বসন্ত-ভালোবাসা দিবস উদযাপন

গাছে গাছে ফুটেছে পলাশ-শিমুল ফুল। পাতা ঝরা দিল ফুরিয়ে নতুন পাতা বেরুতে শুরু হয়েছে। কমেছে শীতের তীব্রতা। এরইমধ্যে পঞ্জিকার পাতা উল্টে এসেছে বসন্ত। আজ সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) পয়লা ফাল্গুন।
তবে নগরে ফাগুনের আগুন লেগেছে এমন দিনে যখন বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে আজ ১৪ ফেব্রুয়ারি পালিত হচ্ছে বিশ্ব ভালোবাসা (ভ্যালেন্টাইন) দিবস।
বসন্ত-ভ্যালেন্টাইনের মাখামাখির এই দিনে শহর জুড়ে আজ ফুলে - পোশাকে নানান রঙের ছড়াছড়ি। নারিদের খোপায় খোপায় নানা ফুলের সঙ্গে যেমন বাসন্তি রঙের হলুদ গাদা ফুলের আধিক্য। তেমনি রয়েছে ভালোবাসার লাল গোলাপ। তবে লাল - হলুদের সঙ্গে রয়েছে কমলা, গোলাপি ও সবুজের সমারোহ।
জাতীয় বসন্ত উৎসব উদযাপন পরিষৎ প্রতিবছর এ দিনটি বরণ করে নিতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। তবে করোনার কারণে টানা দ্বিতীয়বার এবারও উৎযাপন হল বিধিনিষেধ মেনে।
আজ সকাল সাড়ে ৭টায় রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মুক্ত মঞ্চে বেঙ্গল মিউজিকের শিল্পীরা তুললেন বাসন্তী রাগ। এরমধ্য দিয়ে শুরু হয় ‘বসন্ত উৎসব-১৪২৮'।
এরপর পংক্তিমালায় বসন্তের আবাহন করেন আবৃত্তিশিল্পী আহকাম উল্লাহ। আর কবিতা শোনালেন আবৃত্তিশিল্পী ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায় ও নায়লা তারাননুম চৌধুরী কাকলি।
পরে দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে স্বপ্ন বিকাশ কলা কেন্দ্র, সাধনা সংস্কৃতি মণ্ডল, নৃত্যম, ধ্রুপদ কলা কেন্দ্র, ভাবনা, ধৃতি নর্তনালয়, স্পন্দন, নৃত্যাক্ষ, কত্থক, ঢাক নৃত্য, নিক্কন পারফরমিং আর্ট, নবচেতনা, মুদ্রা ক্ল্যাসিক্যাল ডান্স, পুষ্পাঞ্জলি কলাকেন্দ্র।
আর দলীয় সংগীত পরিবেশন করে সুরসপ্তক, সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী ও সুরবিহার (শিশু-কিশোর)।
একক সংগীত পরিবেশন করেন শামা রহমান, মহাদেব ঘোষ, অনিমা মুক্তি গমেজ, বিমান চন্দ্র বিশ্বাস, বিজন চন্দ্র মিস্ত্রি, মাহমুদুল হাসান, ফেরদৌসি কাকলি, নুসরাত বিনতে নুর, নবনীতা জাইদ চৌধুরী, সঞ্জয় কবিরাজ, এস এম মেজবা।
অনুষ্ঠানের মাঝামাঝিতে হয় বসন্তকথন। উদযাপন পরিষদের সভাপতি শফি উদ্দিন আহমেদ বলেন, “এবছর করোনাকালের বছর। তবু বসন্ত তার কাল নিয়মে চলে এসেছে। আমরাও সবাই এসেছি বসন্ত উদযাপন করে সেই করোনার যাতনা দূর করতে।”
পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মানজার চৌধুরী সুইট বলেন, “আমরা আপনাদের নিয়ে বসন্তের অবগাহনে মেতে উঠতে চাই। বসন্তের যে রঙের ছটা, তা সবার ঘরে ঘরে পৌঁছে যাক, বর্ণিল যে আনন্দ, সেটিই আমাদের কাম্য।”
বসন্ত কথন শেষে শুরু হয় আবির মাখার পর্ব। একে অন্যকে আবির মাখিয়ে সবাই মেতে ওঠেন ফাগুন দিনের রঙের উৎসবে।
তবে বেলা বাড়ার সাথে সাথে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, টিএসসি ও শাহবাগকে কেন্দ্র করে বাড়তে থাকে বসন্ত - ভালোবাসার মানুষের উপস্তিতি। যার প্রভাব দেখা যায় শাহবাগসহ বিভিন্ন এলাকার ফুলের দোকানগুলোতে। অনেক দোকানে দুপুরের মধ্যেই বিশেষ করে লাল গোলাপ ফুরিয়ে যেতে দেখা যায়।
এমএ/
