শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলন
দুপুরে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে ফের আলোচনায় বসবেন শিক্ষার্থীরা
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শিক্ষামন্ত্রীর আলোচনার পরও কোনো সমাধান হয়নি। রোববার (২৩ জানুয়ারি) দুপুরে আবারো শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার কথা রয়েছে।
শনিবার (২২ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ১টা থেকে সোয়া ২টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করেন শিক্ষামন্ত্রী। আলোচনা শেষ করে বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল।
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির পক্ষ থেকে অনশন ভাঙার প্রস্তাব এলে সময় চেয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
এ সময় নাদেল বলেন, 'শিক্ষামন্ত্রী আন্তরিকভাবে শিক্ষার্থীদের সব কথা শুনেছেন। তারপর শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করেছেন প্রশাসনিকভাবে কিংবা একাডেমিকভাবে কোনো শিক্ষার্থী হয়রানির শিকার হবে না। তাদের সব দাবিদাওয়া আলোচনার মাধ্যমে মেনে নেওয়া হবে জানিয়ে অনশন ভাঙার কথা বলেন। তখন শিক্ষার্থীরা সকাল পর্যন্ত সময় চান। সহপাঠীদের সঙ্গে আলোচনা করে তারা জানাবেন বলেও জানান।'
তিনি বলেন, ‘আজ (শনিবার) সন্ধ্যায় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির বৈঠক হয়। বৈঠকের পর রাতে শিক্ষার্থীরা আমাকে জানান তারা শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে অনলাইনে আলোচনায় বসতে চান। এর পরিপ্রেক্ষিতে রাত সাড়ে ১২টার দিকে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসি। প্রায় সোয়া ১ ঘণ্টা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করেন শিক্ষামন্ত্রী।’
অপরদিকে বৈঠক সূত্রে জানা যায়, এ সময় শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে উপাচার্যের পদত্যাগে জোর দাবি জানালে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, গত চার বছর উনি বিশ্ববিদ্যালয় ভালো চালিয়েছেন। তাই দ্বিতীয় মেয়াদে উনাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তবে মানুষ হিসেবে ভুল হতেই পারে। সে ক্ষেত্রে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু পদত্যাগই একমাত্র সমাধান না। তবে শিক্ষার্থীরা এক দফ এক দাবিতে অনড় থাকেন। পরে শিক্ষামন্ত্রী রোববার দুপুর ১টার সময় তার সঙ্গে যোগাযোগ করার কথা বলেন এবং দাবিগুলো লিখিত আকারে দিতেও বলেন।
শিক্ষার্থীদের পক্ষে কথা বলেন মোহাইমিনুল বাশার রাজ। তিনি বলেন, শিক্ষামন্ত্রী অনশন ভাঙার প্রস্তাব দিলে আমরা সময় চাই। পরে আমরা অন্যদের সঙ্গে আলোচনা করলে তারা অনশন ভাঙতে রাজি হননি। সে ক্ষেত্রে আমরা আমাদের দাবিতে অনড় থাকব এবং রোববার দুপুরে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে এ দাবি নিয়েই আলোচনা হবে।
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একটি প্রতিনিধি দল ঢাকায় পৌঁছে শনিবার সন্ধ্যায় শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেলের সঙ্গে ছিলেন, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ছিলেন।
অনশনে অংশ নেওয়া ১৬ জন শিক্ষার্থী হাসপাতালে ভর্তি আছেন। নতুন করে দেওয়া গণঅনশন কর্মসূচিতে যুক্ত হয়েছেন আরও চারজন শিক্ষার্থী।
১৩ জানুয়ারি রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিরাজুন্নেছা ছাত্রী হলের প্রভোস্টের পদত্যাগের দাবিতে শুরু হয় ছাত্রীদের আন্দোলন। পরে এসব দাবি আদায়ের আনদোলনের এক পর্যায়ে ১৬ জানুয়ারি দুপুরে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমদকে অবরুদ্ধ করেন শিক্ষার্থীরা। তাকে উদ্ধারকে কেন্দ্র করে ওই দিন সন্ধ্যায় পুলিশের লাঠিচার্জ, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপের ঘটনায় আহত হন অর্ধশত শিক্ষার্থী। এর পর থেকেই ছড়ায় উত্তাপ, শুরু হয় উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন। ১৯ জানুয়ারি থেকে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে অনশন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।
এসইউ/এসএন