বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ৬ ফাল্গুন ১৪৩১
Dhaka Prokash

সমধারা ৯ম কবিতা উৎসব: স্বপ্ন ছোঁবার স্বপ্ন

ধানমন্ডি ২৭ নম্বরের শংকরে ছায়ানটের প্রধান মিলনায়তনেআবেগ-আন্তরিকতা আর ভালোবাসা মিশ্রিত একটি আয়োজন হয়ে গেল গত ২৫ ফেব্রুয়ারি। বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে রাত ১০টা অবধি চলে সে আয়োজন। কবিতা উৎসব আয়োজনই সমধারার একমাত্র উদ্দেশ্য নয়; সমধারার উৎসবে অংশ নিয়ে মনে হলো, উৎসবে যেন স্বপ্নেরই ছড়াছড়ি; অবশ্য স্বপ্নের বিষয়টি সাদা চোখে কারো চোখে পড়ার কথা নয়; সেটি হৃদয়ঙ্গম করার বিষয়। স্বপ্নাকুতিগুলো ততটা দৃশ্যমান নয়, স্বপ্নগুলো লতিয়ে ওঠে প্রতিটি কার্যক্রমের সার্বিক উপস্থাপনায়। ইপসার সহায়তায় এবারের উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আমরা যারা দেশমাতৃকাকে নিয়ে ভাবি, যারা বাংলাদেশের মাটি ও মানুষের অগ্রযাত্রার কথা ভাবি, যারা বাঙালির সংস্কৃতিকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরতে চাই; যারা অসাম্প্রদায়িক চেতনায় আস্থা রাখি; যারা ধর্মান্ধতা-কূপমণ্ডুকতা-মৌলবাদ-জঙ্গিবাদ থেকে জাতিকে নিরাপদ রাখতে চাই; যারা বাংলার আবহমান কালের শাশ^ত বাণী ‘সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই।’ অথবা ‘হাজার বরণ গাভীরে ভাই একই বরণ দুধ, জগৎ ভরমিয়া দেখি একই মায়ের পুত।’ এসব সত্যে আস্থা রাখি, তারা নানান কৌশলে অতীত ঐতিহ্যের শৌর্য-বীর্যের গৌরব ফিরিয়ে আনতে চাই; কিন্তু হায়! মানুষ কখনো অতীতে ফিরে যেতে পারে না তর্পণ করতে পারে মাত্র; সময়ের বাস্তবতায় আজ আমরা যেখানে দাঁড়িয়েছি, সেখানে সবার প্রত্যাশিত উজ্জ্বল অতীত ফিরিয়ে আনা স্বাভাবিক অবস্থায় দুর্লঙ্ঘ নয়, অলঙ্ঘই বলা যায়। সবার প্রত্যাশা পূরণে সর্বৈব এক বিপ্লব অত্যাবশ্যক। আমাদের এই অতীত ফিরিয়ে আনার কলাটি উপলব্ধির; যার অন্তরে স্বপ্ন লুক্কায়িত থাকে। সমধারার দীর্ঘ কর্মতালিকায় দেখতে পাই অতীত গৌরব তুলে আনার প্রয়াস; হয়তো সে কারণেই সমধারা আমাদের ভাষা আন্দোলনের বীর যোদ্ধাদের স্মরণ করে।

১৯৭১-এ যে জাতি বঙ্গবন্ধুর এক তর্জনীর মাথায় ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল; যে জাতি ৩০ লাখ মানুষের বুকের রক্ত, দুই লক্ষাধিক মা-বোনের সম্ভ্রম আর দীর্ঘ যন্ত্রণা সহ্য করে স্বাধীন করেছিল দেশ; সেই জাতি স্বাধীনতার সাড়ে তিন বছরের মাথায় বঙ্গবন্ধুর মতো অবিসংবাদিত এক মহান নেতাকে সপরিবারে হত্যা করেছে, কলঙ্কিত করেছে ইতিহাস; ১৯৭৫-এর পর যে জাতি দীর্ঘ একুশ বছর ধরে স্বাধীনতাবিরোধী চক্রের প্ররোচনা ও ষড়যন্ত্রে বিভ্রান্তির লজ্জা মাথা পেতে নিয়েছে। যে জাতি আজ বহুধা বিভক্ত; যখন আমাদের স্বার্থের সমুখে নীতিবোধ অবনত; তখন সবার প্রত্যাশা কীভাবে পূর্ণ হবে, হয়তো আমরা তা জানি না; কিন্তু বঙ্গবন্ধুর মতো অবিসংবাদিত নেতার শরণাপন্ন হয়ে নিজেদের কলঙ্ক মুছতে চাই; এ-ও আমাদের স্বপ্নের এক অধ্যায়; যদি পেছনে তাকাই দেখতে পাই, ইতোমধ্যে সমধারা যে ৮৯টি উল্লেখযোগ্য সংখ্যা প্রকাশ করেছে, তার বেশ ক’টির প্রচ্ছদ হয়েছেন বঙ্গবন্ধু, তাঁর সংগ্রাম এবং আদর্শ বয়ান।

