সরকারি চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণা, গ্রেপ্তার ২
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও খাদ্য অধিদপ্তরে সরকারি চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণার অভিযোগে প্রতারক চক্রের ২ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগ।
গ্রেপ্তারকৃতদের নাম মোঃ জহিরুল ইসলাম ওরফে বাপ্পী ও এ এস এম জোবায়ের। শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর ) ডিএমপির কোতয়ালী থানার সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
রবিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া ডিবি লালবাগ বিভাগের সংঘবদ্ধ অপরাধ ও গাড়ি চুরি প্রতিরোধ টিমের সহকারী পুলিশ কমিশনার মধুসূদন দাস এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
পুলিশ জানায়, এ সময় তাদের হেফাজত থেকে ২টি এন্ড্রয়েড মোবাইল ফোন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ৩টি ফ্যাক্স সীল, ৩টি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয় ও অর্থ মন্ত্রণালয়রে এডমিনের সীল, মন্ত্রণালয়ের লোগো সম্বলিত আইডি কার্ড, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ৬টি নিয়োগপত্র, ভিজিটিং কার্ড, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের গাড়ির স্টিকার এবং উত্তরা ব্যাংক যশোর শাখার ১টি চেক বই, মন্ত্রণালয়ের সার্ভিস আইডি কার্ড, ভিজিটিং কার্ড, স্টিকার, সীল উদ্ধার করা হয়।
এ ব্যাপারে সহকারী পুলিশ কমিশনার মধুসূদন দাস বলেন, ভুক্তভোগী এম এম নিজাম উদ্দিনের বাড়ি এবং মোঃ জহিরুল ইসলাম ওরফে বাপ্পীর শশুর বাড়ি একই এলাকায়। গত ৫ থেকে ৬ মাস পূর্বে বাপ্পী স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পার্সোনাল কাউন্সিলর পদে চাকরি পেয়েছে বলে তার শশুর বাড়ির এলাকায় প্রচার করে। বাপ্পী তার শশুর বাড়ির এলাকার মসজিদে এজন্য দোয়া মাহফিল ও মিষ্টি বিতরণ করেন। তা ছাড়াও তার শশুর বাড়ির এলাকার এতিমখানায় দান-খয়রাত করেও সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। পরবর্তীতে বাপ্পী পদোন্নতি পেয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের চীফ অডিট অফিসার হয়েছে বলেও তার শশুর বাড়ির এলাকার প্রচার করে। এর কিছুদিন পর নিজাম উদ্দিন তার ছেলে ও ভাগ্নের চাকরির জন্য বাপ্পীর সাথে আলোচনা করেন। বাপ্পী নিজমি উদ্দিনের ছেলেকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অডিট অফিসার এবং তার ভাগ্নেকে খাদ্য অধিদপ্তরের স্টোর কিপার পদে চাকরি দেওয়ার কথা বলে এবং বিনিময়ে ১৬ লাখ টাকা দাবি করে। নিজাম উদ্দিন বিভিন্ন তারিখে বাপ্পীকে সর্বমোট ১১ লাখ টাকা প্রদান করেন।
তিনি আরো বলেন, এরপর গত চলতি বছরের ৪ সেপ্টেম্বর নিজাম উদ্দিনকে আব্দুল গণির রোডের বাংলাদেশ সচিবালয়ের গেটে বাপ্পী এবং জোবায়ের ভুক্তভোগী নিজাম উদ্দিনের ছেলেকে অডিট অফিসার ও তার ভাগ্নেকে খাদ্য অধিদপ্তরের স্টোর কিপার পদে চাকরির ২টি নিয়োগ পত্র প্রদান করে। পরবর্তীতে নিজাম উদ্দিন
নিয়োগপত্র গুলো যাচাই-বাছাই করে দেখেন নিয়োগপত্র গুলো ভুয়া। নিজাম উদ্দিন আরও যাচাই-বাছাই করে দেখেন যে বাপ্পী ও জোবায়ের কেউই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে চাকরি করেন না। পরর্বতীতে তিনি তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়।
সহকারী পুলিশ কমিশনার বলেন, এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে পল্লবী থানায় একটি প্রতারণার মামলা হয়। গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগ মামলাটি তদন্তের ভার গ্রহণ করে এবং উপরে উল্লেখিত আলামতসহ আসামিদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
পুলিশ জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য সর্ম্পকে গ্রেপ্তারকৃতরা নিজেদের বিভিন্ন সরকারি অফিসের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে চাকরি ও বিভিন্ন তদবিরের প্রলোভন দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে মর্মে স্বীকার করেন। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
কেএম/এসআইএইচ