গণপরিবহনে বাতিল ওয়েবিল বহাল তবিয়তে
রাজধানীর গণপরিবহনগুলোতে সিটিং সার্ভিস বন্ধ করে ওয়েবিল পদ্ধতি বাতিল ঘোষণা করে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সড়কে বাস মালিকরা তা অমান্য করে এখনো চালু রেখেছে ওয়েবিল। ওয়েবিলের নাম করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে বলে যাত্রীদের অভিযোগ।
বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) সরেজমিন বাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে এ চিত্র উঠে এসেছে। মোহাম্মদপুর থেকে বিভিন্ন রুটে এখনো ইচ্ছামতো ভাড়া আদায় হচ্ছে। যাত্রী ও পরিবহনকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্যই উঠে এসেছে।
তরঙ্গ পরিবহনের একটি বাসের কন্ডাক্টর সেলিম যাত্রীদের ডাকছিলেন বাসে চড়ার জন্য। তাকে নতুন ভাড়ার তালিকার কথা জিজ্ঞেস করলে তিনি ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, মালিকরা এখনো আমাদের ভাড়ার মূল্য তালিকা দেয়নি। তাই আগের ১০ টাকা ভাড়ার জায়গায় এখন ১৫ টাকা নেওয়া হচ্ছে। আর সর্বনিম্ন ভাড়া ১০ টাকা।
মোহাম্মদপুর থেকে আব্দুল্লাহপুর চিটাগাং রোড বনশ্রীসহ বিভিন্ন রুটে আগে যে ভাড়া ছিল ১০ টাকা, এখন তা ১৫ টাকা নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এসব রুটের কোনো বাসের ভেতরে নতুন ভাড়ার তালিকা দেখা যায়নি। এদিকে তালিকা ছাড়া যাত্রীরা বেশি ভাড়া দিতে না চাইলে পরিবহনকর্মীরা তা নিচ্ছেন না। এ নিয়ে কথা কাটাকাটি এমন কী হাতাহাতি পর্যন্ত হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে বিভিন্ন রুটে ছেড়ে যাওয়া পরিবহনকর্মী ও যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে এমন চিত্র দেখা গেছে। মোহাম্মদপুর থেকে মতিঝিল রোডের মিডলাইন পরিবহনের কন্ডাক্টর ইয়াসিন বলেন, ভাড়া ১৫ টাকা আগে ১০ টাকা ছিল। আর নিম্নে ভাড়া ১০ টাকা। নতুন তালিকা কই এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, মালিকরা দেয়নি। তাই বাসের ভেতর লাগাতে পারিনি। ভাড়া ১৫ টাকাই নেব।
এ সময় নুরুল ইসলাম নামে এক যাত্রী বলেন, ‘ব্যাটা মগের মুল্লুক পেয়েছিস, যাই ইচ্ছা তাই ভাড়া নিবি। তোদের মালিক-সমিতি থেকে বলেছে বুধবার থেকে চেক বা ওয়েবিল বলে কিছু নেই আর তুই চেক চেক/ওয়েবিল বলে অস্থির হয়ে যাস। আমাদের এভাবে পকেট কেটে নিচ্ছিস।’
শুধু মিডলাইন পরিবহনই বিভিন্ন রুটের প্রায় যাত্রীদের এক ব্যক্তি অভিযোগ। তেলের দাম বৃদ্ধির অজুহাতে পরিবহনের ভাড়ায় নৈরাজ্য চলছে।
এদিকে বুধবার রাতেও মোহাম্মদপুর থেকে বনশ্রী স্বাধীন নামে গাড়িতে দেখা গেছে চরম নৈরাজ্য। রাত ১০টার দিকে ফার্মগেট থেকে স্বাধীন গাড়িতে (২১২৬ ) উঠলেই কন্ডাক্টর রাজু বলেন, উঠেন উঠেন ১৫ টাকা মোহাম্মদপুর।
এ সময় হালিমা নামে এক যাত্রী বলেন, ‘এই ব্যাটা তুই ফাইজলামি পেয়েছিস। চাইলেই তুই এত ভাড়া পাবি তোর সাহস কতো? ১০ টাকার ড়াড়া ১৫ টাকা।’
উল্লেখ্য জ্বালানি তেলে মূল্যবৃদ্ধির অজুহাতে পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা রাজধানীতে চেকের অজুহাতে যা ইচ্ছা তাই ভাড়া আদায় করছে। এটা সরকারের নজরে গেলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বুধবার সংবাদ সম্মেলন করে জানান, সরকারের নতুন তালিকা অনুযায়ী বাস ভাড়া নেওয়া হবে। আগের সিটিং সার্ভিস বাতিল করা হলো। চেক সিস্টেম বা ওয়েবিল শুধু আমাদের প্রয়োজনে থাকবে। কিন্তু সেই ওয়েবিলে কোনো ভাড়া নেওয়া হবে না, বাতিল করা হলো।
জেডএ/এসএন/আরএ