ইবি’তে ছাত্রীকে অধ্যাপিকার হুমকি, অনুসন্ধানে কমিটি

লেখা ও ছবি : ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক শিক্ষিকার বিরুদ্ধে ছাত্রীকে হেনস্তা ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত শিক্ষিকার নাম মাহবুবা সিদ্দিকা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক।
আজ শনিবার, ২৭ আগস্ট বিষয়টিতে নিরাপত্তা শঙ্কার কথা জানিয়ে ছাত্র-উপদেষ্টা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভুক্তভোগী ছাত্রী জানিয়েছেন। ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের অনুসন্ধান কমিটি করেছে খালেদা জিয়া হল প্রশাসন।
লিখিত অভিযোগে ভুক্তভোগী বলেছেন, “২৩ তারিখ বোরকা পরে খালেদা জিয়া হলের আবাসিকতার ভাইভাতে উপস্থিত হই। এসময় আমাকে নানাভাবে হেনস্থা করা হয়েছে। কোনো ধরণের সংশ্লিষ্টতা না থাকার পরও আমাকে সরাসরি ‘শিবির’ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। হুমকি দেওয়া হয়েছে। শঙ্কিত হয়ে আমার কাছের একজন ছাত্রলীগের ভাইকে জানাই। এরপর একজন শিক্ষিকা আমাকে প্রভোস্ট কক্ষে ডেকে নিয়ে নানা হুমকি দেন। ফলে আমি ব্যক্তিগত ও পারিবারিক নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। বর্তমানে ব্যক্তিগত নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।”
জানা যায়, ২৩ আগস্ট হলের আবাসিকতার জন্য সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে তার হেনস্তায় সাগর নামের একজন ছাত্রলীগ কর্মী অভিযুক্ত শিক্ষিকাকে ফোন করলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ভুক্তভোগীকে প্রভোস্টের মাধ্যমে তার কক্ষে ডাকেন। এ সময় সেই শিক্ষক মাহবুবা সিদ্দিকা বলেন, ‘আমি রোকেয়া হল ছাত্রলীগের (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়) সহ-সম্পাদক ছিলাম। চিনো তুমি আমারে? আমি কত পাওয়ার চালাইছিলাম তুমি জানো? তোমার এলাকার মেয়র টিটু ভাইকে চিনো? তাকে বলে ঐখানে তোমারে পুইত্তা ফালামু। আমার সাথে ফাইজলামি না? এলাকায়ও টিকতে পারবা না।’
এ বিষয়ে সহকারী অধ্যাপক মাহবুবা সিদ্দিকা সাংবাদিকদের বলেন ‘বিষয়টি আংশিক সত্য, আংশিক মিথ্যা। শিক্ষকরা শিক্ষার্থীকে হুমকি দিতে পারেন না, শাসন করতে পারেন। ওই ছাত্রীকে পরেরবার ডাকা হয়েছে কারণ সে বাইরে গিয়ে আরেক ছাত্রলীগের ছেলের কাছে বলেছে। সে আমার ছাত্রের মারফতে আমাকে থ্রেট করেছে।’
ছাত্রলীগকর্মী সাগর বলেন, 'ম্যাম আমার বিভাগের শিক্ষিকা। আমি তাকে শুধু অনুরোধ করেছিলাম যেন ওই ছাত্রীকে হেনস্তা করা না হয়।'
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র একরামুল হক টিটু সাংবাদিকদের বলেন, 'মাহবুবা সিদ্দিকা নামের কাউকে আমি চিনি না। আমার নাম জড়িয়ে এরকম কথা কেউ বলতে পারে না। এটা বললে তিনি অপরাধ করেছেন।'
খালেদা জিয়া হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. ইয়াসমিন আরা সাথী এই অভিযোগ ও হেনস্তার বিষয়ে বলেছেন, 'এ একটি অনাকাঙ্খিত ঘটনা। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য আবাসিক শিক্ষকদের নিয়ে তিন সদস্যের একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়েছে।'
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শেলীনা নাসরিন এই বিষয়ে বলেছেন, ‘আমরা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি নিয়ে আগামীকাল বসবো।’
ওএফএস।
