বৃহস্পতিবার, ২ মে ২০২৪ | ১৮ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

বিশেষ সাক্ষাৎকার 

‘আমি কাজকে ভালোবেসে কাজ করার চেষ্টা করছি’

ড. হাছান মাহমুদ। আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। চট্টগ্রাম-৭ আসন থেকে টানা তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। বেলজিয়াম লিম্বুর্গ ইউনিভার্সিটি সেন্ট্রাম, এনভায়রনেমন্টাল সায়েন্স: পরিবেশ রসায়নে পিএইচডি করা হাছান মাহমুদ এর আগে ২০০৯ থেকে ২০১৪ সাল মেয়াদে প্রথমে আওয়ামী লীগ সরকারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, পরে পরিবেশ ও বন মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৭ সালে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হওয়া এই নেতা পরবর্তী সময়ে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের চট্টগ্রাম ও জাতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। এখন সরকারের সবচেয়ে গুরুত্ত্বপূর্ণ তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন।

গত ২৩ নভেম্বর ঢাকাপ্রকাশ-কে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে ড. হাছান মাহমুদ কথা বলেছেন গত প্রায় চার বছরে তার মন্ত্রণালয়ের সফলতা, বিভিন্ন কর্মকাণ্ড, গণমাধ্যম, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, রাজনীতি, আগামী ১০ ডিসেম্বর বিএনপির সমাবেশসহ বিভিন্ন বিষয়ে। 

ঢাকাপ্রকাশ: আপনি দায়িত্ব নেওয়ার পর তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অনেক ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। কাজে গতি এসেছে। অনেক বিষয়ে অগ্রগতি হয়েছে। এ সম্পর্কে যদি আপনি কিছু বলেন।

ড. হাছান মাহমুদ: দেখুন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়ার পর আমি চেষ্টা করেছি আমার সমস্ত আন্তরিকতা দিয়ে মন্ত্রণালয়ের কাজে গতি আনার জন্য। একইসঙ্গে বহু বছরের ঝুলন্ত সমস্যাগুলো সমাধান করার জন্য। যেমন আমরা তিন দশক ধরে চেষ্টা করেছি বিটিভি ভারতবর্ষে প্রদর্শনের জন্য। কিন্তু সেই চেষ্টায় আমরা সফল হইনি। কিন্তু  প্রধানমন্ত্রী ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে আমাকে দায়িত্ব দেওয়ার পর সেপ্টেম্বর মাস থেকে ভারতে বিটিভি ফ্রি ডিসের মাধ্যমে সেখানে প্রদর্শিত হচ্ছে। সমগ্র ভারতবর্ষে। একই সঙ্গে বাংলাদেশ বেতারও সেখানে শোনা যাচ্ছে।

আপনারা জানেন যে, আগে টেলিভিশনগুলোতে কোনো সিরিয়াল ছিল না। কোনটার পর কোনটা, সেটা এলাকা ভেদে একেক রকম হতো। মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা দেওয়ার পরও সেটা হয়নি। কিন্তু আমি কঠোর হস্তে এটি কার্যকর করেছি। যেমন এখন সম্প্রচারের তারিখ অর্থাৎ যেই টেলিভিশন যেই সময় সম্প্রচার হচ্ছে সে অনুযায়ী একটা ক্রম নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে এবং সেই ক্রম অনুযায়ী সারা দেশে টেলিভিশনগুলো প্রদর্শিত হচ্ছে। সেই ক্রম আগে-পিছে করার জন্য ক্যাবল অপারেটরদের সঙ্গে অনেক ধরনের অনিয়ম করতে হতো টেলিভিশন মালিকদেরকে। সেটি এখন বন্ধ হয়েছে।

আপনারা জানেন যে, বাংলাদেশে বিদেশি চ্যানেলগুলো…দেশে আইন আছে। সেই আইন অনুযায়ী বাংলাদেশে কোনো বিদেশি চ্যানেল বিজ্ঞাপন প্রদর্শিত করতে পারে না। একই আইন ভারত, পাকিস্তানসহ অন্যান্য দেশে আছে, ইউরোপ, আমেরিকায় আছে। সেখানে বিদেশি চ্যানেলে কোনো রকম বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করতে পারে না। আমাদের দেশে এই আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করা হচ্ছিল। আমরা গত বছর থেকে সে আইন কঠোরভাবে কার্যকর করেছি। এখন শুধুমাত্র সেই সমস্ত বিদেশি চ্যানেলই বাংলাদেশে সম্প্রচারিত হয় যারা বিজ্ঞাপনহীন ক্লিনফিড পাঠায়। এটা একটা বড় অগ্রগতি এবং এটি না করার জন্য বহু শক্তিশালী মহল এটার পিছনে যুক্ত ছিল। কিন্তু আমরা কোনো মহলের কাছে নতিস্বীকার করিনি। সেটি কার্যকর করা হয়েছে। একইসঙ্গে আমরা সম্প্রচার মাধ্যমকে ডিজিটালাইজড করার কাজ করছি। এরই মধ্যে বাংলাদেশ ডিজিটাইলাইজড হয়ে গেলেও বাংলাদেশের সম্প্রচার মাধ্যম ডিজিটালাইজড হয়নি। আমরা এটা নিয়ে কাজ করছি এবং বহুদূর এগিয়েছি। হাইকোর্টে একটা মামলা হওয়ার কারণে সেটা কিছুটা পিছিয়ে গেছে। আমরা আশা করছি সেই মামলাটা নিষ্পত্তি করে আমরা এটিও কার্যকর করতে সক্ষম হব।

