শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪ | ২৭ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৪৫

নেই দেশের নাগরিক  

“সে তো যাবই। একা একা এই ধূ ধূ সমুদ্রে পড়ে থেকে মরব নাকি। আব্বার অবস্থা খুবই খারাপ। জানটা জিভের ডগায় ধুকধুক করছে। এবার যেভাবেই হোক, বাংলাদেশের কোনো পাড়ে উঠতেই হবে।“
“হ্যাঁ হ্যাঁ, পাড় তো তোমার কেনা। বাপের জায়গির যে ইচ্ছে হলো আর ফট করে উঠে গেলে! বর্ডার সব সিল করে দিয়েছে, দেখছ না?” কথায় আগুনের ছ্যাকা দেয় নুহু।
“তুই ঘোড়ার ডিম জানিস। বর্ডার সিল থাকলেও, ফাঁকফোকর থেকেই যায়। সব জায়গায় তো আর কাঁটাতার নেই। অনেক জায়গা ফাঁকা আছে। ওগুলোকে চোরাবর্ডার বলে। ওইসব চোরাই বর্ডার দিয়ে কোনোমতে ঢুকে পড়ে আব্বার মরদেহটাকে কবর দিয়ে দিতে পারলেই তো হলো, তারপর আমরা না হয় নদীতেই পড়ে থাকব। আব্বা কবরের মাটি তো পাবে।“ প্রথম কথাটা বলার সময় চোখমুখ উলটালেও, শেষের কথাটা বলার সময় মতির চোখেমুখে যেন একটা ড্যাফোডিল ফুল ফুটে উঠল। মাটি পাওয়ার গন্ধ মনে লাগতেই, মনটা আচানক পাঁপড়ি মেলে উঠল। মতি এবার ঠোঁটে হাসির মোম লাগিয়ে বলল, “আব্বা পরহেজগার মানুষ, আল্লাহর এলেম জানা বান্দা, বুদ্ধি হয়ে থেকে আল্লাহর আমল করে আসছে, আর তার মরদেহ কবরের মাটি পাবে না, তাই হয়?”

“না পেতেও পারে। দেহের আর কী আছে। আল্লাহর তো রুহু নিয়ে কাজ। রুহুর উপরেই যত হিসাব-নিকাশ। আব্বা যেসব নেক কাজ করেছে, তাতে সে জান্নাতবাসী হতে পারে। মরা দেহ মাটি পেল কি না পেল, তাতে কী যায় আসে? হিসাব তো দেবে রুহু, নাকি?” নহুর কণ্ঠ যেন লঙ্কাপেষাইয়ের মেশিন থেকে বেরিয়ে আসে। মতিও ঝাল পেড়ে উঠল। তার কণ্ঠও ধানি লঙ্কা হয়ে উঠল, “তুই হাদিস কোরানের কী জানিস? আল্লাহর কাছে, দেহটা কি ফকেটিয়া ভাবছিস? ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে তিনি দেহের হিসাব নেবেন। আল্লাহ, দেহ ছেড়ে চলে যাওয়া রুহু আবার পুনরায় দেহে ফিরিয়ে আনবেন। মানুষকে আবার জ্যান্ত করবেন। অক্ষরে অক্ষরে বুঝে নেবেন দুনিয়াদারির হিসাব।“ পায়ের তালু গিঁটটায় চেপে ধরে, হাত দিয়ে টেনে, শরীরটাকে ধনুকের মতো বেঁকিয়ে, কুঁত পেড়ে বাঁধনটাকে পোক্ত করল মতি। একেবারে জাব্দা করে ছইটাকে বেঁধে দিল। ঝড়ে নৌকো পাল্টি খেলেও, ছইটা যাতে খুলে না যায়। জাব্দা বাঁধনের সাথে সাথে মুখ দিয়ে বেরিয়ে এল জাব্দা কথা, “আল্লাহ শুধু রুহুর চাষ করেন না, দেহেরও চাষ করেন। মাটির হিসাব কাঠিতে বুঝে নেবেন।“
“মাটি দেহ, দেহ মাটি।“ মুখটা নদীর দিক করে কথায় মিহি সুর লাগিয়ে বলল নুহু।

“মর, তখন বুঝবি।“ ঠ্যালা মেরে বলল মতি। তারপর চোখ কটমট করে বলল, “টাপাটাকে(ছই) একটু উপরের দিকে ঠেলে তুলে ধর। দেখছিস ন্যা, কাত হয়ে যাচ্ছে?”

