ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করে সাইকেলবান্ধব যাতায়াত নিশ্চিতের দাবি
ঢাকা বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা (ড্যাপ) অনুযায়ী, ঢাকা শহরে প্রতিদিন প্রায় ২ লাখ মানুষ বাইসাইকেলে যাতায়াত করে। তাই ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করে নগরে সাইকেলবান্ধব যাতায়াত ব্যবস্থা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে কয়েকটি সংগঠন।
শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকালে প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠন, বাংলাদেশ সাইকেল লেন বাস্তবায়ন পরিষদ, রায়ের বাজার উচ্চ বিদ্যালয়, ঢাকা আইডিয়াল ক্যাডেট স্কুল, ধানমন্ডি ট্যুরিজম সাইক্লিষ্ট, লিও ক্লাব অফ ঢাকা ওয়েসিস, ফিমেল সাইকেলার্স অব বাংলাদেশ, সূর্য শিশির রানার্স কমিউনিটি, ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবীইং বাংলাদেশ, কারফ্রি সিটিস এলায়েন্স বাংলাদেশ এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর সম্মিলিত উদ্যোগে শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার পর্যন্ত ‘বিশ্ব ব্যক্তিগত গাড়িমুক্ত দিবস ২০২২’ পালন উপলক্ষে আয়োজিত “ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করি, পরিকল্পিত সাইকেল নেটওয়ার্ক গড়ে তুলি” শীর্ষক সাইকেল র্যালি থেকে বক্তারা এ দাবি জানান।
সাইকেলবান্ধব যাতয়াত নিশ্চিত করতে পারলে এ ধরনের যাতয়াতকারী বাড়বে দাবি করে বক্তারা বলেন, বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, মূল সড়কে সাইকেলের গতি প্রতি ঘণ্টায় ১৩ দশমিক ৪ কিলোমিটার। অর্থাৎ, ঢাকার যাতায়াত ব্যবস্থায় সাইকেলকে প্রাধান্য দিয়ে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হলে দ্রুত ও নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছানো সম্ভব হবে। সেই সঙ্গে জ্বালানী ব্যয় হ্রাস, জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের উন্নয়নসহ বিভিন্ন উপকার পাওয়া যাবে। তাই আমরা সাইকেলবান্ধব নগর যাতায়াত নিশ্চিতের দাবি জানাই।
ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট’র পরিচালক গাউস পিয়ারী’র সভাপতিত্বে এবং সহকারি প্রকল্প কর্মকর্তা মো: মিঠুনের সঞ্চালনায় আয়োজনে বক্তব্য রাখেন আয়োজক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিনিধিরা বক্তব্য দেন।
বক্তারা বলেন, ঢাকা শহরে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ সাইকেলে যাতায়াত করে এবং তরুণ প্রজন্মের অনেকেই সাইকেল চালিয়ে যাতায়াতে আগ্রহী। কিন্তু সাইকেলবান্ধব অবকাঠামো না থাকায় তাদের ঝুঁকি নিয়ে সাইকেল চালাতে হচ্ছে অথবা সাইকেল চালাতে তারা নিরুৎসাহিত হচ্ছে। বর্তমানে যানজট ও জ্বালানী সংকট আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সাইকেলে যাতায়াত সকলের জন্য সহজ ও জনপ্রিয় করে তোলা প্রয়োজন।
বক্তারা আরও বলেন, স্ক্যান্ডিনেভিয়া এবং ইউরোপের অনেকগুলো ধনী ও আধুনিক শহরে সাইকেল অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি যাতায়াত মাধ্যম। ডেনমার্কের কোপেনহেগেন শহরে মূল যাতায়াতের ৪১ শতাংশ সংঘটিত হয়। পৃথিবীর অনেক শহরে করোনাভাইরাস মহামারী মোকাবেলার অংশ হিসেবে শহরে সাইকেলে যাতায়াতের সুযোগ বৃদ্ধি করা হয়েছে। যেমন- বোগোতা, ভ্যানকুভার, সিডনিসহ বিভিন্ন শহরে অস্থায়ী সাইকেল লেন তৈরির পাশাপাশি কিছু রাস্তা ব্যক্তিগত গাড়ির জন্য বন্ধ করে দিয়ে মানুষের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে, যাতে তারা শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে চলাচল করতে পারে। বোগোতা শহরে বর্তমানে ৫৫০ কিমি সাইকেল লেন আছে এবং তারা আরো ৮০ কিমি সাইকেল লেন তৈরি করেছে।
আরইউ/এএস