এ ছাড়া, আপানার জানেন যে, আমাদের পিআইডি দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে। সেখানে আধুনিক যুগের সঙ্গে সমন্বয় করে যে কাজ সেটির জন্য পিআইডিকে সেভাবে ঢেলে সাজানো হয়নি। আমরা সেটিকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছি। আপনারা দেখতে পাবেন যে, কিছুদিন পর পিআইডি আগের তুলনায় আরও অনেক বেশি কার্যকরিভাবে কাজ করছে। এখন আগের তুলনায় ভালো করছে।   

আরও নানা ধরনের পদক্ষেপ আমরা নিয়েছি। চলচ্চিত্র শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্ট করেছি। সেটি চলচ্চিত্র শিল্পীদের বহু বছরের দাবি ছিল। কিন্তু কার্যকর হয়নি। সেটি আমরা করেছি। সংসদে আইন পাস হয়েছে। শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্ট গঠিত হয়েছে। এই ট্রাস্টের মাধ্যমে টেলিভিশন শিল্পীরাও যাতে সেখান থেকে সহায়তা পেতে পারে সেই ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। এভাবে বহু কাজ করা হয়েছে। আমাদের পিআইবি থেকে শুরু করে অন্য যেসব প্রতিষ্ঠান আছে সেগুলোকে গতিশীল করা হয়েছে। আপনারা জানেন যে, আমাদের চলচ্চিত্র অনেকটা মুখ থুবড়ে পড়েছিল বলা যায়। আমাদের সিনেমা হলের সংখ্যা ১০০ তে নেমে এসেছিল। এখন সেখানে এই করোনা মহামারির মধ্যেও গত কয়েক মাসে আরও ২০০ এর বেশি সিনেমা হল চালু হয়েছে। আগামী ছয় মাস, এক বছরের মধ্যে আরও বহু সিনেমা হল চালু হবে। ইতিমধ্যে মধ্যবিত্তরা হলে ফিরে এসেছেন। বহু সিনেমা তারমধ্যে কিছু অনুদানের সিনেমা আছে। বহু সিনেমা বক্স অফিস হিট করেছে। মানুষ সিনেমা দেখতে যাচ্ছে। এটি বিরাট একটা পরিবর্তন। আমরা করতে পেরেছি। করোনা মহামারি না থাকলে আরও অনেক কিছু করা আমাদের পক্ষে সম্ভব হতো।

প্রশ্ন হচ্ছে এগুলো কীভাবে সম্ভব হলো? প্রথম হচ্ছে আপনি যখনই আমাকে কোনো কাজ দেন না কেন আমি সেটি মনপ্রাণ দিয়ে করার চেষ্টা করি। আমাকে যখন প্রধানমন্ত্রী পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়েছিলেন তখনো আমি আমার সমস্ত সততা ও আন্তরিকতা দিয়ে করার করার চেষ্টা করেছি। এখানেও আমি সেই চেষ্টা করে যাচ্ছি। প্রথমত কাজকে ভালোবাসতে হয়। কাজকে যদি ভালো না বাসে কেউ তাহলে পারফর্ম করতে পারে না। প্রধানমন্ত্রী আমাকে এ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়ার পর প্রথমে আমি কাজকে ভালোবাসতে চেষ্টা করেছি এবং সেই অনুযায়ী কাজ করার চেষ্টা করে যাচ্ছি।

ঢাকাপ্রকাশ: অনলাইন গণমাধ্যম নিয়ে আপনার ভাবনা কী? দেশে এখন অনেক অনলাইন। যদিও অনলাইন অনুমোদন দেওয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে। তারপরও দেখা যাচ্ছে ঘরে ঘরে অনলাইন। এসব অনলাইন অনেক সময় বুমেরাং হয়ে দেখা দেয়। দেখা গেল গুজব ছড়িয়ে দিচ্ছে, ভুয়া রিপোর্ট দিচ্ছে, ব্যক্তি বিশেষের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছে। এ নিয়ে আপনাদের ভাবনা কী?

ড. হাছান মাহমুদ: দেশের অনলাইন গণমাধ্যমকে একটা সিস্টেমের মধ্যে নিয়ে আসার জন্য রেজিস্ট্রেশনের ব্যবস্থা করেছি। অনেকগুলো অনলাইনকে রেজিস্ট্রেশন দেওয়া হয়েছে, অনেকগুলো অনলাইনকে বন্ধও করা হয়েছে। অনলাইন রেজিস্ট্রেশন দেওয়া যেমন একটা চলমান প্রক্রিয়া। বন্ধ করাটাও একটা চলমান প্রক্রিয়া। কিন্তু যেভাবে ব্যাঙের ছাতার মতো অনলাইন, আসলে এত অনলাইনের তো প্রয়োজন নেই। অনেকেই অসৎ উদ্দেশে এ সমস্ত অনলাইন চালু করে এবং সেটার অফিস নেই ঠিকমত। ঘরের মধ্যে থেকে করে। আমরা সেগুলো আইডেন্টিফাই করার চেষ্টা করছি এবং আইডেন্টিফাই করার পর ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

ঢাকাপ্রকাশ: ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে এখনো নানা আলোচনা-সমালোচনা অব্যাহত আছে। বিভিন্ন সভা-সেমিনারেও আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। এটি সংশোধন, পরিবর্তন, পরিমার্জনের কোনো চিন্তাভাবনা কি সরকারের আছে?

