বৃহস্পতিবার, ৯ মে ২০২৪ | ২৫ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

সামনে নতুন দিন

বটতলী হাটের শেষ প্রান্ত। নদীপাড়ের হাট। বেশ খাড়া নদীর পাড়। খরস্রোতা ধানিয়া নদী। এখানেই হায়েনারা ঘাঁটি গেড়েছে। সারি সারি তাঁবু। নদীর পাড়সহ বটতলী হাঁটের আশপাশটা এখন ওদের দখলে। পাক হায়েনাগুলো এদিক ওদিক হাঁটাহাঁটি করছে। হায়েনাদের এক কর্তা দাঁড়িয়ে। মোটা আর পাকানো গোঁফ। ইয়া লম্বা আর দশাসই চেহারা। পিঠে উদ্যত সঙ্গীন। বেয়নেট চকচক করে ওঠছে। কোমরে রিভলবার গোঁজা। চোখদুটি লাল টকটকে হয়ে ওঠেছে।

অনেকদিন ধরে একটা টিকটিকি জ্বালাচ্ছে ওদের। সব খবর চলে যাচ্ছে মুক্তিদের কাছে। বহু কষ্টে ধরা হয়েছে টিকটিকিটাকে। সামনে দাঁড়িয়ে এক কিশোর। ঢোলা হাফ প্যান্ট পড়া। ছেঁড়া গেঞ্জি। হালকা পাতলা গড়ন। কালো কাপড় দিয়ে চোখ বাঁধা। পিছমোড়া করে হাত বাঁধা। যে রাজাকাররা তাকে ধরে এনেছিল তারা সামনেই। বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে যখন বিচ্ছুটাকে অত্যাচার করবে তখন এই রাজাকাররা নিশ্চয় পৈশাচিক আনন্দ লাভ করবে। গোটা এলাকা চষে তারপর এই টিকটিকিটাকে ধরা হয়েছে। বিচ্ছু দলের নেতা। হায়েনা কর্তার বাজখাঁই আওয়াজ ভেসে আসল। পরিস্কার বাংলায়। হায়েনা নেতা ইশারা করতেই বিচ্ছুটার মুখের কালো কাপড় আর হাতের বাঁধন খুলে দিলো একজন। জেরা শুরু হলো।- কী নাম?- দিনু- কোন ক্লাসে পড়িস?  ক্লাস নাইনে। তুই নাকি একটা বিচ্ছু? আমি দিনু। কিন্তু তুইতো একটা বিচ্ছু। শুধু বিচ্ছু না, বিচ্ছু দলের নেতা। একটা টিকটিকি। আমি দিনু। আচ্ছা, আচ্ছা, তুই ই তাহলে সেই ঘুম হারাম করা বিচ্ছু দলের নেতা? তুই নাকি আমাদের সব খবরাখবর মুক্তি বাহিনিকে পৌঁছে দিস? হ‘ ঠিকই হুনছেন।  কেন?  আমরা আমাগো দেশটারে বাঁচাইবার চাই। তাই? এই দেশের মানুষ থাকব না, শুধু মাটি থাকব। বুঝছস? আমরা আমাগো দেশটারে বাঁচামুই।  মুক্তিবাহিনির খবর বল। ওরা কোথায় আছে? জানি না। আলবৎ জানিস। বল। জানি না। কেন জানিস না? মুক্তিরা বাতাসের বেগে চলে। এই এখাে তো একটু পর হয়তো ওখানে। এত্তটুকু মাসুম বাচ্চা! এই ছোঁড়া তুই যুদ্ধে আইলি ক্যান? আপনেরা আমাগো যুদ্ধে নামাইছেন। তুইতো দেখি আসলেই একটা বিচ্ছু। স্যার ওর পাছায় বুটজোড়া দিয়া একটা লাথি কষাইয়া দেন না ক্যান? বলে রাজাকার শামসু এগিয়ে এসে দিনুর গালে প্রচন্ড জোরে চড় মারে। বিশ্বাসঘাতক! রাজাকারের বাচ্চা রাজাকার! দেশের সঙ্গে বেঈমান ঘৃণা আর রাগে একদলা থুথু ছিটিয়ে দেয় দিনু। শামসু রাজাকারের মুখে। রাইফেল দিয়ে দিনুর মাথায আঘাত করতে যায় রাজাকার শামসু।  ‘স্টপ, ইয়ে রাজাকার শামসু!। বাঁজখাই গলা ভেসে আসে হায়েনার। অবাক হয়ে যায় শামসু।  স্যার আপনেও আমারে রাজাকার কইলেন। স্যার এই বিচ্ছুডারে বিশ্বাস কইরেন না। ওরে বিশ্বাস করলে আমাগো শ্যাষ কইরা দিবো। শুট হিম স্যার, শুট হিম।  নো, ওর কাছ থেকে অনেক কথা বের হবে। শামসু রাজাকার!  ক্যাপ্টেন সাব, আমারে আবারও রাজাকার বললেন। রাজাকারকেতো রাজাকারই বলব। তোমরা আমাদের সাহায্যকারী সেইজন্যইতো তোমরা রাজাকার। পোকা খাওয়া দাঁত বের করে হেহে করে হাসতে থাকে রাজাকার শামসু। কী মনে করে হায়েনা এগিয়ে এসে দিনুর চোখের কালো কাপড় খুলে ফেলে। পাঁচ মিনিট সময় দিলাম। এরপর মুখ না খুললে গুলি করে মেরে এই ধানিয়া নদীতে ফেলে দেবো। কোথায় ভেসে যাবি সেটাও বলতে পারবি না। 