মতি ছইটার যেদিক খাড়া করে বাঁধল, তার বিপরীত দিকও ঢেরখানি কাত হয়ে আছে। সেদিকটায়ও একটা শক্ত বাঁধন দিতে হবে। নুহুকে বেশি বকবক করতে দেখে, তাকেই হুকুমটা করল। নুহু তার ডান কাঁধটার উপরে কাত হয়ে থাকা ছইটা ভার নিয়ে উপরের দিকে তোলা দিয়ে ধরল। দুমড়ে যাওয়া ছইটা আগের মতো হয়ে গেল। মতি পাশের বাঁশের খুঁটির সাথে ছইটাকে দঢ় করে বাঁধল। নুহু একটু ঝুঁকে আলতো করে ভর খাওয়া কাঁধটাকে ছইয়ের ভেতর থেকে বাইরে বের করে নিয়ে এল। ছইটা কী সুন্দর অর্ধচোঙাকৃতি ঘরের চালা হয়ে গেল। মতি এবার বানরের মতো তিড়িং করে লাফ মেরে নিচে নামল। নৌকোটা আলুথালু করে নড়ে উঠল। একটা লম্বা কালো ছায়া হাত-পা বাড়িয়ে নৌকোর পাটাতনে ভাঁজ হয়ে পড়া শরীরটাকে ছুঁল। ছইয়ের এই সাতসকালের ছায়াটা তার গা-গতরের ছায়াকে খেয়ে ফেলল। দিগন্ত থেকে নিঙরে আসা হলুদ রঙে গলা ডুবিয়ে স্নান করছে নৌকোটা।