আমাদের লড়াই-সংগ্রাম একদিনেই শেষ হয়ে যায় না; কিন্তু জাতির অগ্রযাত্রা এবং শুভ প্রবণতার চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছার জন্য নিয়ত কাজ করে যেতে হয় স্বপ্নকে সঙ্গে নিয়ে; তারপরও ‘যতক্ষণ শ্বাস ততক্ষণ আশা!’ শুভ চেতনার কথা আমাদের বলে যেতে হয়। আজ আমরা এমন এক বাস্তবতার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে মিথ্যাকে প্রত্যাখ্যান করে সত্য উচ্চারণ করতে চাই, যখন আমাদের সমাজ-পরিপার্শ্বিক স্তুতি আর স্তাবকতায় নিমজ্জিত। যখন ব্যক্তি স্বার্থের কাছে মূল্যবোধ বিপন্ন! কিন্তু আমরা বিশ্বাস করি সংস্কৃতিকর্মীরাই পারে মানুষের কল্যাণ চিন্তায় স্রোতের বিপরীতে উজানে চলতে। শুভ চেতনার পক্ষে সবাই সক্রিয় থাকতে চাই নিরন্তর। সমধারা সে কাজটিও করে যাচ্ছে নিষ্ঠার সঙ্গে। স্বপ্ন-বাস্তবতার ক্ষেত্রে সমধারা হয়তো সবার প্রত্যাশা সমভাবে পূরণ করতে পারছে না; কিন্তু তাদের আন্তরিকতায় যে সামান্য ঘাটতি নেই সে কথা স্পষ্ট হয় সমধারার নানা আয়োজনে।

সমধারার আয়োজন এবং কর্মসূচি যদি সামান্য যত্ন নিয়ে দেখতে চাই, তাহলে দেখব সাহিত্যের কাগজ সমধারা নিয়মিত প্রকাশনার সঙ্গে ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস গবেষণা, অবহেলিত শিশুদের স্বাক্ষরজ্ঞান প্রদানসহ সামাজিক ক্ষেত্রে বিভিন্ন সেবামূলক কাজ করে যাচ্ছে; যার সঙ্গে আছে স্বপ্নের যোগ। যে আয়োজনের কথা বলতে গিয়ে এত কথার অবতারণা, সেটি ছিল ‘ইপসা সমধারা ৯ম কবিতা উৎসব ২০২৩’। মোট চারটি পর্বে বিন্যস্ত উৎসবের প্রথম পর্বে ছিল পশ্চিমবঙ্গসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা অর্ধশতাধিক কবির স্বকণ্ঠ স্বরচিত কবিতা পাঠ; প্রথম পর্বের অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কবি নজমুল হেলাল। দ্বিতীয় পর্বে কবি নির্মলেন্দু গুণের কবিতা থেকে আবৃত্তি পরিবেশনা; সালেক নাছির উদ্দিন-এর গ্রন্থনা ও নির্দেশনায় ‘গুণের সবুজ ফসল’ আবৃত্তি পরিবেশন করে সমধারার নিজস্ব আবৃত্তি দল। টান টান উত্তেজনার মধ্যে একের পর এক কবিতা আবৃত্তি করে যায় বাচিকশিল্পী দল; স্বল্প ধারাবর্ণনার অংশটুকুও ছিল সাবলীল এবং আকর্ষণীয়।

