মঙ্গল শোভাযাত্রা বন্ধে আইনি নোটিশের প্রতিবাদ সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের
পহেলা বৈশাখের উদযাপনের অন্যতম অনুসঙ্গ মঙ্গল শোভাযাত্রা বন্ধে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, ঢাকার জেলা প্রশাসক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডিনকে এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
রবিবার (৯ এপ্রিল) রেজিস্ট্রি ডাকে নোটিশটি পাঠান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মাহমুদুল হাসান।
এরপর থেকেই নোটিশের প্রতিবাদে সমালোচনার ঝড় উঠেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। বিশেষ করে উৎসবপ্রিয় সাংস্কৃতিবান বাঙালিরা এই আইনি নোটিশের প্রতিবাদ করেন বিভিন্নভাবে।
এবার প্রতিবাদ করল সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট। তাদের এক লিখিত বিবৃতিতে বলা হয়, ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা বন্ধের যেকোনো অপচেষ্টা ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ করা হবে। এ কথা সকলেরই জানা যে, বাঙালি জাতিরাষ্ট্রের ভিত্তি হলো আমাদের হাজার বছরের ঐতিহ্যপূর্ণ বাঙালি সংস্কৃতি। এ সংস্কৃতির নানা উপাদান মানুষে মানুষে মৈত্রীর বন্ধন এবং মানবিকবোধকে জাগ্রত করে।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, কিন্তু আমরা দীর্ঘদিন যাবত লক্ষ্য করছি যে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা-বিরোধী একটি শক্তি বাংলা নববর্ষ এবং আমাদের ঐতিহ্য ও শুভ’র প্রতীক মঙ্গল শোভাযাত্রা নিয়ে অপপ্রচার ও সাম্প্রদায়িক মন্তব্য করে দেশে একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে চাইছে। সম্প্রতি এই কর্মে যুক্ত হয়েছেন মাহমুদুল হাসান নামে সুপ্রিম কোর্টের জনৈক আইনজীবী। তিনি ইউনেস্কো কর্তৃক বিশ্ব ঐতিহ্যের স্বীকৃতিপ্রাপ্ত মঙ্গল শোভাযাত্রা বন্ধের লক্ষ্যে প্রথমে আইনি নোটিশ এবং পরবর্তী সময়ে রিট দাখিল করায় আমরা বিস্মিত হয়েছি।
বিবৃতিতে বলা হয়, বাঙালি সংস্কৃতি, মঙ্গল শোভাযাত্রা এবং বাঙালির আবেগ-অনুভূতির প্রতি সামান্যতম শ্রদ্ধা না থাকা ব্যক্তি কোনভাবেই আইন পেশার মতো দায়িত্বশীল কাজে যুক্ত থাকা সমীচীন নয়। আমরা এ বিষয়ে বার কাউন্সিলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বাঙালি সংস্কৃতি, বাংলা নববর্ষ ও মঙ্গল শোভাযাত্রা-বিরোধী যেকোনো অপতৎপরতা ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করছি। একই সঙ্গে আমরা দেশবাসীকে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে বাংলা নববর্ষ উদযাপন এবং ব্যাপকভাবে মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণের আহ্বান জানাই।
এএম/এমএমএ/