ড. হাছান মাহমুদ: দেখুন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি হচ্ছে বাংলাদেশের মানুষকে ডিজিটাল সিকিরিউটি দেওয়ার জন্য। এটি একজন সাংবাদিককে সিকিউরিটি দেওয়ার জন্য, একজন গৃহিণীকে ডিজিটাল নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য। একজন চাকরিজীবীকে, কৃষককে, একজন ছাত্রকে, একজন মহিলাকে, একজন তরুণীকে ডিজিটাল নিরাপত্তা দেওয়ার জন্যই ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট। এই আইনের সাহায্য নিয়ে বহু সাংবাদিকও মামলা করেছেন এবং প্রতিকার পেয়েছেন। এই আইনের সাহায্য নিয়ে বহু সাধারণ মানুষ মামলা করেছেন। এটি কোনো বিশেষ ব্যক্তি-গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নয়। সাধারণ মানুষের কল্যাণের জন্য এ আইন।  

দেশ যখন ডিজিটাল ছিল না, তখন এই আইনেরও কোনো প্রয়োজন ছিল না। দেশ যখন ডিজিটাল হয়ে গেছে সুতরাং তখন ডিজিটাল নিরাপত্তা দিতে হবে। ডিজিটালি যখন কোনো গুজব ছড়ানো হয় সেটির বিরুদ্ধে কোনো আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে? সেটির জন্য তো একটা আইন দরকার। সেই আইনটিই হচ্ছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন। যখন একজন মানুষের চরিত্র হনন করা হয় অনলাইন বা স্যোশাল মিডিয়াতে তখন এর বিরুদ্ধে কীভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেজন্য তো একটা আইন দরকার। সে জন্যই ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন।

একজন মহিলার বিরুদ্ধে চরিত্র হননমূলক অপপ্রচার চালানো হয়, একজন সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে নানা ধরনের  অপপ্রচার চালানো হয়, একজন জীবন্ত মানুষকে স্যোশাল মিডিয়ায় মেরে ফেলা হয়, গুজব রটানো হয়। সেগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তো একটা আইন দরকার। সেই আইনটিই হচ্ছে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট। তো এ আইন সবার জন্য। এই আইনের যাতে অপব্যবহার না হয়, এ আইন দ্বারা যাতে সাংবাদিকদের কোনোরকম হয়রানি না করা হয় সে নিয়েও আমরা সচেষ্ট আছি। এখন দেখতে পাচ্ছেন নিশ্চয়ই সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সহজেই ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে মামলা করা যায় না।

ঢাকাপ্রকাশ: আগামী ১০ ডিসেম্বর বিএনপি ঢাকাতে একটা সমাবেশের ডাক দিয়েছে। এর মধ্যে তারা দেশের সকল বিভাগীয় শহরে সমাবেশ করছে এবং করেছে। তারা বলছে যে, আগামী ১০ ডিসেম্বর চূড়ান্তভাবে সরকার পতনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হিসেবে বিষযটিকে আপনি কীভাবে দেখেন?

ড. হাছান মাহমুদ: দেখুন নির্বাচন ঘনিয়ে এসেছে তো। বিএনপি মুখে যাই বলুক তারা নির্বাচনে যাবেন, তারা দলকে চাঙ্গা করার জন্য এগুলো করছে। তারা চট্টগ্রামে সমাবেশের ডাক দিয়ে বলেছিল ১০ লাখ মানুষের সমাবেশ করবে। সেখানে এক লাখ পুরাতে পারে নাই। সুতরাং ঢাকা শহরে কী হবে সেটা আমরা বুঝি। খালি কলসি বাজার মতো বাজছে। বা বর্ষাকালে ব্যাঙ ডাকার মতো। বর্ষাকালের ব্যাঙ কিন্তু খুব ছোট, আওয়াজটা অনেক বড়। তো ওদের আওয়াজ হচ্ছে খালি কলসি বেশি বাজার মতো আর বর্ষাকালে ব্যাঙের ডাকার মতো।

ঢাকাপ্রকাশ: বিরোধী দল যদি আন্দোলনের যায়, আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে সরকার পতনের দিকে যায়, সেক্ষেত্রে সরকারের ভাবনাটা কী? তাদের কীভাবে মোকবাবিলা করবেন? আর রাজনৈতিক দল হিসেবেও আওয়ামী লীগ কীভাবে মোকাবিলা করবে?

