ইবি ছাত্রীকে নির্যাতনের ঘটনায় তদন্ত কমিটি, ছাত্র ইউনিয়নের প্রতিবাদ
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক নবীন ছাত্রীকে রাতভর নির্যাতন ও বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণের ঘটনায় ও অভিযুক্তদের পাল্টা অভিযোগের প্রেক্ষিতে পৃথক দুইটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের করা উভয় কমিটিকে ৭ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। উভয় তদন্ত কমিটির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এইচ এম আলী হাসান ও শেখ হাসিনা হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শামসুল ইসলাম। অন্যদিকে বিচারের দাবিতে বিবৃতি দিয়েছে ছাত্র ইউনিয়ন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় সংসদ।
রেজিস্ট্রার অফিস ও শেখ হাসিনা হল সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আইন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. রেবা মন্ডলকে আহ্বায়ক ও একাডেমিক শাখার উপ-রেজিস্ট্রার (শিক্ষা) আলীবদ্দীন খানকে সদস্য সচিব করে পাঁচ সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন-প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভাপতি অধ্যাপক ড. ড. দেবাশীষ শর্মা, খালেদা জিয়া হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. ইয়াসমিন আরা সাথী ও সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুর্শিদ আলম।
এদিকে হল কর্তৃপক্ষের করা ৪ সদস্য বিশিষ্ট এই কমিটিতে ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. আহসানুল হককে আহ্বায়ক করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন-হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ইসরাত জাহান এবং ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মৌমিতা আক্তার। তারা উভয়েই দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের আবাসিক শিক্ষক। এ ছাড়াও হলের শাখা কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাকও কমিটিতে আছেন।
অন্যদিকে র্যাগিংয়ের ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিবৃতি দিয়েছে ইবি ছাত্র ইউনিয়ন। যৌথ বিবৃতিতে সভাপতি ইমানুল সোহান ও সাধারণ সম্পাদক মোখলেছুর রহমান সুইট বলেন, ‘আবাসিক হলের অভ্যন্তরে একজন প্রথম বর্ষের নারী শিক্ষার্থীকে যেভাবে র্যাগিংয়ের নামে নির্যাতন করা হয়েছে তা গ্রহণযোগ্য নয়। এই ঘৃণ্য নির্যাতনের ঘটনায় আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একইসাথে এই ঘটনার অভিযুক্ত মূলহোতা ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদা চৌধুরী অন্তরাসহ সহযোগীদের ও মদদদাতাদের উপযুক্ত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আবেদন জানাচ্ছি।’
প্রসঙ্গত, গত শনিবার ও রবিবার দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে দুই দফায় নবীন এক ছাত্রীকে ৩/৪ ঘণ্টা করে নির্যাতনের অভিযোগ উঠে। অভিযুক্তরা মারধরের পাশাপাশি অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ, হুমকি-ধামকি ও ওই ছাত্রীকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করে ভাইরাল করাসহ বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়েছেন ও হেনস্তা করেছেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীর। মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারী) বিচার চেয়ে ভুক্তভোগী বিশ্ববিদ্যলয়ের প্রক্টর ও ছাত্র-উপদেষ্টা বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।
অভিযুক্তরা হলেন-ইবি শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ও পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের সানজিদা চৌধুরি অন্তরা ও ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের তাবাসসুমসহ তাদের সঙ্গী ৭/৮ জন।
এদিকে একই দিনে ছাত্রলীগ নেত্রী অন্তরা ঘটনাটি মিথ্যা দাবি করে ভুক্তভোগীর ও প্রকাশিত সংবাদের বিচারের দাবিতে প্রভোস্ট, প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টার কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। এতে আবাসিক হলের ছাত্রীরা স্বাক্ষর করেছেন। জোরপূর্বক ও ঘটনাস্থলে উপস্থিত না থেকেও অভিযোগপত্রে স্বাক্ষর আছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
এসআইএইচ