দুই শতাধিক কবি-সাহিত্যিকের সঙ্গে স্বয়ং কবি নির্মলেন্দু গুণ ছিলেন এ পর্বের মুগ্ধ শ্রোতা; কবি তার মুগ্ধতার কথা উচ্চারণ করলেন পরিবেশনা শেষে। তৃতীয় পর্বে ছিল সমধারা সাহিত্য পুরস্কার ২০২৩ প্রদান। কথাসাহিত্যিক কাইয়ূম নিজামীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত তৃতীয় পর্বটি ছিল প্রাণচঞ্চল। মুহুর্মুহু করতালি আর হর্ষধ্বনির মধ্যে এবারের পুরস্কার পেলেন কথাসাহিত্যে হরিশংকর জলদাস, কাব্যসাহিত্যে ফরিদ আহমদ দুলাল এবং শিশুসাহিত্যে স.ম শামসুল আলম। পুরস্কার প্রাপকদের হাতে নগদ অর্থ, পোট্রেট এবং উত্তোরী তুলে দেন কবি নির্মলেন্দু গুণ ও অতিথিবৃন্দ।

এ পর্ব উদ্বোধন করেন কবি প্রাবন্ধিক মজিদ মাহমুদ। শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন সমধারা সম্পাদক সালেক নাছির উদ্দিন। উল্লেখ্য, নবীন কবিতাকর্মীদের সংগঠিত করার পাশাপাশি খ্যাতিমানদেরও সম্মানিত করার স্বপ্ন নিয়েই সমধারা ১৯১৬ সাল থেকে প্রবর্তন করে সমধারা সাহিত্য পুরস্কার। প্রথম কয়েক বছর শুধু কবিতার জন্যই এ পুরস্কার প্রদান করা হলেও কয়েক বছরের মধ্যে যুক্ত হয়েছে শিশুসাহিত্য ও কথাসাহিত্যও। ইতোপূর্বে যারা এ পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন, তারা হলেন কবি হেলাল হাফিজ (২০১৬), কবি নির্মলেন্দু গুণ (২০১৭), কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা (২০১৮), কবি মৃণাল বসুচৌধুরী (২০১৯), কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন ও শিশুসাহিত্যিক রহীম শাহ (২০২০), কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন ও কবি সরোজ দেব (২০২১), কথাসাহিত্যিক আনোয়ারা সৈয়দ হক ও কবি ওমর কায়সার (২০২২)।

সমধারা পুরস্কারের দিকে তাকালে দেখতে পাই, প্রথম চার বছর কবিতার জন্য একজনকেই এ পুরস্কার দেয়া শুরু হলেও পঞ্চম বর্ষে ঘটে যায় বিপর্যয়; না, বিপর্যয় পুরস্কার একজনের পরিবর্তে দুজনকে দেওয়ায় নয়; বিপর্যয় ঘটে পঞ্চম বর্ষে কবিতায় কাউকে পুরস্কারই দেয়া হয়নি; কবিতা উৎসবে কবিতাই পড়ে গেল বাদ; অসাবধানতায় কখনো এমনটি হয়ে যায়; পরবর্তী বছরই ভুল সংশোধন করে নিয়েছে সমধারা। অষ্টম বর্ষ থেকে তিনটি শাখায় পুরস্কার প্রদান শুরু হলো; ২০২৪-এর জন্য ইতোমধ্যেই যে পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে, সেখানে পুরস্কার পাবেন তিনজন কবিতায় মজিদ মাহমুদ, কথাসাহিত্যে বিশ্বজিৎ চৌধুরী এবং শিশুসাহিত্যে ধ্রুব এষ। সমধারা যেহেতু স্বপ্নবুনন কাজেই মগ্ন, আগামীতে যদি এ পুরস্কার সাহিত্যের চার-পাঁচ বা ছয় শাখায়ও প্রদান করা হয় তবে আমি অন্তত অবাক হবো না।

পুরস্কার বিতরণ শেষে সাইক সিদ্দিকীর গ্রন্থনা ও নির্দেশনায় অভিনীত হয় ময়মনসিংহ গীতিকা অবলম্বনে পালা ‘জয়তুন বিবির পালা’। লক্ষ করলে দেখা যাবে পালা নির্বাচনেও আছে স্বপ্নের আভাস; শুরুতেই যে কথা বলেছিলাম, নিজেদের ঐতিহ্য ও গৌরব তুলে আনার প্রয়াস; পালা উপস্থাপনের মাধ্যমে সমধারা যেন নগরের মানুষের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে চাইলো লোকবাংলার ঐতিহ্যবাহী পালাগানকে।