ড. হাছান মাহমুদ: দেখুন, উনারা তো আন্দোলনে আছেন। ২০১৩,১৪ ও ১৫ সালে উনাদের আন্দোলনের নমুনা দেখেছি। উনারা সবসময় আন্দোলনে আছেন। উনাদের মোকাবিলা করেই এগিয়ে যাচ্ছি। দেশের জনগণ আমাদেরকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তিনবার সরকার গঠন করার সুযোগ করে দিয়েছে। তো উনাদের এবারকার আন্দোলনে আমাদের একটা লাভ হয়েছে। এবারকার আন্দোলনের প্রেক্ষিতে, উনারা সাম্প্রতিক যে সমাবেশগুলো করছে এতে দেখতে পাচ্ছেন আমাদের সমাবেশগুলোও আগের চেয়ে অনেক বড় হচ্ছে। আমাদের কর্মীরাও চাঙ্গা হয়েছেন। এটুকু লাভ আমাদের হয়েছে।

ঢাকাপ্রকাশ: গত দুটি জাতীয় নির্বাচন নিয়ে নানাপ্রশ্ন আছে দেশের ভেতরে-বাইরে। বিএনপি ইতিমধ্যে বিদেশিদের দারস্থ হয়েছে। বিদেশি কূটনীতিকরাও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গিয়ে আগামী নির্বাচন নিয়ে নানা কথা বলছেন এবং তারা বলছেন, একটা সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য, সব দলের অংশগ্রহণে একটা নির্বাচন চান তারা। বিষয়টি বিশেষ করে বিদেশি কূটনীতিকদের বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে নাক গলানোর বিষয়টিকে কীভাবে দেখছেন?

ড. হাছান মাহমুদ: প্রথমত কূটনৈতিক শিষ্টাচার বলে একটা কথা আছে। তো আমরা সব সময় বলে আসছি কূটনৈতিক শিষ্টাচার বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের বা বিদেশি দূতাবাসের যারা বাংলাদেশে পোস্টিং নিয়ে আসেন তাদের এটি অনুসরণ করা উচিত। কিন্তু বিষয়টা হচ্ছে তাদের চেয়েও বেশি দোষী হচ্ছে বিএনপি। বিদেশি কূটনীতিকরা এই নাক গলানোর সুযোগ কখনোই পেত না যদি বিএনপি বা অন্যান্য দল গিয়ে কূটনীতিকদের দুয়ারে ধরনা না দিত। বিএনপি তো জনগণের কাছে না গিয়ে বিদেশি কূটনীতিকদের কাছেই বেশি যায়। যে কারণে বিদেশি কূটনীতিকদের তারা উৎসাহিত করে। উদ্বুদ্ধ করে এ বিষয়ে কিছু বলার জন্য, কিংবা নাক গলানোর জন্য। তবে কূটনৈতিক শিষ্টাচার লঙ্ঘন করে কারও কিছু করা উচিত নয়।

ঢাকাপ্রকাশ: আগামী ডিসেম্বরে আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিল। এই কাউন্সিলে আওয়ামী লীগে নতুন নেতৃত্ব বিশেষ সাধারণ সম্পাদক পদে কোনো পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা কি আছে?

ড. হাছান মাহমুদ: দেখুন সেটা প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাই নির্ধারণ করবেন। কাউন্সিলারদের মতামতের প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনাই এ বিঢয়টি ঠিক করবেন। এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারব না।

ঢাকাপ্রকাশ: জাতীয় নির্বাচনের আর মাত্র এক বছর বাকি। দেশে প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইনসহ প্রচুর গণমাধ্যম রয়েছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে গণমাধ্যমের প্রতি আপনার কোনো পরামর্শ…

ড. হাছান মাহমুদ: প্রথমত হচ্ছে গণমাধ্যম সমাজের দর্পণ। আমি গণমাধ্যমে কাছে যেটি প্রত্যাশা করব, অনেক সময় দেখা যায় যে কিছু কিছু গণমাধ্যম, কিছু কিছু পত্রিকা এবং দু’একটি টেলিভিশনে বিরোধী দলের ছোট সমাবেশকে বড় করে দেখানোর একটা টেনডেন্সি আছে। আবার সরকারি দলের, আওয়ামী লীগের বড় সমাবেশকে ঠিক সেভাবে কভারেজ দেওয়া হয় না। এগুলো কিন্তু সঠিক নয়। এভাবে করা সমীচীন নয়। সাদাকে সাদা বলতে হবে, কালোকে কালো বলতে হবে। যেই সমাবেশ যতটুকু প্রচার পাওয়া দরকার ততটুকু প্রচার দিতে হবে। আবার কিছু কিছু গণমাধ্যম দেখা যায় যে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হয়ে যায়। গণমাধ্যম রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হওয়া সমীচীন নয়।

