ফেসবুকে কমেন্ট নিয়ে বশেমুরবিপ্রবির শিক্ষার্থীকে নির্যাতন

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী আরমান মাসুদকে ফেসবুকে কমেন্ট করাকে কেন্দ্র করে বেধড়ক মারধরের ঘটনা ঘটেছে৷ গত শনিবার (২৭ আগস্ট) ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আরমান মাসুদকে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে যায় ইমন শেখ নামের একই বিভাগের সিনিয়র শিক্ষার্থী।
ফেসবুকে কমেন্ট করাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের লেক পাড়ে ডেকে নিয়ে বেধড়ক মারধর করে উক্ত শিক্ষার্থী এবং তার বন্ধুরা। এসময় এব্যাপারে প্রশাসন বা আইনের সহযোগিতা নিলে খুন করে লাশ গুম করার হুমকিও দেয়া হয় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে৷ এ বিষয়ে রবিবার (২৮ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। পরবর্তীতে রাতে গোপালগঞ্জের থানায় এব্যাপারে একটি অভিযোগপত্র জমা দেয়া হয়৷ অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা হলেন ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের আশরাফুল ইসলাম বিজয়,নোমান আহমেদ তাসনিম, শেখ নাঈম,রিজভী আহমেদ, আবির হাসান সাজিদ,ইমন শেখ। অভিযুক্তরা সকলেই ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আরমান মাসুদ বলেন, 'ইমন ভাই আমাকে ফোন দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের লিপুস ক্যান্টিনে ডেকে নিয়ে যায়। সেখান থেকে ৬-৭ জন মিলে আমাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের লেক পাড়ে নিয়ে যায়। লেকপাড়ে নিয়ে বেধড়ক মারধর করে। আশপাশ থেকে বাঁশ নিয়ে এসে বাঁশ দিয়ে সবাই মারে। আমি অনেক কান্নাকাটি করলেও ছাড়ে না। এক পর্যায়ে আমি মাটিতে লুটিয়ে পড়ি। এরপর তারা সবাই মিলে আমাকে লাথি ঘুষি মারে এবং হুমকি দেয় বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ে জানালে আমাকে মেরে ফেলবে'।
এ বিষয়ে ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সভাপতি বাপন চন্দ্র কুরি বলেন, 'ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী এ বিষয়ে আমাকে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। সেটি আমি প্রক্টর বরাবর ফরওয়ার্ড করি। এছাড়াও আমরা প্রত্যক্ষভাবে পর্যবেক্ষণ করেছি,তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় প্রচন্ডভাবে মারধর করা হয়েছে।ভুক্তভোগির অভিযোগ প্রমাণিত হলে, বিশ্ববিদ্যালয় আইনের যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে'।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রাজিউর রহমান বলেন, 'সংশ্লিষ্ট বিভাগের মাধ্যমে অভিযোগটি আজকে হাতে পেয়েছি।আগামীকাল ১০ টায় এ বিষয়ে উক্ত বিভাগের শিক্ষকদের সাথে আলোচনায় বসে পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে'।
গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোঃ নাসির উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আমাদের জানিয়েছেন। এ বিষয়ে আমরা অনুসন্ধান করে জিডি হলে জিডি আর মামলা করার মত হলে মামলা করা হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের এক শিক্ষার্থী জানান, 'ইতোপূর্বেও এ সকল শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের নানারকম অপকর্মে জড়িত ছিল।এমনকি আমাদের বিভাগের অনেক শিক্ষার্থী এদের কাছে মার খেয়েছে এবং নানা ভাবে লাঞ্চিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে জানালেও তারা কোন ব্যবস্থা নেয় নি।আমরা চাই না আরেকটি আবরারের মতন ঘটনা ঘটুক। আমাদের শিক্ষার পরিবেশ না থাকলে আমরা কিভাবে পড়াশোনা করব। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই'।
এএজেড