রোদ উঠতে দেখে মতি তাড়া দিল, “নুহু, তাড়াতাড়ি হাত চালা, সন্ধ্যের আগে নয়াপাড়া পৌঁছতে হবে।“ হালটা ধরে একটা জোর প্যাঁচ মারে মতি। নুহু আনমনে তিরতির করে ঢেউ ওঠা কালাপানি দেখে। জলের কত ঢং! এখন তিরতির করে প্রজাপতির ডানার মতো উতলাচ্ছে, অথচ ঝড়ের হুল ফুটলেই একেবারে বাঘের মতো হালুম করে ওঠে। গ গ করে আছড়ে পড়ে দুই পাড়ে। ভেঙে মুচড়ে সব লণ্ডভণ্ড করে দেয়। ঠোঙার মতো দুমড়ে মুচড়ে দেয় ভেসে থাকা নৌকোগুলোকে। আর এখন সেই নদীর রূপ দেখে মনে হচ্ছে, আহাঃ, এমনই নিরীহ যেন ভাজা মাছটা উল্টে খেতে জানে না! প্রকৃতি এভাবেই কখনো ফুল হয়ে ওঠে আবার কখনো কাঁটা হয়ে জীবনকে ক্ষতবিক্ষত করে দেয়! বুঝিয়ে দেয়, জীবনের মালা এভাবেই ফুল আর কাঁটা দিয়ে গড়া।
“সাঁই সাঁই করে হাত চালাও। গায়ে বল লাগিয়ে বৈঠা ঠ্যালো। সেরকম খাবার আর মজুত নেই। বিকেলের মধ্যে কিছু একটা জোগাড় না হলে না খেয়ে মরতে হবে!” ছইয়ের বাইরে বেরিয়ে এসে ঘোমটা টানল আরিফা। চোখে-মুখে দুশ্চিন্তার কালো মেঘ।
“কিছুই নেই!” মতির চোখ থির।
“থাকা বলতে গেলে, ক-গাল মুড়ি আছে। ওতে আর কী হবে! কোনোরকমে এক বেলার পেট চলবে।“ হাঁড়ির খবর দিল হাঁড়িমানুষ। আরিফা একখানা আস্ত হাঁড়িমানুষ। সেই যে বিয়ের পর থেকে হাঁড়ির সাথে লেগে গেছে, ছাড়ার আর কোন ফুরসত পায়নি। হাঁড়ি-হেঁসেল আর উঠোন-ঘর করেই তার তিন সিকি জন্ম কেটে গেল।
“কত করে বললাম, চালের বস্তাটা বুকে জাপটে ধরে থাকি, তা না করে আমাকে বৈঠা টেনে ধরে থাকতে বললে, এখন দ্যাখো, মজা। হাওয়া আর পানি খেয়ে থাকো।“ নদীর দিকে তাকিয়ে বিড়বিড় করল নুহু।
“কী করে জানব, অমন কুলক্ষণে ঝড় টাপার ভেতরেও শিং ঢুকিয়ে দেবে! বস্তাটা তো টাপার ভেতরেই ছিল। আমরা নৌকো সামলাব না চালের বস্তা সামলাব? আরিফা তো খেয়াল করতে পারত?” বৌ’এর ঘাড়ে দোষ চাপায় মতি। স্বামীর কথা শুনে ছ্যান করে ওঠে আরিফা, “ওহ, আমার দোষ? আমি একা হাতে তোমার বুড়ো বাপ-মা আর পেটের ছেলেকে সামলাব না ওই চালের বস্তা কুছায় ভরে নিয়ে বসে থাকব? মেয়ে মানুষের ঘাড়ে দোষ চাপাতে ভালই লাগে!”
“একবার তো মুখের কথা বলতে পারতে যে, দেখো গো চালের বস্তাটা পানিতে পড়ে যাচ্ছে।“
“হ্যাঁ হ্যাঁ, আমার তো চারটে চোখ যে, দুর্যোগের সময় সব দিক তাকিয়ে বসে থাকব? তিন তিনটে অসহায় মানুষ দেখব না চালের বস্তা দেখব? মানুষের থেকে কি চালের বস্তা বড়ো?” ধানি লঙ্কা হয়ে ওঠে আরিফা। আহারের টান পড়তেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঠুকমুক লেগে গেল। দুজনেরই মেজাজ তেতো হয়ে উঠতে লাগল। মানুষের থেকে চাল বড়ো নয়, এটা ঠিকই, তবে এই আপদে চাল না পেলে যে মানুষগুলোও মরে বস্তা হয়ে যাবে! ক্ষুধা মনে হয় এভাবেই ধীরে ধীরে ভালোবাসার মাঝে খুটুরমুটুর লাগিয়ে সম্পর্ককে তেতো করে তোলে।
“তোরা চুপ কর। এই আকালে একে তো আপদের শেষ নেই, তার ওপর নিজেদের মধ্যে ঝগড়াঝাটি লাগিয়ে এই হাঁটুগুঁজে বাঁচাটাকে জাহান্নাম বানিয়ে দিস ন্যা।“ ভেতর থেকে হালেমার কাতর স্বর।
“আমি কি আর একবার নদীতে লাফ মেরে দেখব, বস্তাটা কোথাও আটকে আছে কি না?“ অনুমতি চাইল নুহু।
“হ্যাঁ মার, লাফ মার, চালের বস্তা গেছে, এবার তুই যা।“ চোখ গরম করল মতি।
“না, বাপ, তুই অমন কাজ করতে যাস নে। এই জায়গাটা নদী নয়, সমুদ্র, ঢের পানি, একবার নামলে কোন তলে তলিয়ে যাবি, তার হদিসও পাবি ন্যা।“ হালেমার কন্ঠ হেলে উঠল। আরিফা কিচ্ছু বলল না। চোখ ছল ছল করে ছইয়ের ভেতরে ‘দ’ মেরে বসে থাকল। একটা কষ্টের দলা ভেতর থেকে ঠেলা মেরে উঠছে। মানুষটা বলে কি, আমার দোষেই নাকি চালের বস্তাটা জলে পড়ে গেছে! আমার কি এতটুকুও জ্ঞান-বোধ নেই, যে ছেলের মা হয়ে এই আপদের সময় চালের বস্তাকে চোখের সামনে জলে পড়তে দেখেও চুপ করে থাকব? আমি সারাক্ষণ ভাবছি, কী করে ছেলেটার মুখে দুটো দানাপানি তুলে দিতে পারব, কী করে বুড়ো শশুর-শ্বাশুড়ির পেটে একগাল সেদ্ধভাত তুলে দিতে পারব? আর মানুষটা আমাকে বলছে কি না, আমি চোখের সামনে চালের বস্তাটাকে নদীতে পড়ে যেতে দেখেও কিচ্ছু বলিনি! আমি কি জানি নে, ওই চালকটা শুধু শুধু ধানসেদ্ধ চাল নয়, ওই চালকটা এই নৌকোতে থাকা মানুষকটার পেটের একমাত্র রিজিক। পেটে একগাল সেদ্ধভাত পড়লেও জান’টা ধরে বেঁচে থাকবে। এই উপরে আকাশ আর নিচে জলের জীবনে একটা সেদ্ধভাত মানে আকাশের চাঁদ পাওয়া। মানুষটা আমাকে অমন কী করে ভাবতে পারল! অমন কথা বললই বা কোন মুখে! হালেমা তার থুত্থুরে হাত’টা বৌমার পিঠে দিয়ে বলেন, “চুপো মা, চুপো। ছেলেদের কাজই হল, মেয়েদের ঘাড়ে দোষ চাপানো। শোনো মা, সব কথা মনে পুষে রাখতে হয় না। আল্লাহ দুটো কান কেন দিয়েছে, জানো? একটা কান দিয়ে শোনা আর একটা কান দিয়ে বের করে দেওয়ার জন্যে।“
কাঁথায় জড়ানো মানুষটার মুখ থেকে ‘খক’ ‘খক’ করে নলি ছেঁড়া কাশি বেরিয়ে এল। হালেমা ওদিকে চোখ ঘোরাতেই,ছইয়ের চালার ফাঁক দিয়ে ভেসে এল একটা বিকট ‘ভু’ ‘ভু’ শব্দ! নুহু নৌকোর পাটাতন থেকে তিড়িং করে লাফ মেরে বলল, “হেলিকপ্টার! হেলিকপ্টার!” মতিও জিরাফের মতো গলা তুলে ফড়িঙের মতো দুই হাত বাড়িয়ে চিৎকার করে উঠল, “খাবার খাবার।“ নুহু এবার ওপরের দিকে হাত ছুড়ে ছুড়ে আরও জোরে চিৎকার করে উঠল, “খাবার খাবার, খাবার দিন, খাবার।“
হেলিকপ্টারটা ‘ভু’ ‘ভু’ করে ডেকে বনবন করে পাখা ঘুরিয়ে চক্কর কাটতে কাটতে নৌকোটা টপকাচ্ছে। হেলিকপ্টারটা তুলনামূলকভাবে কিছুটা উঁচুতেই। যে উচ্চতায় কপ্টারটা রয়েছে সেখান থেকে নৌকোটাকে একটা ছোট্ট ডিঙির মতো লাগবে। নুহু মতিরা আগে থেকেই জানে, আকাশে ওড়া হেলিকপ্টার থেকে ত্রাণের খাবার ছুড়ে ফেলে। রাষ্ট্রসংঘের হেলিকপ্টার এই নাফ নদীর ওপরের আকাশে উড়ে উড়ে নৌকোয় আটকে থাকা মানুষের উদ্দেশে শুকনো খাবার ছুড়ে ছুড়ে ফেলে। বাংলাদেশের বিভিন্ন শরণার্থীশিবিরেও হেলিকপ্টার থেকে খাবার ছুড়ে ফেলা হয়। ঘাড় কাত করে উপরের দিকে চেঁচিয়েই যাচ্ছে নুহু আর মতি। নিচ থেকে হেলিকপ্টারটাকে একবার একটা বড়ো ঘুড়ির মতো লাগছে। আরেকবার ছোট ঢেঁকির মতো লাগছে। পাখাগুলো এতটুকুও দেখা যাচ্ছে না। কিন্তু তার ব্লেড ঘোরার ‘সাঁ’ ‘সাঁ’ শব্দ কান ফুঁড়ে ঢুকছে। হেলিকপ্টারটার বুকের আঁকিবুঁকি দেখে মনে হচ্ছে, রাষ্ট্রসংঘেরই হেলিকপ্টার। অত চোখে না পড়লেও, আঁকিবুঁকির আন্দাজ সে কথায় বলছে।