আমি গণমাধ্যমের কাছে সবিনয়ে যেটি নিবেদন রাখব সেটি হচ্ছে গণমাধ্যম সমাজের দর্পণ হিসেবে কাজ করবে। সরকারি দল হোক আর বিরোধী দল হোক যেটুকু প্রচার পাওয়া দরকার সেটিই করবে। সেখানে কাউকে ফুলিয়ে ফাঁফিয়ে দেখানোর টেনডেন্সিটা পরিহার করুন। একইসঙ্গে কোনো নেতিবাচক খবর থাকলে কোনো কোনো গণমাধ্যমে সেটি ফলাও করে প্রচার হয়। কিন্তু ইতিবাচক সংবাদটা সেভাবে প্রচার পায় না। এটিও ঠিক নয়। অবশ্যই নেতিবাচক সংবাদ পরিবেশিত হবে। একইসঙ্গে জাতির যে অর্জন, আজকে দেশটা যে বদলে গেল, স্বল্প উন্নত দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশ হলো এবং দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হলো, আজকে পৃথিবী যে দেশের প্রশংসা করছে সে বিষয়গুলো গণমাধ্যমে প্রচার হওয়া দরকার। আমরা যখন মাথাপিছু আয়ে ভারতকে ছাড়িয়ে গেলাম তখন ভারতের পত্রপত্রিকায় যেভাবে প্রচার পেয়েছে, যেভাবে শোরগোল হয়েছে আমাদের দেশে সেভাবে হয়নি। যেটি আমাকে খুব অবাক করেছে।

ঢাকাপ্রকাশ: দীর্ঘ সময় দেওয়ার জন্য ঢাকাপ্রকাশ-এর পক্ষ থেকে আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

ড. হাছান মাহমুদ: ঢাকাপ্রকাশ-কেও ধন্যবাদ।

এমএমএ/
 

Header Ad

বেঁকে যাওয়া রেললাইনে কচুরিপানা থেরাপি

ছবি: সংগৃহীত

তীব্র তাপদাহে গাজীপুরে বেঁকে যাওয়া রেলপথ মেরামতে কচুরিপানা, কাঁদা ও পানি থেরাপি প্রয়োগ করা হয়েছে। বাংলাদেশ রেলওয়ে ইস্ট বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী মোঃ আবু জাফর বলেছেন, সোমবার দুপুরে তীব্র তাপদাহে গাজীপুরের কালীগঞ্জে আড়িখোলা এলাকায় প্রায় ১৫ফুট পরিমাণ রেলপথ বেঁকে যায়।

এতে ওই পথে ট্রেন চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়। পরে মেরামত করে প্রায় এক ঘন্টা পর আবার ট্রেন চলাচল শুরু করে।

তিনি বলেন, রেলপথে তাপমাত্রা ৫০ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড বা তার উপরে উঠলে রেলপথ বেঁকে যাওয়ার সম্ভবনা দেখা দেয়। সেদিন সেখানকার রেললাইনে তাপমাত্রা ৫৫ডিগ্রি'র মতো ছিল। তাই ঢাকা-নরসিংদী রেলরুটের কালীগঞ্জ উপজেলার আড়িখোলা এলাকায় রেল লাইন বেঁকে যায়।

এ ধরনের বেঁকে যাওয়া রেলপথ ঠিক করতে প্রথমেই রেলপথ ঠান্ডা করা দরকার হয়। একাজে ব্যবহারে সেখানে বরফ না পাওয়ায় বিকল্প হিসেবে জলাশয় থেকে কচুরিপানা, কাঁদা ও ঠান্ডা পানি ব্যবহার করা হয়েছে। কারণ কচুরিপানা বা কাঁদা দীর্ঘ সময় পানি/ঠান্ডা অবস্থা ধারণ করে রাখতে পারে। গাজীপুরেও ওইসব প্রয়োগ করে সুফল পাওয়া গেছে।

উচ্চতাপ থাকা অবস্থায় রেললাইন চাপ প্রয়োগ করলে তা আরো বেঁকে যাওয়ার সম্ভবনা থাকে। আর রেল লাইন ঠান্ডা হলে তা অনেকটাই আগের অবস্থায় চলে যায়। পরে প্রয়োজন হলে চাপ প্রয়োগ করে বাকি অংশ ঠিক করা সম্ভব হয়। উচ্চ তাপমাত্রা থেকে তাপমাত্রা ৩০/৩২ ডিগ্রিতে নেমে আসার পর চাপ প্রয়োগ করা হয়। গাজীপুরেও এ থেরাপি প্রয়োগ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেল রুটের আড়িখোলা স্টেশনের অদূরে (পশ্চিম দিকে) চুয়ারিয়াখোলা এলাকার কাজী বাড়ি নামকস্থানের রেললাইন বেঁকে যায়। বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আড়িখোলা রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার দিলীপ চন্দ্র দাস।

স্টেশন মাস্টার দিলীপ চন্দ্র দাস বলেন, তীব্র গরমে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেল রুটের আড়িখোলা স্টেশনের অদূরে (পশ্চিম দিকে) চুয়ারিয়াখোলা এলাকার কাজী বাড়ি নামকস্থানে অন্তত ১৫ ফুট রেললাইন বেঁকে যায়।

বিষয়টি জানার পর রেলওয়ে প্রকৌশলীদের পরামর্শে রেলপথে পানি, কচুরিপানা ও কাঁদা মাটি দিয়ে বেঁকে যাওয়া অংশের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে তা মেরামত করা হয়। মেরামতের পর দুটি ট্রেন ঘটনাস্থল দিয়ে ধীর গতিতে গন্তব্যে চলে গেছে। ডাবল লাইনের অন্য লাইন দিয়ে রেল চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