হোলস্টার থেকে রিভলবার বের করে হায়েনাটা। তাক করে দিনুর দিকে। ঠোঁটে নিষ্ঠুর হাসি। বাঙালী মেরে ভুট্টোকে খুশি করবে। দিনু ঘাড় ঘুরিয়ে নদীর দিকে তাকায়। ধানিয়া নদী। বেশ খরস্রোতা। তাই কেউ এটি সাঁতরিয়ে পার হবার সাহস করে না। করণীয় ঠিক করে ফেলে দিনু। দেশকে বাঁচাতে হলে তার আরও কিছুদিন বাঁচতে হবে। না হলে বাংলার মাটি থেকে এই সব হানাদের তাড়ানো যাবে না। ঝট কওে একটানে রিভলবারটা কেড়ে নেয় সে। তারপর সেই অবস্থায় উল্টো ডিগবাজী খেয়ে লাফিয়ে পড়ে নদীতে। এরকম বহুবার ডিগবাজী খেয়েছে সে। বন্ধুদের সাথে বাজি ধরে। গ্রামের দুরন্ত কিশোরবেলা তার এভাবেই কাটছিল। ‘হায়! হায়! কী হলো বলে রাজাকার শামসু চেঁচিয়ে ওঠে। ক্যাপ্টেন সাব, বিচ্ছুটা পালিয়ে গেল! বিচ্ছুটা পালিয়ে গেল!’ বিস্ময়ে হতবাক হায়েনা ক্যাপ্টেনের বুঝতে খানিকটা সময় লাগে। কিংকর্তব্যবিমূঢ়। নিচে তাকায়। গভীর পানি। কিছুই দেখা যাচ্ছে না। বেমালুম গায়েব। ‘ফায়ার! ফায়ার! গগনবিদারী চিৎকারটা দেয় হায়েনাদের সর্দার। বৃথাই পানি লক্ষ্য করে গভীর আক্রোশে কয়েক রাউন্ড গুলি ছোঁড়ে হায়েনারা। তারপর হায়েনা কর্তা ঘুরে ঠাস্ করে চড় কসায় রাজাকার শামসুর গালে। চড় খেয়ে বড় বড় চোখ করে হায়েনা কর্তার দিকে তাকিয়ে থাকে রাজকার শামসু। তার কী দোষ? বুঝতে পারল না শামসু। মাটিতে বুটজোড়া দিয়ে লাথি মারতে লাগল হায়েনাদের বালুচ ক্যাপ্টেন।