আরও একটু মাথার উপরে আসতেই, হেলিকপ্টারটার লেজটার কাঠামো অনেকটাই দেখা গেল। নুহু এবার হাঙরের মতো ঝাঁপিয়ে পড়ল। এমন করে ওপরের দিকে হাত বাড়িয়ে ঝাঁপাতে লাগল, দেখে মনে হচ্ছে, হেলিকপ্টারটাকে হাত দিয়ে ধরে টেনে নামাবে। চিৎকার করে তার গলা ছিড়ে যাওয়ার উপক্রম হল। দুই ভাইয়ের চেঁচামেচি নদীর তলার পোকারা শুনতে পেলেও, হেলিকপ্টারটার কেউ শুনতে পেলেন না! স্বামী দেউরকে লাফানো ঝাপানো, চিল-চিৎকার করতে দেখে ছইয়ের ভেতর থেকে ধড়ফড় করে বেরিয়ে এল আরিফা। সে বুদ্ধি করে একটা লালরঙের কাপড়কে শূন্যে উড়িয়ে উড়িয়ে আগোলদারি হাঁক হাঁকতে লাগল। তার মিহি স্বর বাতাস ভেদ করে হেলিকপ্টারের ধাতব গায়ে ঠক্কর লাগলেও, হেলিকপ্টারের ভেতরের কোনো মানুষের কান ছুঁল না!

