বাবার টাকা ছিনতাই করে ধরা খেলেন ছেলেরা
জয়নাল মিয়া। রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট থানার মানিকদী এলাকার বাসিন্দা। স্ত্রী হনুফা বেগমসহ সেখানেই থাকেন তিনি। তিন ছেলে আবদুল হানিফ, আবদুল হান্নান ও আবদুল মান্নান। পেশায় তারা সবাই ব্যবসায়ী। স্ত্রীরা শ্বশুর-শাশুড়িকে পছন্দ না করায় অনেক আগেই মেরে বাবা-মাকে বাড়ি থেকে বের করে দেন ছেলেরা। এরপর জয়নাল মিয়া ও হনুফা বেগম ওঠেন একটি ভাড়া বাসায়।
এভাবেই চলছিল জয়নাল মিয়া ও হনুফা বেগমের সংসার। দুই মাস আগে গত ২৮ জুন নিজের বসতভিটার জমি বিক্রি করেন জয়নাল মিয়া। জমি বিক্রির ৩১ লাখ টাকা ব্যাগে নিয়ে মোটরসাইকেলে বাসায় ফিরছিলেন তিনি। মানিকদীতে বাড়ির কাছে পৌঁছালে ঘটে ভিন্ন ঘটনা। ছিনতাইকারীর কবলে পড়েন জয়নাল মিয়া। তবে এই ছিনতাইকারী আর কেউ নয়, তার নিজ সন্তানরা।
ছিনতাইকারীদের হাত করে তিন ভাই আবদুল হানিফ, আবদুল হান্নান ও আবদুল মান্নান মিলে মোটরসাইকেলে বসে থাকা বাবা জয়নালকে লোহার রড দিয়ে আঘাত করেন। এরপর তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এ সময় জয়নালকে তার জামাতা বাঁচাতে এলে তাকেও পিটিয়ে পা ভেঙে দেন। একপর্যায়ে বৃদ্ধ মা এগিয়ে এলে তাকেও বেধড়ক পেটান পাষণ্ড ওই সন্তানরা। এরপর আহতদের কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ওই ঘটনায় ক্যান্টনমেন্ট থানায় একটি মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় ডিবির গুলশান বিভাগ। তদন্তের প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে আসে।
রবিবার (১৪ আগস্ট) এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার মশিউর রহমান এ সব তথ্য জানান।
এ ঘটনায় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ রাতে রাজধানীর মিরপুর এবং গাজীপুর থেকে জয়নাল মিয়ার তিন ছেলে আবদুল হানিফ, আবদুল হান্নান ও আবদুল মান্নান এবং তাদের সহযোগী সোহেলকে গ্রেপ্তার করে।
এ সময় তাদের কাছ থেকে ছিনতাই হওয়া ২৯ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়। বাকি দুই লাখ টাকা খরচ হয়ে গেছে বলে জানান জয়নাল মিয়ার তিন ছেলে ও তাদের সহযোগী।
এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার মশিউর রহমান বলেন, জয়নাল মিয়ার টাকা ছিনিয়ে নিতে তার তিন ছেলে ছিনতাইকারী সোহেলসহ দুজনের সঙ্গে আঁতাত করেছিলেন। অপর ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। আদালতের অনুমতিতে গ্রেপ্তার চারজনকে দুই দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, উদ্ধার হওয়া ২৯ লাখ টাকা জয়নাল মিয়ার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। টাকা ফিরে পেয়ে খুশিতে কেঁদে ফেলেন তিনি।
কেএম/আরএ/