মাছ ধরার সরঞ্জামাদির বিশেষ প্রদর্শনী জাদুঘরে

নদীমাতৃক বাংলাদেশে মাছ ধরা বা মাছ শিকার একটি অন্যতম আদি পেশা। নদী ও অভ্যন্তরীণ জলাশয়কে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে এই পেশা। কিন্তু পেশা ছাড়াও গ্রাম-বাংলায় মাছ ধরা ও শিকার প্রতিটি পরিবারের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
‘মাছে ভাতে বাঙালি’ এই চিরায়ত প্রবাদটি বাংলার এক অভাবনীয় প্রাপ্তি, যা বাঙালি জীবনের ঐতিহ্যকে বহন করে। এক সময় গ্রামের প্রতিটি পরিবারে কিছু না কিছু মাছ ধরার উপকরণ ছিল। যা দিয়ে মাছ ধরে পরিবারের খাবার চাহিদা পূরণ করা হত। এই উপকরণের মধ্যে ছিল- বিভিন্ন ধরনের জাল, বড়শি, ফাঁদ ইত্যাদি।
এইসব উপকরণের নামকরণও বৈচিত্র্যময়। যেমন- ইকবর চাঁই, বুচনা, বেগা, ডুবা ফাঁদ, দারকি, বানা, পলো, বাইর ইত্যাদি। জালের মধ্যে রয়েছে- ঝাঁকি জাল, ভাসা জাল, ধর্মজাল, ফাঁস জাল, খেওয়া জাল ইত্যাদি। এছাড়াও রয়েছে বর্শা জাতীয় হাতিয়ার, টেটা বা কোঁচ। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এ সব মাছ ধরার সরঞ্জামাদি কিছু কিছু হারিয়ে গেলেও অনেক উপকরণই এখনো অনেকের নিত্যদিনের সঙ্গী।
বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে বিভিন্ন সময়ে সংগৃহীত ৫৭ টি মাছ ধরার ভিন্ন ভিন্ন নিদর্শন রয়েছে। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ও মুজিববর্ষ উদযাপন উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে সংগৃহীত ‘বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী মাছ ধরার সরঞ্জামাদি’ নিয়ে জাদুঘরের নলিনীকান্ত ভট্টশালী প্রদর্শনী গ্যালারিতে বিশেষ প্রদর্শনী আয়োজন করা হয়েছে।
সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সভাপতি অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। স্বাগত বক্তৃতা করেন জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান। সঞ্চালনা করেন আসমা ফেরদৌসি।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার ৫০ বছরপূর্তির উপলক্ষে এ আয়োজন। একই সঙ্গে দেশের একটি আদি পেশা এবং মাছ ধরার বিভিন্ন উপকরণের সঙ্গে নতুন প্রজন্মকে পরিচয় করিয়ে দেওয়াও অন্যতম লক্ষ্য।
বিশেষ প্রদর্শনীটি আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। প্রতিদিন সকাল ১০.৩০টা থেকে বিকাল ৫.৩০টা এবং শুক্রবার বিকাল ৩ টা থেকে সন্ধ্যা ৭.৩০টা পর্যন্ত প্রদর্শনীটি পরিদর্শন করা যাবে।
এপি/