এবার হাঁটু ভাঁজ করে থড়বড় করে বেরিয়ে এলেন হালেমা। জড়ানো গলায় কাঁইকুঁই করে আকাশের দিকে গলা ছাড়লেন। চারজনের সমবেত হাঁক বাঘের গর্জনের মতো বাতাস ফুঁড়লেও হেলিকপ্টারের অন্দরের কোনো মানুষকে ছুঁতে পারল না! ‘ভু’ ‘ভু’ ‘গ’ ‘গ’ ‘সাঁ’ ‘সাঁ’ করতে করতে হেলিকপ্টারটা আকাশ ফুঁড়ে নয়াপাড়ার দিকে উড়ে গেল! নুহু মতিরা হাত নাড়িয়ে চেঁচাতে চেঁচাতে একসময় তাদের ডুকরানো কণ্ঠ মিহি করে থেমে এল। যেন পেটের ভেতরের সবটুকু চিৎকার বেরিয়ে খোল হয়ে গেল। গলার চিৎকার ফুরিয়ে এলে চোখ দিয়ে গলগল করে বেরোতে থাকল অশ্রু। ফুঁপিয়ে উঠল দু-ভাই। আরিফা তার গায়ে হাত দিতেই হাউমাউ করে উঠল মতি।

আরিফার চোখও ছলছল। পেটের ক্ষিদের টানে একপেট খাবার জোগাড় করার মরিয়া চেষ্টায় দুই মানুষের মধ্যে একটু আগে হওয়া খুটুরমুটুরটা এখন বাসি। বিপদ এভাবেই মানুষের সম্পর্কের মধ্যে যেমন চিড় ধরায়, ঠিক তেমনি চিড় ধরা সম্পর্ককে জোড়ও লাগায়। আসলে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে, তখন ছোটখাট ভুলত্রুটি, রাগ-অভিমান জল হয়ে একে অপরকে আঁকড়ে ধরে। ভালোবাসা আরও গাঢ় হয়। বন্ধন পোক্ত হয়ে ওঠে। সম্পর্কের সংজ্ঞা এখানেই জীবন্ত হয়ে ওঠে। প্রকৃত রূপ-রস পায়। দেহ নামক খোলের ভেতরে ভালোবাসার একতারা বাজায় বেঁচে থাকার টিকে থাকার নিখাদ প্রেম।

