন যাত্রী। তিনিও বলেন, ‘প্রায় প্রতিদিন যাতায়াত করি। ভাড়ার তালিকা নেই স্বাধীনে। অন্য অনেক গাড়িতে তা আছে। তারা তালিকা অনুযায়ী ভাড়া নিলেও স্বাধীন ভাড়া বেশি নিচ্ছে।’
ভাড়ার তালিকার বিষয়ে জানতে চাইলে, ওই গাড়ির চালক শাহ আলম ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, মালিকরা ভাড়ার তালিকা দেয়নি। টিকিট হবে, এ জন্য দেয় না। মোহাম্মদপুর থেকে ডেমরার স্টাফ কোয়াটার রুটে মোট ভাড়া বেড়েছে সাত টাকা। আগেই বেশি ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়েছে। তারপরও মালিকরা ভালো নেই। তারা বলছেন টিকিট হবে।’
সোমবার রাতেও নুরুল ইসলাম ও সুজন নামে দুই যাত্রীর সঙ্গে বাস কন্ডাকটরের তর্ক হয়। তারা বলেন, ‘ব্যাটা মগের মুল্লুক পেয়েছিস, যা ইচ্ছা তাই ভাড়া নিবি। তোদের মালিক-সমিতি থেকে বলেছে চেক বা ওয়েবিল বলে কিছু নেই। আর তুই চেক চেক/ওয়েবিল বলে অস্থির হয়ে যাস। আমাদের এভাবে পকেট কেটে নিচ্ছিস।’
উল্লেখ্য জ্বালানি তেলে মূল্যবৃদ্ধির অজুহাতে পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা রাজধানীতে চেকের অজুহাতে যা ইচ্ছা তাই ভাড়া আদায় করতে থাকলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ ১০ আগষ্ট স্পষ্টভাবে বলেছেন, সরকারের নতুন তালিকা অনুযায়ী বাস ভাড়া নেওয়া হবে। আগের সিটিং সার্ভিস বাতিল করা হলো। ওয়েবিলে কোনো ভাড়া নেওয়া হবে না, তা বাতিল করা হলো। তারপরও স্বাধীনভাবে চলছে স্বাধীন গাড়ি।
জেডএ/এমএমএ/