পানিতে ভর্তুকি অব্যাহত রাখার দাবি
ঢাকা ওয়াসা পানির মূলবৃদ্ধির যে প্রস্তাব করেছে তা বাস্তবায়ন না করে পানিতে সরকারের ভর্তুকি অব্যাহত রাখার দাবি করেছে বাংলাদেশ সাধারণ নাগরিক সমাজ।
সোমবার (২২ আগস্ট) সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত ‘ন্যায্য মূল্যে পর্যাপ্ত নিরাপদ পানি পাওয়া নাগরিকের অধিকার’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় এ দাবি জানানো হয়।
বাংলাদেশ সাধারণ নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন আহমেদ সভাপতির বক্তব্যে বলেন, ‘পানির অপর নাম জীবন। তাই প্রত্যেক নাগরিকের নিরাপদ পানি ন্যায্য মূল্যে পাওয়া এবং নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহ পাওয়া মৌলিক অধিকার। আমাদের সংগঠন গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ঢাকা ওয়ালা ভবনের সামনে ২০ শতাংশ পানির মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত করে। সেখানে আমাদের দাবি ছিল মূল্যবৃদ্ধি সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। তা ছাড়া বর্তমান পানি অনেক ক্ষেত্রে দুর্গন্ধযুক্ত ময়লা এবং মানহীন।’
তিনি বলেন, ‘পরবর্তী সময়ে কুয়াশা কর্তৃপক্ষ বিষয়টি আমলে নিয়ে সমস্যা সমাধানে আমাদের সাথে একটি বৈঠক করে। সেখানে কর্তৃপক্ষ আমাদের জানায় বর্তমানে এক হাজার লিটার পানি উৎপাদন করতে তাদের খরচ হয় ২৫ টাকা। কিন্তু গ্রাহক দেয় ১৫ টাকা, বাকি ১০ টাকা সরকার নিয়মিত ভর্তুকি দিয়ে আসছে। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপট ঋণদাতাদের চাপ এবং মানুষের ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং ভর্তুকির টাকা ধনীরাও ভোগ করছে তাই এটি সমন্বয় করা ছাড়া ওয়াশার করার কিছু নাই।’
তবে সরকার যদি ভর্তুকি অব্যাহত রাখে তাহলে দাম বাড়ানো প্রয়োজন হবে না। এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহোদয় আমাদের আশ্বস্ত করেন দাম যাতে বৃদ্ধি করতে না হয় তার জন্য তিনিও সরকারকে অনুরোধ করবেন। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করলাম গত ভোট সভায় এলাকাভিত্তিক শ্রেণিবিভেদ অনুযায়ী পানির মূল্য নির্ধারণ করার পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। এবং দুর্গন্ধযুক্ত পানি পাওয়ার জন্য তিনি স্বাধীনতার পূর্বে স্থাপিত লিখেযুক্ত পায়ে এবং গ্রাহকদের অসচেতনতার কি অন্যতম দায়ী বলে মনে করেন।
আমাদেরকে আশ্বস্ত করেন নতুন প্রকল্প চলমান রয়েছে যা ২০২৩ সালের মধ্যে সারা ঢাকার পুরাতন পায়ে পরিবর্তন করে নতুন সঞ্চালন লাইন স্থাপন করা হবে। আমরা আশা করব আগামী বছরের মধ্যে ওয়াসা কর্তৃপক্ষ এবং সরকার এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে, যোগ করেন তিনি।
ওয়াসার প্রকৌশল বিভাগের পরিচালক এ কে এম শহিদ উদ্দিন বলেন, পুরো ঢাকাকে ১৪৪ টা ভাগে ভাগ করে ডিএমএ নেটওয়ার্ক করা হলো। যাত্রা শুরু করেছে। দক্ষিণ এশিয়ায় এটা কেউ করতে পারেনি। যেখানে ডিএমএ করা হয়েছে, সেখাবে রিজার্ভার পর্যন্ত পানির মান ভাল। ওয়াসার টেকনিক্যাল লস ৫৫ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি।
তিনি বলেন, করাইল বস্তি এলাকায় এক সময় মাস্তানরা পানির ব্যবসা করত। অনেক কষ্ট করে আমরা সেটা সমাধান করেছি। ডিএমএ’র মাধ্যমে তারা ভালো পানি পাচ্ছে।
সভায় অন্যদের মধ্যে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) সভাপতি নাসের খান, বাসদের সহ-সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এসোসিয়েট কো-অর্ডিনেটর নেসার আমিন, বাংলাদেশ সাধারণ নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট রাশেদ হাসান ও অ্যাডভোকেট রাশিদা বেগম বক্তব্য রাখেন।
এসএম/এমএমএ/