‘মিথ্যা’ মামলার আসামি জবি শিক্ষার্থী!

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী ইমরান খানের নামে ‘মিথ্যা’ মামলা দায়ের করার অভিযোগ উঠেছে।
শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) লীলফামারী জেলার ডিমলা থানায় মামলাটি করেছেন তারই আপন চাচি সাজেদা বেগম। ডিমলা থানার সাব-ইন্সপেক্টর জাহিদ হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘আমি ২ সেপ্টেম্বর মামলাটি হাতে পেয়েছি। আসামি ধরার চেষ্টা করছি।’
জানা যায়, মামলার বাদী সাজেদা বেগম কিছুদিন আগে তার শাশুড়িকে মেরে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। এ ঘটনায় গত ১১ আগস্ট জবি শিক্ষার্থীর বাবা শাহিনুর এবং তার আপন ভাই মিজানুর রহমানের মধ্যে ঝগড়া হয়। মিজানুর এবং তার স্ত্রী সাজেদা বেগম শাহিনুরের বাড়ির সামনে আসে মারধর করতে। এক পর্যায়ে তারা শাহিনুরকে আঘাত করলে তিনি নিজেকে রক্ষা করার জন্য পালটা আঘাত করেন। এ ঘটনায় গত শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) ডিমলা থানায় ইমরানসহ চার জনের নামে একটি মামলা করা
হয় সাজেদা বেগম।
ঘটনার সময় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই শিক্ষার্থী বাড়ি থেকে ৬ কিমি দূরে পার্শ্ববর্তী শুটিবাড়ি বাজারে নিজস্ব কোচিং সেন্টারে শিক্ষার্থীদের ক্লাস নিচ্ছিলেন। সেখানকার একাধিক শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি জানা গেছে।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই শিক্ষার্থী বলেন,
‘ঘটনার সময় আমি সেইখানে উপস্থিত ছিলাম না। আমি আমার নিজস্ব কোচিং সেন্টারে ক্লাস নিচ্ছিলাম। আমাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। আমার ভাই ঘটনার সময় বুড়িমারী স্থলবন্দরে ছিলেন তাকেই মিথ্যা মামলায় হয়রানি করা হচ্ছে।’
এ বিষয়ে ইমরানের দাদি বলেন, ‘তিনবার মেরেছে। আমার মাথার চুল ধরে আমাকে মেরে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছেন। এখন আবার আমার ছোট ছেলেকে মারতে আসছে, মামলা দিয়েছে। সব ঝামেলার মূল আমার ছোট ছেলের বউ সাজেদা।’
মামলার ১ নং সাক্ষী মনোয়ার হোসেন বলেন, ‘মামলার ২ নং আসামি ইমরান ও ৪ নং আসামি শাকিল ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না। তা ছাড়া এখানে ওই ঘটনায় কোন লুটপাটের ঘটনা ঘটেনি।’
মামলার ২ নং সাক্ষী ইয়াছিন আলী জানান, ‘আমি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলাম। যা বলার তা আদালতে বলব।’
মামলার ৩ নং সাক্ষী শাহিন ইসলাম বলেন, ‘সাজেদা খাতুন মামলা করেছে এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। আমাকে সাক্ষী দেওয়া হয়েছে তা আমি পরে জানতে পারি। ২ নং ও ৪ নং আসামি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল না।’
মামলার এজাহারে বলা হয়, সাজেদা খাতুনের চুল ধরে তাকে মারধর করে ইমরান। এ ছাড়া বাদীকে বিবস্ত্র করে মেরে ফেলার হুমকি দেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে মামলার বাদী সাজেদা খাতুন বলেন, ‘ঘটনাস্থলে ইমরান এবং তার ভাই শাকিল কেউই উপস্থিত ছিলেন না। তবে কেনো তাদের নামে মামলা দেওয়া হয়েছে সেই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কোনো কথা বলেনি।’
মামলার বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল বলেন, ‘বিষয়টি আমার কাছে আমাদের শিক্ষার্থী ইমরান বলেছে; আবার সাংবাদিকদের কাছেও বিস্তারিত শুনেছি। আমি বিষয়টি জানার পর নীলফামারির পুলিশ অফিসার সাইফুল ইসলামের সঙ্গে বিষয়টি সমাধান করার জন্য কথাও বলেছি। তিনি বিষয়টি দেখবেন বলে কথা দিয়েছেন।’
এ বিষয়ে ডিমলা থানার ওসি তদন্ত বিশ্বদেব বলেন, ‘ঘটনাটি সম্পর্কে আমি জানি। এটি একটি সামান্য বিষয় ছিল। বিষয়টি আগেই সমাধান করার জন্য বলেছিলাম। এখন মামলাটি রেকর্ড হয়েছে।’
এমএমএ/