চলবে...
আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>
নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৪৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৪৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৪২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৪১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৪০

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৯

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৮

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৭

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৬

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৫

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩০

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৯

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৮

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৭

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৬

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৫

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২০

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১৯

এসএন

 

Header Ad

ইসরায়েলের তীব্র হামলার মুখে রাফা ছাড়ল ৮০ হাজারের বেশি মানুষ

ছবি: সংগৃহীত

গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফা শহরে এবার হামলা জোরদার করেছে ইসরায়েল। আর এরই জেরে শহরটি ছেড়ে ইতোমধ্যেই পালিয়ে গেছেন ৮০ হাজারেরও বেশি মানুষ। জাতিসংঘ এই তথ্য সামনে এনেছে।

ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে গাজার অন্যান্য অংশ থেকে তারা এখানে আশ্রয় নিয়েছিলেন। শুক্রবার (১০ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

খবরে বলা হয়েছে, রাফায় পূর্ণমাত্রার হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরাইল। সেখানে লাগাতার বোমাবর্ষণের ফলে আতঙ্কে শহর ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে অঞ্চলটিতে আশ্রয় নেয়া লোকজন। জাতিসংঘ বলছে, গত সোমবার থেকে এ পর্যন্ত ৮০ হাজারের বেশি মানুষ গাজার দক্ষিণের জনবহুল শহর রাফা থেকে পালিয়ে অন্যত্র চলে গেছে। বোমাবর্ষণের পাশাপাশি রাফার বিভিন্ন এলাকায় ইসরাইলি ট্যাংক জড়ো হচ্ছে। এতে সেখানে পূর্ণমাত্রার স্থল অভিযানের আশঙ্কার কথা জানিয়েছে বিবিসি।

অন্যদিকে রাফার পূর্বাঞ্চলে ইসরাইলি সেনাদের লক্ষ্য করে হামলা চালানোর কথা জানিয়েছে ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী যোদ্ধাগোষ্ঠী হামাস। আর ইসরাইল বলছে তারা সেখানে তাদের নির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জনে কার্যকলাপ পরিচালনা করছে।

গাজায় অনেক আগেই মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে ইসরাইল। এখন গাজাবাসীর শেষ আশ্রয়স্থল রাফায় হামলা জোরদার করার ঘোষণা দিয়েছে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। জাতিসংঘ বারবার সতর্ক করেছে রাফাকে অবরুদ্ধ করার ফলে সেখানে খাদ্য ও জ্বালানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের কাছাকাছি রয়েছে গাজাবাসী। জাতিসংঘের পাশাপাশি মার্কিন প্রশাসনও অস্ত্র সরবরাহ বন্ধের হুঁশিয়ারি দিয়েছে। তবুও রাফায় বর্বরতা চালানোর অঙ্গীকার করেছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।

টাঙ্গাইলে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ

ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ কর্মশালায় জেলা ও উপজেলার অতিথিবৃন্দ। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দ্বিতীয় ধাপে আগামী ২১ মে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এ উপলক্ষে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের দুই দিন ব্যাপি প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার (১০ মে) দিনব্যাপি ভূঞাপুর ইবরাহীম খাঁ সরকারি কলেজ হলরুমে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (ইটিআই)। প্রশিক্ষণ কর্মশালা ১১ মে সমাপ্তি হবে।

এ সময় প্রশিক্ষণ কর্মশালায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মামুনুর রশীদের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন- টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ও দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলা রিটার্নিং অফিসার জিয়াউল ইসলাম চৌধুরী।

