সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষ উপলক্ষে সিএজি কার্যালয়ের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান
মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে বাংলাদেশের কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেলের (সিএজি) কার্যালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ২০২১ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (২৯ ডিসেম্বর) বিকাল ৫টায় রাজধানীর তেজগাঁওয়ের সড়ক ভবনের মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. আবদুস সবুর। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশের কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (সিএজি) মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, তলাবিহীন ঝুড়ি পরিপূর্ণ হয়ে এখন উপচে পড়ছে। যে আমেরিকা এক সময় বাংলাদেশকে বটমলেস বাস্কেট বলেছিল। সেই দেশের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা নিজ দেশ কেনিয়া গিয়ে বলেছেন, 'তোমরা যদি উন্নয়ন করতে চাও তাহলে শেখ হাসিনাকে অনুসরণ করো, বাংলাদেশকে অনুসরণ করো। তোমাদের সেই বটমলেস বাস্কেট পরিপূর্ণ হয়ে এখন উপচে পড়ছে।'
ঐতিহাসিক ৭ই মার্চে বঙ্গবন্ধুর ভাষণের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ৭ই মার্চ তিনি শেখ মুজিবুর রহমান বললেন, 'আমি যদি ঘোষণা নাও দিবার পারি, তোমাদের যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবিলা কর।' হুকুম দিলেন, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে গ্রামে-গ্রামে, মহালয়া-মহালয়া, পাড়ায়-পাড়ায় সংগ্রাম পরিষদ গড়ে তোলো। অর্থাৎ গেরিলা যুদ্ধের যা যা কথা বলে দিলেন।
মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী বলেন, যে যত বড় দায়িত্বে থাকেন তার তত হিসাব করে কথা বলতে হয়। অনেকেই বলেন, বঙ্গবন্ধু তো চাইলেই ৭ তারিখ স্বাধীনতা ঘোষণা দিতে পারতেন। এত ঘুরিয়ে পেচালেন কেন। কিন্তু ওই সময়ে যদি তিনি ঘোষণা দিতেন, তাহলে বিশ্ব বলতো, এটা বিচ্ছিন্নতাবাদ আন্দোলন। কিন্তু তিনি তা করেননি। তিনি দেখলেন বিশ্ব জনমত আমাদের পক্ষে কিনা। যখন আমাদের পক্ষে আসল তখনই আমরা যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়লাম। তখন বিশ্ব আমাদের পক্ষে ছিল। বঙ্গবন্ধু ছিলেন একজন বিশ্ব নেতা।
আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, খালেদা জিয়া ক্ষমতায় থাকাকালীন বিরোধী দলে থেকে শেখ হাসিনা কৃষিতে ভর্তুকি দেওয়ার দাবি করেন। ভর্তুকি দিলে কৃষিতে উৎপাদন বাড়বে। উৎপাদন বাড়লে খাদ্য আমদানি করতে হবে না। তখন খালেদা জিয়া বলেছিলেন, বাংলাদেশ যদি খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হই তাহলে বিশ্ব থেকে রিলিফ ও সহযোগিতা পাব না।
তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন দেশের মানুষের মুক্তি। আমিরা যেন তার কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করে দেশকে সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলতে পারি এই হোক শপথ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. আব্দুস সবুর বলেন, স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু দেশে এসে প্রথমেই নজর দিয়েছিলেন যোগাযোগ কাঠামোর ওপর। গত ৫০ বছরে আমাদের অর্জনের কথা যদি বলতে হয়, মাথাপিছু আয় বেড়েছে, জিডিপি বেড়েছে। এতে সড়ক ও জনপথের অবদান রয়েছে। সরকারের প্রতিটি সেক্টরের সঙ্গেই সড়ক যোগাযোগের সম্পর্ক রয়েছে।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ কম্পট্রোলার এন্ড অডিটর জেনারেল (সিএজি) মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের জন্য বঙ্গবন্ধুর অবদানের মধ্যে অন্যতম হলো, বাংলাদেশের সংবিধান ও আইনি কাঠামো। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর অতি অল্প সময়ে সংবিধান ও একটা সুন্দর আইনি কাঠামো তৈরি করা যে সম্ভব হয়েছে, সেটা বঙ্গবন্ধুই দেখিয়েছেন। অন্য কেউ হলে পারতেন কিনা তা সন্দেহ।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক সিনিয়র অর্থ নিয়ন্ত্রক (প্রতিরক্ষা ক্রয়) ডা. তানজিনা ইসলামের স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু করা হয়।
অন্যান্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন সাবেক সিএজি মাসুদ আহমেদ, সিজিএ নুরুল ইসলাম, ডিসিএজি (সিনিয়র) মো. মাহবুবুল হক, অতিরিক্ত সচিব দেওয়ান সাইদুল হাসানসহ অডিট এন্ড একাউন্টস বিভাগের অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করেন অডিট অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস বিভাগের কর্মকর্তাবৃন্দ। এছাড়া জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী হায়দার হোসেন ও শুভ্রদেব গান গেয়ে শ্রোতাদের মুগ্ধ করেন। পাশাপাশি শিল্পকলা একাডেমির নাচের দল স্পন্দন নৃত্য পরিবেশন করে।
এপি/এএস