বাংলা একাডেমির নতুন সভাপতি সেলিনা হোসেন
একুশে পদকপাপ্ত কথাসাহিত্যিক ও ঔপন্যাসিক সেলিনা হোসেনকে বাংলা একাডেমির নতুন সভাপতি পদে নিয়োগ দিয়েছে সরকার।
বৃহস্পতিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করে তাকে তিন বছরের জন্য এই নিয়োগ দেওয়া হয়।
বাংলা একাডেমি আইন, ২০১৩’ এর ধারা-৬ (১) এবং ৬ (৩) অনুযায়ী অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের সঙ্গে কর্ম-সম্পর্ক পরিত্যাগের শর্তে সেলিনা হোসেন এই নিয়োগ পেয়েছেন। যোগদানের তারিখ থেকে এই নিয়োগ কার্যকর হবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।
গত বছরের ৩০ নভেম্বর বাংলা একাডেমির সভাপতি স্বাধীনতা ও একুশে পদকপাপ্ত শিক্ষাবিদ, গবেষক এবং লেখক অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম মারা যান। এরপর থেকে পদটি শূন্য ছিল।
সেলিনা হোসেন ১৯৪৭ সালের ১৪ জুন রাজশাহী শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈতৃক নিবাস লক্ষ্মীপুর জেলার হাজিরপাড়া গ্রামে। বাবা এ কে মোশাররফ হোসেনের আদিবাড়ি নোয়াখালী হলেও চাকরিসূত্রে বগুড়া ও পরে রাজশাহী থেকেছেন দীর্ঘকাল।
সেলিনা ১৯৫৪ সালে বগুড়ার লতিফপুর প্রাইমারি স্কুলে তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তি হন। ১৯৫৯ সালে রাজশাহীর নাথ গালর্স স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে ভর্তি হন। ১৯৬২ সালে তিনি এখান থেকে মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে ১৯৬৪ সালে রাজশাহী মহিলা কলেজে ভর্তি হন। কলেজ জীবন শেষ করে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য নিয়ে ভর্তি হন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে। ১৯৬৭ সালে বিএ অনার্স এবং ১৯৬৮ সালে এমএ পাস করেন।
সেলিনা ১৯৭০ সালে বাংলা একাডেমির গবেষণা সহকারী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। এর পূর্বে তিনি বিভিন্ন পত্রিকাতে উপসম্পাদকীয়তে নিয়মিত লিখতেন। কর্মরত অবস্থায় তিনি বাংলা একাডেমির ‘অভিধান প্রকল্প’, ‘বিজ্ঞান বিশ্বকোষ প্রকল্প’, ‘বিখ্যাত লেখকদের রচনাবলী প্রকাশ’, ‘লেখক অভিধান’, ‘চরিতাভিধান’ এবং ‘একশত এক সিরিজের’ গ্রন্থগুলো প্রকাশনার দায়িত্ব পালন করেন।
এছাড়া ২০ বছরেরও বেশি সময় ‘ধান শালিকের দেশ’ পত্রিকা সম্পাদনা করেন। তিনি ১৯৯৭ সালে বাংলা একাডেমির প্রথম মহিলা পরিচালক হন। ২০০৪ সালের ১৪ জুন চাকুরি থেকে অবসর নেন। তার প্রথম গল্পগ্রন্থ উৎস থেকে নিরন্তর প্রকাশিত হয় ১৯৬৯ সালে। তার মোট উপন্যাসের সংখ্যা ৩৫টি, গল্প গ্রন্থ ১৩টি, ২২টি শিশু-কিশোর গ্রন্থ এবং প্রবন্ধের গ্রন্থ ১০টি। এছাড়া ১৩টি সম্পাদনা গ্রন্থ প্রকাশ করেছেন।
এসএম/এমএমএ/