নদীর ওপাড়ে পৌঁছে নদীর পাড়েই গা এলিয়ে দেয় দিনু। কোনদিন এই ধানুয়া নদী সাঁতরে পার হওয়ার সাহস করেনি। আজ সেটা করল। ভয়ডর মন থেকে উবে গেছে যেন। লম্বা ঘাসের আড়াল। ঘন ঘন শ্বাস নিতে থাকে দিনু। শরীরে ওপর বেশ ধকল গেছে। তিনদিন ধরে কিছু খেতে দেয়নি ওকে। নদীটা পার হয়ে এ পাড়ে আসতে পেরেছে সেটাই অবাক করার ব্যাপার। আহা! বেঁচে থাকাটা কত আনন্দের! কত আবেগের! বিপদে যে বেঁচে যায় কেবল সেই-ই বুঝতে পারে। ওপরে সুনীল আকাশ। সাদা মেঘের দল সারি সারি চলে যাচ্ছে। এই যে সুন্দর দেশটাকে বাঁচাতে হবে।  কিন্তু শরীরটা অসাড় হয়ে আসছে। চোখ ঝাঁপসা হয়ে আসছে। জ্ঞান হারাল সে। একটা ছনের কুটীর। কে যেন মাথায় পানি ঢালছে।  হঠাৎ একজন চেঁচিয়ে ওঠল, চাচী জ্ঞান ফিরছে, জ্ঞান ফিরছে। চাচী সম্বোধন করা সেই মহিলা চিনির শরবত এগিয়ে ধরল। ঢকঢক করে শরবত পান করল দিনু। কয়েক মিনিটে শরীরটা যেন শক্তি পেতে শুরু করল। সব অচেনা মুখ। অচেনা হলেও কেমন যেন মায়াময়। সকালে খেতে খেতে কথা হলে বাড়ির কর্তা আর কর্ত্রীর সাথে। দিনু ডাকে চাচা আর চাচি। বাজান, তোমার যেই কয়দিন খুশি এহানে থাকতে পারো- ডিমভাজিটা এগিয়ে দিতে দিতে বলল চাচী। আমাগো কোন ছেলেপুলে নাই। তুমি থাকলে আমাগো কোন অসুবিধা নাই। গৃহকর্ত্রীর সরল কথায় মনটা ভাল হয়ে গেল দিনুর।

দুদিনেই গ্রামটা অনেক পরিচিত হয়ে গেল দিনুর। গ্রামের নাম পলাশপুর। ধানিয়া নদীর এই পাড়ে যে এত সুন্দর একটা গ্রাম আছে সেটা অজানাই ছিল দিনুর কাছে। চারদিকে ফসলের ক্ষেত। সবুজ আর সবুজ। সরু মেঠোপথ। দুরে দুরে সব বাড়িঘর। এখানকার মানুষগুলোকে খুব আপন মনে হয়। সবাই দিনুর সাহসের তারিফ করে। গ্রামের একপাশে একটা বাঁশঝাড়। এখানে এসে বসে দিনু। সামনের ফসলের ক্ষেত। একটু পর পর বাতাস দোলা দিয়ে যাচ্ছে। দিনুর চোখেমুখে বাতাসের ঝাঁপটা এসে লাগছে। দিনু ভাবতে থাকে। এই যে সুন্দর গ্রাম। গ্রামের মানুষজন- এসব কিছু হায়েনারা ধ্বংস করার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছে। ওদের ঠেকাতে হবে। না হলে দেশের অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে। এতদিন মুক্তিযোদ্ধাদের খবরাখবর এনে দিয়েছে। এখন যুদ্ধে যেতে হবে। দিনু শুনেছে এখান থেকে সীমান্ত খুব একটা বেশি দুরে না। পাশের দেশ ভারত নাকি মুক্তিযুদ্ধের ট্রেনিং দিচ্ছে। সন্ধ্যে হতে থাকে। বাঁশঝাড়েই বসে থাকে দিনু। একটু রাত হলে সে ওঠে দাঁড়ায় এবং সামনের দিকে হাঁটতে থাকে। দিনুর বুকের গভীরে একটা নতুন সূর্য উদয় হয়েছে। 