আড়িখোলা রেলওয়ে স্টেশনের অধীনে কর্মরত কি-ম্যান (দড়িপাড়া-বড়নগর) মো. বাদশা মিয়া বলেন, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী চট্টলা এক্সপ্রেস ট্রেনটি আড়িখোলা রেলওয়ে স্টেশন অতিক্রম করে। পরে আড়িখোলা-পূবাইল স্টেশনের মাঝখানে চুয়ারিয়াখোলা এলাকার কাজী বাড়ি নামকস্থানে টহলরত রেলওয়ে কর্মচারীরা রেলপথ বাঁকা দেখতে পান। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানালে, তারা দ্রুত ব্যবস্থা নেন। এসময় সিলেট থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী কালনী এক্সপ্রেস ট্রেনটি আড়িখোলা রেলওয়ে স্ট্রেশনে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়।

তিনি আরও বলেন, পানি, কচুরিপানা ও কাঁদা মাটি দিয়ে বেঁকে যাওয়া অংশের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা হয়। এর এক ঘণ্টা পর ওই ট্রেনটি ধীর গতিতে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। বিকেল ৪টার দিকে তিতাস কমিউটার নামের আরও একটি ট্রেন ধীর গতিতে বেঁকে যাওয়া স্থান অতিক্রম করে।

এবারের আইপিএলে কি আউট হবেন না ধোনি?

ছবি: সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বিদায় নিয়েছেন সেই ২০১৯ বিশ্বকাপ খেলেই। বয়সটাও এখন ৪৩ ছুঁই ছুঁই। ব্যাট হাতে দেখা যায় শুধু আইপিএলে চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে। প্রতিবার দলের নেতৃত্বে থাকলেও এবার চেন্নাইকে নেতৃত্বও দিচ্ছেন না, দায়িত্ব তুলে দিয়েছেন রুতুরাজ গায়কোয়াড়ের হাতে। ব্যাটসম্যান হিসেবেও নিজের ভূমিকা বদলেছেন। উইকেটে আসেন হাতে গোনা কিছু বল বাকি থাকতে। এসেই ঝড় তোলেন।

যখনই ক্রিজে আসেন, চার-ছক্কা মেরে রানের গতি বাড়িয়ে দেন। এই নতুন ভূমিকাতেও মহেন্দ্র সিং ধোনি পুরোপুরি সফল। মজার ব্যাপার হলো, এমন ‘হাইরিস্ক গেম’ খেলেও ধোনি এবারের আইপিএলে এখন পর্যন্ত আউট হননি।

ধোনি এবারের আইপিএলে এখন পর্যন্ত ম্যাচ খেলেছেন ৯টি, ব্যাটিং করেছেন ৭ ইনিংসে। ৭ ইনিংস ব্যাট করে খুব বেশি বল খেলেননি—৩৭টি। এই ৩৭ বলে রান করেছেন ৯৬, স্ট্রাইকরেট—২৫৯.৪৫। ছক্কা মেরেছেন ৮টি, চার ৯টি। বল খেলার সংখ্যাটা অবশ্যই খুব বেশি নয়। তবে মনে রাখতে হবে ধোনি এই ৩৭ বলের প্রায় প্রতিটিতেই খেলেছেন বাউন্ডারির জন্য। সে ক্ষেত্রে আউট হওয়ার ঝুঁকি থাকে আরও বেশি।

ধোনি কয়েকটি বলের জন্য ক্রিজে এসে ম্যাচের পার্থক্য গড়ে দিয়েছেন, এমন উদাহরণও আছে। এই যেমন গত ১৪ এপ্রিল ‘আইপিএল ক্লাসিকো’য় মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের বিপক্ষে।

ইনিংসের ২০তম ওভারে উইকেট এসে ৪ বলে ৩ ছক্কায় করেন ২০ রান। সেই ম্যাচটি চেন্নাই শেষ পর্যন্ত ২০ রানেই জেতে। এরপরের ম্যাচেই লক্ষ্ণৌর বিপক্ষে করেন ৯ বলে ২৮ রান।

সেদিন অবশ্য ম্যাচটি জিততে পারেনি চেন্নাই। তবে ম্যাচের শেষ ওভারে যেভাবে ১০১ মিটারের ছক্কা মেরেছিলেন ধোনি, তাতে তাঁর বয়সটা আসলেই ৪২ কি না, তা নিয়ে অনেকের মনেই সন্দেহ জেগেছিল! ধোনি এরপর আরও দুই ম্যাচে ব্যাটিং করেছেন। এই ২ ম্যাচ মিলিয়ে খেলার সুযোগ হয়েছে মাত্র ৩ বল, তাতেই দুটি চার মেরেছেন।

গত মৌসুম থেকেই মূলত ধোনি চেন্নাইয়ের ইনিংসের একদম শেষভাগে ব্যাটিংয়ে নামতে শুরু করেন। গত আইপিএলে ১২ ইনিংসে বল খেলেছিলেন মাত্র ৫৭টি, রান করেছিলেন ১০৪। এবারও নিশ্চয় আরও কিছু বল খেলবেন ধোনি।