নবম কবিতা উৎসব উপলক্ষে প্রকাশিত হয় সমধারা-৮৯ বিশেষ সংখ্যা। এ ছাড়াও সালেক নাছির উদ্দীন ও জান্নাত আরা মমতাজ সম্পাদিত কবিতা সংকলন ‘পদাবলীর যাত্রা’। এবারের পদাবলীর যাত্রায় সংকলিত হয়েছে কবি ফরিদ আহমদ দুলালের ভ‚মিকাসহ শতাধিক কবির কবিতা; আকর্ষণীয় প্রচ্ছদ এঁকেছেন শামীম আশরাফ। এবারের উৎসবটি উৎসর্গ করা হয় সম্প্রতি প্রয়াত কবি সোহাগ সিদ্দিকীকে; যিনি সমধারাসহ সাহিত্যের নানান আঙিনায় নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করে গেছেন আমৃত্যু। সাহিত্যাঙ্গনে সমধারা আগামীতে আর কী নতুন স্বপ্ন নিয়ে উপস্থিত হয়, তা-ই এখন দেখার অপেক্ষা। আসুন আমরা ভালোবাসা নিয়ে সমধারার পাশে দাঁড়াই, দাঁড়াই স্বপ্নের পাশে।

/এএস

Header Ad
Header Ad

অবশেষে সরিয়ে দেওয়া হলো মাউশির বিতর্কিত ডিজিকে

অধ্যাপক ড. এহতেসাম উল হক ও মাউশির লোগো। ছবি: সংগৃহীত

শিক্ষক নেতাদের আন্দোলন ও গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক (ডিজি) পদ থেকে অধ্যাপক ড. এহতেসাম উল হককে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি শিক্ষা ক্যাডারের ১৪তম বিসিএসের কর্মকর্তা এবং পটুয়াখালী সরকারি কলেজের অধ্যাপক ছিলেন।

বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সম্প্রতি তার বিতর্কিত কার্যক্রম নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর তাকে ওএসডি (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) করে মাউশিতে সংযুক্ত করা হয়েছে। এদিকে, নতুন মহাপরিচালক হিসেবে অধ্যাপক মুহাম্মদ আজাদ খানকে চলতি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপসচিব মো. মাহবুব আলম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে, অধ্যাপক মুহাম্মদ আজাদ খানের এই দায়িত্ব কেবল সাময়িক, যা পদোন্নতি হিসেবে গণ্য হবে না। পরবর্তীতে নিয়মিত নিয়োগের মাধ্যমে মহাপরিচালক নিয়োগ হলে এই চলতি দায়িত্ব বাতিল হয়ে যাবে।

অধ্যাপক এহতেসাম উল হকের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। এর আগে তিনি বরিশাল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ থাকাকালীন শিক্ষার্থীদের ওপর নিপীড়ন চালানোর অভিযোগে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন। অভিযোগ রয়েছে, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের তথ্য তিনি পুলিশের কাছে সরবরাহ করেছিলেন।

২০২৩ সালের ৫ আগস্ট তার অপসারণের দাবিতে কলেজের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করে। দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও অসদাচরণের অভিযোগ তুলে তার অপসারণের দাবি জানায় শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ২০২১ সালের জুন মাসে বরিশাল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজে যোগদানের পর থেকে তিনি নানা অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতা চালিয়ে যান। তিনি বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের তৎকালীন মেয়র এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আত্মীয় সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর ঘনিষ্ঠ ছিলেন।

অভিযোগ রয়েছে, অধ্যক্ষ থাকাকালীন তিনি শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করতেন এবং আন্দোলনে অসহযোগিতা করতেন। এমনকি কলেজের গাড়ি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করতেন, যা তার শ্বশুরবাড়ির লোকজনও ব্যবহার করতেন। তিনি কলেজের বিদ্যুৎ ব্যবহার করে নিজের বাসায় গ্রিল নির্মাণসহ অন্যান্য কাজ করিয়েছেন। কেউ প্রতিবাদ করলে চাকরি খেয়ে ফেলার হুমকি দিতেন এবং বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদন (এসিআর) খারাপ করে দেওয়ার ভয় দেখাতেন। এছাড়া, চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক ও কর্মচারীদের বেতন না দিয়ে বিদায় করে দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