এছাড়া বিশেষ অতিথি ছিলেন- টাঙ্গাইল জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মোহম্মদ মতিয়ুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আনোয়ার মাহমুদ, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফাহিমা বিনতে আখতার, ভূঞাপুর থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আহসান উল্লাহ্ প্রমুখ।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়- নির্বাচনের দিন ৭০ জন প্রিজাইডিং অফিসার, ৫১১ জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার এবং ১ হাজার ২৩ জন পোলিং অফিসার দায়িত্ব পালন করবেন। উপজেলায় ৬৭ টি কেন্দ্রে ব্যালট পেপারের মাধ্যমে আগামী ২১ মে নির্বাচন ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এদিন পর্যাপ্ত সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী নিয়োজিত থাকবে।

ভারতীয় নির্বাচনে কোনো হস্তক্ষেপ করছি না : যুক্তরাষ্ট্র

ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার জানিয়েছেন, আমরা ভারতীয় নির্বাচনে কোনো হস্তক্ষেপ করছি না। এমনকি আমরা পৃথিবীর কোনো নির্বাচনেই হস্তক্ষেপ করি না।

নিয়মিত প্রেস কনফারেন্সে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

ভারতের নির্বাচনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে হস্তক্ষেপের অভিযোগ তুলেছে রাশিয়া। তবে মস্কোর সেই অভিযোগকে উড়িয়েছে দিল ওয়াশিংটন।

এর আগে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অভিযোগ করে, ভারতে অনুষ্ঠিত লোকসভা নির্বাচনকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন ফেডারেল কমিশনের রিপোর্টে ধর্মীয় স্বাধীনতা লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে ভারতের সমালোচনা করার পর ওয়াশিংটেনের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করে মস্কো।

বুধবার রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় রাশিয়ার সংবাদমাধ্যম আরটি নিউজ জানায়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেছেন, ভারতের জাতীয় মানসিকতা এবং ইতিহাস সম্পর্কে বোঝার ক্ষমতা নেই যুক্তরাষ্ট্রের। আর তারা দেশটির ধর্মীয় স্বাধীনতার বিষয়ে ভিত্তিহীন অভিযোগ করে যাচ্ছে।

জাখারোভা এটাকে দেশ ও রাষ্ট্র হিসেবে ভারতের প্রতি ‘অসম্মানজনক’ বলে অভিহিত করেছেন।

সর্বশেষ সংবাদ

ইসরায়েলের তীব্র হামলার মুখে রাফা ছাড়ল ৮০ হাজারের বেশি মানুষ
টাঙ্গাইলে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ
ভারতীয় নির্বাচনে কোনো হস্তক্ষেপ করছি না : যুক্তরাষ্ট্র
বাবা হওয়ার খুশিতে আবারও বিয়ে করলেন জাস্টিন বিবার
জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের পূর্ণ সদস্যপদ ইস্যুতে ভোট আজ
মানিকগঞ্জে পাইলট আসিমের জানাজায় হাজারো মানুষের ঢল
দেশে দ্বিতীয় স্যাটেলাইট নির্মাণের কাজ চলছে: প্রধানমন্ত্রী
বুবলীর পর একই থানায় অপু বিশ্বাসের জিডি!
বিমান ঘাঁটিতে পাইলট আসিমের দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত
ইউরোপা লিগ: অপরাজিত থাকার রেকর্ড গড়ে ফাইনালে লেভারকুসেন
টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির সমাবেশ
প্রেমিক যুগলকে মারধরের পর গলায় জুতার মালা, ইউপি চেয়ারম্যান বরখাস্ত
বিদায় নিচ্ছেন পিটার হাস, নতুন রাষ্ট্রদূত হচ্ছেন ডেভিড মিল
চুক্তি ছাড়াই শেষ যুদ্ধবিরতি আলোচনা, রাফায় চলছে ইসরায়েল-হামাস লড়াই
কর্ণফুলী নদীর তলদেশ থেকে বিধ্বস্ত যুদ্ধবিমান উদ্ধার
রাফায় বড় অভিযান হলে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ: বাইডেন
বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীর বাসভবন এলাকায় লোডশেডিংয়ের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
নবাবগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ১৩ প্রার্থীর মনোনয়ন দাখিল
ভবিষ্যতে শতভাগ কানেক্টিভিটি তার ভূগর্ভে স্থাপন করা হবে: পলক