অপ্রদর্শিত নিদর্শনের বিশেষ প্রদর্শনী জাতীয় জাদুঘরে
জাতীয় জাদুঘরের নলিনীকান্ত ভট্টশালী প্রদর্শনী গ্যালারিতে প্রাকৃতিক ইতিহাস বিভাগের অপ্রদর্শিত নিদর্শনের বিশেষ প্রদর্শনী আয়োজন করা হয়েছে।
সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবুল মনসুর। সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সভাপতি অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। স্বাগত বক্তৃতা করেন জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান।
এই প্রদর্শনীতে প্রাকৃতিক ইতিহাস বিভাগে সংগৃহীত নিদর্শন থেকে উল্লেখযোগ্য ২৯১টি প্রাণিজ, ২৬টি ভূ-তাত্ত্বিক এবং ৬টি উদ্ভিজ নিদর্শন উপস্থাপন করা হয়েছে। প্রাণিজ নিদর্শনের মধ্যে প্রজাপতি, রেশম পোকার গুটি, শামুক-ঝিনুক, প্রবাল, উট পাখির ডিম, হাতির দাঁত, হরিণের শিং, ঘড়িয়ালের মাথার খুলি, ডলফিনের কঙ্কাল, রাসায়নিক দ্রব্যে সংরক্ষিত বিভিন্ন নিদর্শন রয়েছে।
প্রদর্শনীতে আরও রয়েছে জাতীয় পাখি দোয়েল, অতি বিপন্ন প্রজাতির পাখি শকুনসহ পরিযায়ী হাঁস, সাপ, জীবন্ত জীবাশ্ম রাজ কাঁকড়া, বিলুপ্ত প্রজাতির গণ্ডার, বারশিঙ্গা ও বুনো মহিষ। এছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন প্রকার সামুদ্রিক প্রাণি, বাঘের চামড়াসহ বিভিন্ন প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণির চামড়া।
ভূ-তাত্ত্বিক নিদর্শনের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের খনিজ, আগ্নেয় শিলা, পাললিক শিলা, চুনাপাথর , প্রাণীর ছাঁপযুক্ত ফসিল, কোয়ার্টজ, মধুপুর ক্লে, বাংলাদেশের ৬৪ জেলার মাটি দিয়ে নির্মিত বাংলাদেশের মানচিত্র ও প্রস্তরীভূত কাঠ।
উদ্ভিজ নিদর্শনের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন মাধ্যমে সংরক্ষিত জীবন্ত জীবাশ্ম হিসেবে পরিচিত সাইকাসের বিভিন্ন প্রজাতির কোন (মোচা), এশিয়ার সর্ববৃহৎ লিগিউম জাতীয় ফল গিলা ইত্যাদি।
বর্তমান বিশ্বে মানুষ বিভিন্ন কার্যক্রমের দ্বারা প্রাণী ও উদ্ভিদের আবাসস্থল নিধন করে পরিবেশ দূষণ এবং বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধিসহ ভয়াবহ পরিবেশ বিপর্যয়ের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এই প্রদর্শনী পরিদর্শনের মাধ্যমে দর্শক চিরায়ত বাংলার হারিয়ে যাওয়া প্রাকৃতিক ঐতিহ্যকে স্মরণ করতে পারবে। প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণের পাশাপাশি জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশের ভারসাম্য সুরক্ষার সচেতনতা বৃদ্ধিতে জনগণকে এগিয়ে আসতে অনুপ্রাণিত করাই এই প্রদর্শনী আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য।
বিশেষ প্রদর্শনীটি আগামী ২৪ এপ্রিল তারিখ পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। আগ্রহী দর্শনার্থীরা প্রতিদিন (বৃহস্পতিবার, শুক্রবার ও সরকারি ছুটির দিন ব্যতিত) সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিনামূল্যে প্রদর্শনীটি পরিদর্শন করতে পারবে।
এপি/