ফিনিশার হিসেবে ধোনি এমনিতেই কিংবদন্তি। তবে তাঁর ম্যাচ শেষ করার নিজস্ব একটা ধরন ছিল। শুরুতে কিছু সময় নিতে পছন্দ করতেন। এরপর শেষে গিয়ে সেটা পুষিয়ে দিতেন। তবে এখন ধোনি জানেন, সেই সুযোগটা তিনি পাবেন না। শরীরটাও হয়তো সায় দেবে না। তাই নতুন ভূমিকা বেছে নিয়েছেন। আর কীভাবে সেই ভূমিকায় সফল হতে হয়, সেটার প্রমাণ তো ম্যাচের পর ম্যাচ করেই যাচ্ছেন।

 

বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরও বিস্তৃত করতে আগ্রহী যুক্তরাষ্ট্র

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের সঙ্গে চলমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও বিস্তৃত করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের প্রধান পাঁচ ক্ষেত্রে উন্নয়ন এবং সহযোগিতার পাশাপাশি এর বাইরে কোনো বিষয়ে আগ্রহী কিনা-মতামত জানতে চেয়েছে ওয়াশিংটন।

তারই পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) ঢাকায় অতিরিক্ত পররাষ্ট্রসচিব (দ্বিপাক্ষিক-পূর্ব ও পশ্চিম) ড. মো. নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা হয়। সভায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক কীভাবে আরও বাড়ানো যায়, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

সভায় অংশ নেওয়া একাধিক কর্মকর্তা জানান, সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের পাঁচটি প্রধান ক্ষেত্রে উন্নয়ন এবং সহযোগিতা সম্প্রসারণে দুই দেশের চলমান অংশীদারিত্বের আরও ব্যাপ্ত করার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহের পাঁচটি ক্ষেত্র এবং এর বাইরে বাংলাদেশ সরকারের আগ্রহের ক্ষেত্রগুলো নিয়ে মতামত জানতে তারা (যুক্তরাষ্ট্র) অনুরোধ করেছে।

ঢাকার এক দায়িত্বশীল কূটনীতিক বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রধানমন্ত্রীকে যে চিঠি লিখেছেন, সেখানে বলা আছে, দেশটির কোন কোন খাতে আমাদের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমরা যে বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করতাম, সেগুলোর ব্যাপ্তি আরও কীভাবে বাড়ানো যায় তা আলোচনা হয়েছে। এটা আসলে নতুন কিছু না। আমাদের যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যেসব এনগেজমেন্ট আছে সেগুলো কোন পর্যায়ে রয়েছে বা নতুন করে কোনো বিষয়ে অগ্রাধিকার দেওয়ার প্রয়োজন আছে কিনা—সেগুলো আমরা আলোচনা করি বা কোনো কনসার্ন থাকলে সেটা নিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে জানানো।

যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহের পাঁচটি খাত সম্পর্কে এ কূটনীতিক বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যে বিষয়গুলোতে গুরুত্ব দিচ্ছে, তার মধ্যে একটি অর্থনৈতিক যোগাযোগ বাড়ানো, পরিবেশগত সুরক্ষা বা জলবায়ু পরিবর্তন; এক্ষেত্রে প্রযুক্তি হস্তান্তর বা বিনিয়োগের বিষয় রয়েছে। তৃতীয়ত, নিরাপত্তা সহযোগিতা—এটার মধ্যে এন্টি টেরোরিজম অ্যাসিসটেন্ট রয়েছে; পুলিশ-র‌্যাবের তহবিল রয়েছে, সমুদ্র নিরাপত্তার সংক্রান্ত অংশীদারত্ব ইস্যু রয়েছে। তারপর মানবিক সহায়তা বিষয় রয়েছে, যা মধ্যে রোহিঙ্গাদের সহায়তার বিষয় যুক্ত। এছাড়া রাইটস ইস্যুস আছে; এর মধ্যে মানবাধিকার, গণতন্ত্র বা লেবার রাইটস ইস্যু আছে।

বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বেশ সরব অবস্থানে ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ভোট শেষে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে ওয়াশিংটন জানায়, নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি। পরবর্তী সময়ে ভোট নিয়ে নিজেদের অনঢ় অবস্থানের জানান দিলেও বাইডেন প্রশাসন বাংলাদেশের নতুন সরকারের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশের কথা জানান খোদ ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির ‘আলোচিত’ রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। সঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্রও বিভিন্ন সময়ে সংবাদ সম্মেলনে একই বার্তা দেন।

তবে বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লেখা মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের চিঠিতে। চিঠিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক লক্ষ্য অর্জনে একসঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী তার সরকার।

ফেব্রুয়ারির শুরুতে বাইডেনের চিঠির পর ওই মাসের শেষের দিকে ঢাকা সফর করেন তার (মার্কিন প্রেসিডেন্টের) বিশেষ সহকারী ও দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক জ্যেষ্ঠ পরিচালক এইলিন লাউবাখেরের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল। ওই প্রতিনিধিদলে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা-ইউএসএআইডির সহকারী প্রশাসক মাইকেল শিফার এবং যুক্তরাষ্ট্রের উপ-সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আফরিন আখতার ছিলেন। আওয়ামী লীগের টানা চতুর্থ মেয়াদে সরকার গঠনের পর এটি যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ পর্যায়ের প্রথম সফর ছিল।