ডিজি পদ থেকে এহতেসাম উল হককে অপসারণের খবরে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, একজন বিতর্কিত ব্যক্তি শিক্ষাখাতের এত বড় দায়িত্বে থাকতে পারেন না। তার অপসারণের মাধ্যমে প্রশাসনের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার প্রতি সরকারের সদিচ্ছার প্রতিফলন ঘটেছে।

Header Ad
Header Ad

২০১৮ সালের নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা ৩৩ ডিসি ওএসডি

ছবি: সংগৃহীত

২০১৮ সালের বিতর্কিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ৩৩ জন জেলা প্রশাসককে (ডিসি) বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত ছয়টি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিতর্কিত নির্বাচনে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালনের কারণে এই কর্মকর্তাদের ওএসডি করা হয়েছে। এর আগে একই কারণে আরও ১২ জন কর্মকর্তাকে ওএসডি করা হয়েছিল।

ওএসডি হওয়া কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের পরিচালক (যুগ্মসচিব) কবীর মাহমুদ, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পরিচালক (যুগ্মসচিব) মো. মাহমুদুল আলম, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের আঞ্চলিক পরিচালক (যুগ্মসচিব) মো. আবুল ফজল মীর, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের সদস্য-পরিচালক (যুগ্মসচিব) মঈনউল ইসলাম, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য (যুগ্মসচিব) মো. ওয়াহিদুজ্জামান, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (সংযুক্ত) এ কে এম মামুনুর রশিদ এবং বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (বাপবিবো) সদস্য (যুগ্মসচিব) ড. কে এম কামরুজ্জামান সেলিম।

এছাড়া তালিকায় রয়েছেন নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব কাজী আবু তাহের, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সদস্য (যুগ্মসচিব) মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্মসচিব (সংযুক্ত) আনার কলি মাহবুব, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের সদস্য (যুগ্মসচিব) সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের পরিচালক মো. মতিউল ইসলাম চৌধুরী, কৃষি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব সাবিনা ইয়াসমিন, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আতাউল গনি এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব (সংযুক্ত) আবু আলী মো. সাজ্জাদ হোসেন।

এছাড়া, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব এ জেড এম নুরুল হক, বাংলাদেশ রাবার বোর্ডের পরিচালক (যুগ্ম-সচিব) এস এম আজিয়র রহমান, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের সচিব (যুগ্ম-সচিব) মো. মাসুদ আলম সিদ্দিক এবং সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের যুগ্ম-সচিব গোপাল চন্দ্র দাশসহ আরও বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা রয়েছেন।

প্রসঙ্গত, বিতর্কিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকেই ওই সময়ের রিটার্নিং কর্মকর্তাদের ভূমিকা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। এবার সেই নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা কর্মকর্তাদের পর্যায়ক্রমে ওএসডি করা হচ্ছে বলে মনে করছেন প্রশাসনিক বিশ্লেষকরা।

Header Ad
Header Ad

ট্রাম্পের বিস্ফোরক দাবি: চলমান যুদ্ধের সূচনা ইউক্রেনই করেছিল

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য ইউক্রেনকেই দায়ী করে নতুন বিতর্ক উসকে দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন রাজনীতিতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ সমর্থক হিসেবে পরিচিত ট্রাম্প এবার ইউক্রেনের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন। তিনি দাবি করেছেন, চলমান যুদ্ধের সূচনা ইউক্রেনই করেছিল।

মঙ্গলবার (স্থানীয় সময়) ফ্লোরিডার মার-আ-লাগোতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় ট্রাম্প ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির প্রতি কঠোর মনোভাব প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ইউক্রেনে একটি নতুন নির্বাচন হওয়া উচিত। বিশ্লেষকদের মতে, এটি জেলেনস্কিকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনারই ইঙ্গিত।

ট্রাম্প আরও বলেন, ইউক্রেনে দীর্ঘদিন ধরে কোনো নির্বাচন হয়নি এবং সেখানে সামরিক আইন চলছে। তার দাবি, জেলেনস্কির জনপ্রিয়তা মাত্র চার শতাংশে নেমে গেছে, আর দেশটি ধ্বংসের পথে। যদিও যুদ্ধকালীন সময়ে নির্ভরযোগ্য জনমত জরিপ পাওয়া কঠিন, তবে বিভিন্ন প্রতিবেদনে দেখা গেছে, জেলেনস্কির জনপ্রিয়তা ট্রাম্পের দাবির মতো এতটা কমেনি।

