৩০তম দিনের অনুষ্ঠানমালা
বিজয়ের প্রেক্ষাপটে নতুন মাত্রা যোগ করেন জাহানারা ইমাম
অমর একুশে বইমেলার ৩০তম দিন বুধবার (১৬ মার্চ) বিকাল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘শহিদ জননী জাহানারা ইমাম : আমৃত্যু সংগ্রামী এক মহাপ্রাণ’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন তপন পালিত। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন সাবিহা পারভীন, জয়দুল হোসেন ও আহমেদ আহসানুজ্জামান। সভাপতিত্ব করেন নাসির উদ্দীন ইউসুফ।
প্রাবন্ধিক বলেন, ‘শহিদ জননী জাহানারা ইমাম রাজনীতির অঙ্গন থেকে বেশ দূরেই জীবনের অধিকাংশ সময় কাটিয়েছেন। কিন্তু যখন হৃদয় থেকে তাগাদা পেলেন তখন রাজপথে নেমে এসে সংগ্রামের নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করে গেছেন। সৃজনশীল লেখিকা হিসেবে প্রথম দেশবাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন তাঁর একাত্তরের দিনগুলি গ্রন্থের জন্য। রাজনীতিবিদ না হয়েও রাজনীতির অঙ্গনে প্রবেশ করে সারাদেশে তুমুল আলোড়ন সৃষ্টি করতে পেরেছিলেন। একাত্তরের দিনগুলি গ্রন্থ এবং পরবর্তীকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিরুদ্ধে পরিচালিত আন্দোলন তাঁকে কোটি মানুষের হৃদয়ে গভীর শ্রদ্ধার আসনে অধিষ্ঠিত করছে।’
আলোচকরা বলেন, শহিদ জননী জাহানারা ইমাম মুক্তিযুদ্ধকালীন অবরুদ্ধ সময়ের একটি অসাধারণ চিত্র আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন একাত্তরের দিনগুলি গ্রন্থের মাধ্যমে। তাঁর সাবলীল লেখনীর অনবদ্য কৌশলে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে গৌরবজনক অধ্যায়টি তিনি উপস্থাপন করেছেন। জাহানারা ইমাম বুদ্ধিজীবী হয়েও রাজপথে নেমে সম্মুখ-কাতারে দাঁড়িয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেন। মানুষের বাকস্বাধীনতাকে প্রতিষ্ঠিত করতে এবং স্বাধীনতার সূর্যকে প্রজ্জ্বলিত রাখতে জাহানারা ইমাম আজীবন সংগ্রাম করেছেন। তাঁর চেতনা ও আদর্শ যুগ যুগ ধরে আমাদের জন্য আলোকবর্তিকা হয়ে থাকবে।
নাসির উদ্দীন ইউসুফ বলেন, ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ এবং যুদ্ধপরবর্তী সময়কে জাহানারা ইমাম নিজের চেতনায় ধারণ করেছিলেন। মুক্তিযুদ্ধকালে মুক্তিযোদ্ধাদের যেমন নানাভাবে সহযোগিতা করেছেন, তেমনি মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের জন্য দলমত নির্বিশেষে সবাইকে সংগঠিত করার জন্য আজীবন অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। সর্বোপরি তিনি বাংলাদেশের বিজয়ের প্রেক্ষাপটে নতুন মাত্রা যোগ করেছেন।
লেখক বলছি
লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের বই নিয়ে আলোচনা করেন মিনার মনসুর এবং সাইফুল্লাহ মাহমুদ দুলাল।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান
মূল মঞ্চে আজকের অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন কবি ইউসুফ রেজা, সাইফুল্লাহ মাহমুদ দুলাল, মাহবুবা লাকী, বাপ্পী রহমান এবং লুৎফর চৌধুরী। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় এবং রূপা চক্রবর্তী। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ছিল মোঃ মোশাররফ হোসেনের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘দৃষ্টি’, মোঃ সুজাতুল আলমের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘আদি গম্ভীরা দল’-এর পরিবেশনা। নৃত্য পরিবেশন করেন কবিরুল ইসলাম রতন। সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী আশরাফ মাহমুদ, অমিয় বাউল, মুন্নী কাদের, রত্না সরকার, সাধিকা সৃজনী তানিয়া, জান্নাত-ই-ফেরদৌসী, শাহীনা আক্তার পাপিয়া, শামীমা নাসরিন চমন। যন্ত্রাণুষঙ্গে ছিলেন জয় প্রসাদ সিংহ রায় (তবলা), আনোয়ার সাহদাত রবিন (কী-বোর্ড) এবং (মন্দিরা)।