ওই সফরে এইলিন লাউবাখেরের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। বৈঠক শেষে ড. হাছান জানিয়েছিলেন, তারাও (যুক্তরাষ্ট্র) চায় বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের নতুন অধ্যায় এবং আমরাও চাই একটি নতুন সম্পর্ক। যেহেতু দুদেশেরই সদিচ্ছা আছে, সুতরাং এই সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ, গভীরতর ও উন্নয়নের মাধ্যমে আমাদের উভয় দেশ উপকৃত হবে।

অন্যদিকে, বাইডেনের বিশেষ সহকারী জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে মার্কিন প্রতিনিধিদল ঢাকা সফর করছেন।

বাইডেনের সেই চিঠির প্রতিউত্তরের একটি কপি এইলিন লাউবাখেরের নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধিদলের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছিল। এছাড়া ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান হোয়াইট হাউজে ওই চিঠির মূল কপি পৌঁছে দেওয়ার কথা ছিল।

মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে বাংলাদেশের জনগণকে অভিনন্দন জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। এক বিবৃতিতে ব্লিঙ্কেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আগামী দিনে দুই দেশের মধ্যকার অংশীদারত্ব এবং দুই দেশের নাগরিকদের সম্পর্ক আরও জোরদারের প্রত্যাশা করে।

সবশেষ, চলতি মাসে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি কার্যালয়ের (ইউএসটিআর) দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী ব্রেন্ডান লিঞ্চের নেতৃত্ব এক‌টি প্রতি‌নি‌ধিদল নিয়ে ঢাকা সফর করে গেছেন।

মেজর জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) এবং সাবেক রাষ্ট্রদূত মো শহীদুল হক বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল বাস্তবাস্তয়নে যে সব রাষ্ট্রের সমর্থন প্রয়োজন সেসব রাষ্ট্রসমূহের সমর্থন আদায়ে কাজ করছে তারা। ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল যুক্তরাষ্ট্রের কাছে খুবই সিরিয়াস বিষয়। এই কৌশলে এবং একইসঙ্গে চীনকে প্রতিহত করতে বাংলাদেশকে নিবিড়ভাবে পেতে চায় যুক্তরাষ্ট্র।

গত বছরের (২০২৩) মে মাসে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের জন্য নতুন ভিসানীতি ঘোষণা করা হয়। সেখানে বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন নিশ্চিতে দেশটির অব্যাহত নজরদারির কথা বলা হয়। পরবর্তী সময়ে অব্যাহতভাবে দেশটি নির্বাচন ইস্যুতে বাংলাদেশকে বিভিন্ন ধরনের চাপ প্রয়োগ করতে দেখা গেছে।

৭ জানুয়ারির ভোটে ২২৩টি আসনে জিতে টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করেছে আওয়ামী লীগ।

গত ১৭ জানুয়ারি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে প্রথম সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। সেদিন তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের পারস্পরিক স্বার্থকে এগিয়ে নিতে আগামী মাসগুলোতে আরও নিবিড়ভাবে কাজ করার প্রতীক্ষায় আছি।

সর্বশেষ সংবাদ

বেঁকে যাওয়া রেললাইনে কচুরিপানা থেরাপি
এবারের আইপিএলে কি আউট হবেন না ধোনি?
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরও বিস্তৃত করতে আগ্রহী যুক্তরাষ্ট্র
মানুষ আজ ন্যূনতম অধিকার থেকেও বঞ্চিত: মির্জা ফখরুল
মিল্টন সমাদ্দার গ্রেপ্তার
নওগাঁয় মাঠে ধান কাটতে গিয়ে গরমে কৃষকের মৃত্যু
আজও দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায় ৪২ দশমিক ৮ ডিগ্রী
মে দিবসের কর্মসূচিতে এসে গরমে অসুস্থ শ্রমিকের মৃত্যু
টাঙ্গাইলে সেনা সদস্য পরিচয়ে প্রতারণা
ভারতের নির্বাচনি প্রস্তুতি দেখার আমন্ত্রণ পেল আওয়ামী লীগ
বঙ্গবন্ধু বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন সর্বদা: খাদ্যমন্ত্রী
পুলিশ হেফাজতে সালমান খানের বাড়িতে হামলার অস্ত্রদাতার আত্মহত্যা
দুই মাস পর ইলিশ ধরতে নেমেছেন জেলেরা
গরমে ফ্রিজের ঠান্ডা পানি খাচ্ছেন? হতে পারে বড় বিপদ
নিজ এলাকায় জানাজায় গিয়ে মোবাইল হারালেন ধর্মমন্ত্রী
মানুষের মস্তিষ্কের আকার বড় হচ্ছে!
শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যার বর্ণনা দিতে গিয়ে কাঁদলেন র‍্যাব কর্মকর্তা
বিমানের খাবার নিয়ে অসন্তোষ প্রধানমন্ত্রী, দুইদিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নির্দেশ
ছাত্রলীগ নেতাকে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ ছাত্রদলের বিরুদ্ধে
শেখ হাসিনার অধীনে কেয়ামত পর্যন্ত সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না: রিজভী