এছাড়া, ইউক্রেনের নির্বাচন প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেন, "তারা কি জনগণের মতামত নিয়েছে? তারা আলোচনার টেবিলে বসতে চায়, কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে সেখানে কোনো নির্বাচন হয়নি।"

প্রসঙ্গত, ইউক্রেনে ২০২৪ সালের এপ্রিলে নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও দেশটির সংবিধান অনুযায়ী, যুদ্ধকালীন সময়ে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন সম্ভব নয়। বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের এই মন্তব্য কৌতুকপূর্ণ, কারণ তিনি নিজেই ২০২০ সালের মার্কিন নির্বাচনের ফলাফল মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন।

ট্রাম্প আরও দাবি করেন, ইউক্রেন চাইলে যুদ্ধ বন্ধ করতে পারতো এবং তাদের উচিত ছিল রাশিয়ার সঙ্গে সমঝোতায় যাওয়া। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এর অর্থ হলো—ইউক্রেনকে হয় রাশিয়ার মিত্র সরকার গঠনের প্রস্তাবে রাজি হতে হতো, নয়তো প্রতিরোধ ছেড়ে দিয়ে আত্মসমর্পণ করতে হতো।

বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের সাম্প্রতিক অবস্থান ইঙ্গিত দেয় যে, তিনি পুনরায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে ইউক্রেনকে সমর্থন না দিয়ে বরং রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে একটি বিতর্কিত শান্তিচুক্তির দিকে এগোতে পারেন, যা পুতিনের জন্য বড় ধরনের কূটনৈতিক জয় হিসেবে বিবেচিত হবে।

সূত্র: সিএনএন

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

অবশেষে সরিয়ে দেওয়া হলো মাউশির বিতর্কিত ডিজিকে
২০১৮ সালের নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা ৩৩ ডিসি ওএসডি
ট্রাম্পের বিস্ফোরক দাবি: চলমান যুদ্ধের সূচনা ইউক্রেনই করেছিল
ডিবির সাবেক প্রধান হারুনের ১০০ বিঘা জমি, ৫ ভবন ও ২ ফ্ল্যাট ক্রোকের নির্দেশ
দিল্লির নতুন মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন রেখা গুপ্তা, বিজেপির সিদ্ধান্তে চমক
একুশের প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতির শহীদ মিনারে না যাওয়ার আহ্বান
নামাজি জীবনসঙ্গী খুঁজছেন আইশা খান
গাইবান্ধায় গাঁজাসহ আটক এএসআইকে কারাগারে প্রেরণ
উপদেষ্টাদের মিটিংয়ে কোন প্রটোকলে গিয়েছিলেন হাসনাত-পাটোয়ারী: ছাত্রদল সেক্রেটারি
সরকারে থেকে ‘নতুন দল’ গঠন করলে মেনে নেওয়া হবে না: মির্জা ফখরুল
হোস্টিং সামিট ২০২৫ অনুষ্ঠিত
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির উদ্বোধনী ম্যাচে পাকিস্তানকে ৩২১ রানের বড় লক্ষ্য দিলো নিউজিল্যান্ড
বৈষম্যবিরোধী নামধারী শীর্ষ নেতার নির্দেশে কুয়েটে ছাত্রদলের ওপর হামলা: রাকিব
যান্ত্রিক ত্রুটিতে আবারও বন্ধ বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র
কুবিতে ছাত্র সংসদের দাবিতে মানববন্ধন ও সন্ত্রাসবিরোধী বিক্ষোভ মিছিল
২২০ জনকে নিয়োগ দেবে সমরাস্ত্র কারখানা, এসএসসি পাসেও আবেদন
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে ২ দিনব্যাপি খামারি প্রশিক্ষণ
সবার সাত দিন কারাগারে থাকা উচিত: আদালতে পলক
বিপ্লবী সরকারের ডাক থেকে সরে এলেন কাফি  
নাঈম ভাই হেনা কোথায়?: ‘তুই অনেক দেরি করে ফেলেছিস বাপ্পা’