 

 এইচ/৩৭ ব্যাংক কলোনি, সাভার

 

ডিএসএস/ 

Header Ad

গণমাধ্যমের তথ্য প্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিত করা হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী

কর্মশালায় বক্তব্য রাখছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত। ছবি: সংগৃহীত

তথ্য অধিকার আইনের আওতায় গণমাধ্যমের তথ্য প্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।

মঙ্গলবার (৮ মে) রাজধানীর দারুস সালামে জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ‘তথ্য অধিকার আইন ও গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী এ কথা জানান।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, তথ্য অধিকার আইনের কার্যকর বাস্তবায়ন সরকার নিশ্চিত করতে চায়। এ আইন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে পাশ করা হয়। সরকার নিজের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার জন্য এ আইন করেছে। তবে যেকোনো একটি আইন সমাজে তৈরি হলে, সে আইন বাস্তবায়নে বিভিন্ন ধরনের চ্যালেঞ্জ তৈরি হতে পারে। এ আইনে যারা তথ্য নেবেন বা যারা তথ্য দেবেন দুই পক্ষেরই কিছু বোঝাপড়ার অভাব থাকতে পারে। এ আইন শক্তিশালী অস্ত্র হিসেবে গণমাধ্যমকে আরও শক্তিশালী করেছে। কিন্তু সে অস্ত্রের ব্যবহার না অপব্যবহার হবে সেটা বোঝা এবং এ আইনে যাদের কাছে তথ্য চাওয়া হবে তাদের মধ্যে একটি সংস্কৃতিগত রূপান্তর দরকার। তথ্য দেওয়ার ক্ষেত্রে অনেক সময় জড়তা থাকে। যেগুলো জনসম্পৃক্ত তথ্য, জনগণের যেটা অধিকার সে তথ্য দেয়ার বিষয়টি সরকার নিশ্চিত করতে চায়। গণমাধ্যমের সাংবাদিকদেরও তথ্য চাওয়ার ক্ষেত্রে পেশাদার অ্যাপ্রোচ থাকা প্রয়োজন।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, তথ্য অধিকার আইনের অধীন যে তথ্য চাওয়ার অধিকার আছে সে বিষয় নিয়ে অনেক সময় যারা তথ্য চাইবেন তাদের পক্ষ থেকেও কিছু ভুল বোঝাবুঝি থাকে। কোনো তথ্য সর্বসাধারণের জন্য এবং কোনো তথ্য গোপন তথ্য সেটার পার্থক্য করতে পারা জরুরি। কিছু তথ্য আছে স্পর্শকাতর যেগুলো গোপন আইনের অধীন রক্ষিত আছে, এগুলো সর্বসাধারণের জন্য নয়। বাংলাদেশ ব্যাংক, বিটিআরসিসহ এ ধরনের অন্যান্য স্পর্শকাতর প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান হিসেবে বেশ কিছু কৌশল অবলম্বন করতে হয়। এসব কৌশল বাস্তবায়নের আগপর্যন্ত অনেক সময় গোপন রাখতে হয়। এগুলো প্রকাশ করলে অনেক সময় বৃহত্তর স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এক্ষেত্রে সাংবাদিকতা, তথ্যের অবাধ প্রবাহ, তথ্য মানুষের কাছে পৌঁছানো এবং স্পর্শকাতর তথ্য এসবগুলোর মধ্যে ভারসাম্য করতে হয়। সেখানে প্রশিক্ষণ, যোগাযোগ ও মিথস্ক্রিয়া সব পক্ষের করা প্রয়োজন।

