জবিতে ২০ হাজার মানুষের জন্য একটি অ্যাম্বুলেন্স
দেশের অন্যতম বিদ্যাপীঠ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি)। সংকট ও সাফল্যকে সঙ্গে নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। প্রতিষ্ঠার ১৭ বছর পার হলেও শিক্ষার্থীদের জন্য নেই পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন মেডিকেল। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারী মিলে প্রায় ২০ হাজার মানুষ। এত বড় সংখ্যক মানুষের জন্য রয়েছে একটি মাত্র অ্যাম্বুলেন্স।
জানা যায়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী ১৭ হাজার ৩৮ জন। পাশাপাশি শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন প্রায় ৩ হাজার। আর অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে একটি। এতে অ্যাম্বুলেন্স সংকটে আপদকালীন দুর্ভোগে পড়ছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র ছাত্রীহল ‘বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল' এ থাকেন ১২০০ ছাত্রী। আবাসিক হলের কোনো ছাত্রী রাতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লেও অ্যাম্বুলেন্স সেবা না পাওয়ারও অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের কোনো আবাসিক হল না থাকায় পুরান ঢাকার বিভিন্ন বাসা বাড়িতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে থাকেন। যার ফলে বেশিরভাগ সময়েই অসুস্থ হয়ে পড়ার খবর পাওয়া যায়, কিন্তু কোনো শিক্ষার্থীই অ্যাম্বুলেন্স সেবা পায়নি বলে জানা যায়।
বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী রিদুয়ান জানায়, আমাদের একটি মাত্র অ্যাম্বুলেন্স। অনেক সময় একাধিক শিক্ষার্থী অসুস্থ হলে অ্যাম্বুলেন্স পাওয়া যায় না। আমাদের প্রশাসনের আরও কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্স দেওয়া প্রয়োজন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষার্থী জানায়, আমাদের মেডিকেল শুধু নামেই আধুনিক সেরকম কিছু নেই। একটি অ্যাম্বুলেন্স দিয়ে কীভাবে চলে প্রায় ২০ হাজার শিক্ষার্থীর। আরও কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্স দেওয়া উচিৎ নইলে একাধিক শিক্ষার্থী অসুস্থ হলে তখন খুব খারাপ অবস্থা হবে, অ্যাম্বুলেন্স এর অভাবে কারো মৃত্যু হলে তখন এই আক্ষেপ কোথায় রাখবো?
বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের এক আবাসিক ছাত্রী জানান, ‘আমার রুমমেট রাত ৩টার দিকে হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে পড়ায় প্রভোস্ট ম্যামের মাধ্যমে অ্যাম্বুলেন্স চাওয়া হয়, কিন্তু ঘন্টাখানেক অপেক্ষা করার পরেও অ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে বাধ্য হয়ে রিক্সায় মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয়।’
এবিষয়ে মেডিকেল সেন্টারের উপ-প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. মিতা শবনম বলেন, আমাদের একটি মাত্র অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে, আরেকটি অ্যাম্বুলেন্সের জন্য আমরা আবেদন করেছি। এখন একটি দিয়েই কাজ চালাতে হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, দেখা যায় একদিন যদি একাধিক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ে তাহলে সমস্যায় পড়তে হয়। তবে এই অ্যাম্বুলেন্সটি না থাকলে অন্য গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়।
এ বিষয়ে পরিবহন প্রশাসক ড. সিদ্ধার্থ ভৌমিক বলেন, অ্যাম্বুলেন্স কেনার ক্ষেত্রে বাজেটের একটা বিষয় রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রয়কমিটি সহ আনুষাঙ্গিক আরও কিছু কমিটি আছে, অ্যাম্বুলেন্স ক্রয়ের বিষয়েও তাদের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন হয়। সামনের বাজেট আসলে নতুন একটি অ্যাম্বুলেন্স কেনার চেষ্টা করবো।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ২৬ জুলাই দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ধরনের যানবাহন কেনা বন্ধের নির্দেশনা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।
আরএ/