তিনি আরও বলেন, তথ্যের অবাধ প্রবাহ, জনগণের কাছে তথ্য পৌঁছানো ও অপতথ্য মোকাবিলা করতে হবে। তবে সর্বসাধারণের জন্য তথ্য এবং জাতীয় স্বার্থে যেগুলোক পৃথিবীর সব দেশে স্পর্শকাতর ও গোপন তথ্য হিসেবে ধরা হয় সেগুলোর মধ্যে পার্থক্য নিরূপণের বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। আমরা সরকার ও প্রশাসনের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিতে চাই। এটা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অঙ্গীকার।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, তথ্য অধিকার আইনকে আমরা আরও প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আমরা চাই, সাংবাদিকরা যেন এ আইন ব্যবহার করে আরও ক্ষমতাপ্রাপ্ত হোন, এ আইনের পুরোপুরি ব্যবহার করতে পারেন এবং তার উপযোগিতা আমরা সমাজে পাই। একইসঙ্গে এ আইনের আমরা দায়িত্বশীল ব্যবহার দেখতে চাই। যাদের এ আইনের অধীনে তথ্য দেওয়ার বাধ্যবাধকতা আছে তাদের প্রতি আহ্বান থাকবে যেন তথ্য চাওয়া হলে সেটি দেওয়া হয়। জনগণের পক্ষ থেকে যখন গণমাধ্যম তথ্য চাইবে, সে তথ্য দ্রুততম সময়ের মধ্যে দেওয়া নিশ্চিত করতে হবে। সঠিক তথ্য যত দ্রুততম সময়ের মধ্যে সরবরাহ করা হবে, ততো গুজব বা অপপ্রচার হওয়ার সুযোগ কম হবে।

তিনি আরও বলেন, যে তথ্য জনগণের বলে তথ্য অধিকার আইন নিশ্চিত করছে, সেই তথ্য গণমাধ্যমকে দিতে হবে। এ তথ্যগুলো যত দ্রুততার সঙ্গে সহজলভ্য করা যায়, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ এ ধরনের অন্যান্য সব প্রতিষ্ঠানের জন্য তত ভালো। আমাদের সবার এ মানসিকতা তৈরি করা দরকার যে, সঠিক তথ্য যত দ্রুত জনগণের কাছে চলে আসবে- এটা আমাদের জন্য মঙ্গল।

তথ্য প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, সরকার চায় তথ্য অধিকার আইনের আওতায় যারা তথ্য দেবেন না, তথ্য দেওয়ার ক্ষেত্রে তাদের মধ্যে যেন কোনো ধরনের জড়তা বা মানসিক বাধা না থাকে। সরকার আরও চায় সরকারি প্রতিটি প্রতিষ্ঠান দ্রুততম সময়ের মধ্যে তথ্য সহজলভ্য করুক। আর যারা তথ্য চাইবেন আমরা চাই তথ্য অধিকার আইন তারা সঠিকভাবে ব্যবহার করবেন। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এই আইন ব্যবহারের সক্ষমতা তৈরি হোক সেটাও আমরা চাই; যাতে এ আইনের অপব্যবহার কেউ না করে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য দেওয়া প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, একটি পরিকল্পিত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য সহজলভ্য করা হবে।

তিনি আরও যোগ করেন, অপসংবাদিকতা হলে তার সবচেয়ে বড় শিকার হয় পেশাদার সাংবাদিকরা। অপপ্রচার হলে পেশাদার সাংবাদিকতা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সব আইনেই কিছু অসৎ ব্যক্তি অপব্যবহারের সুযোগ নিতে চায়। সেটা আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করতে হবে; কিন্তু সাইবার নিরাপত্তা আইন (সিএসএ) ব্যবহার করে কোনো সাংবাদিকতার চর্চা আটকে দেওয়ার সুযোগ নেই। সিএসএ পেশাদার সাংবাদিকতাকে সুরক্ষা দেবে।

জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটের অতিরিক্ত মহাপরিচালক সুফী জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য কমিশনের প্রধান তথ্য কমিশনার ডক্টর আবদুল মালেক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. খুরশীদ আলম।

দুই দিনের ঢাকা সফরে এসেছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব

ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রা। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রা দুই দিনের সফরে ঢাকা এসেছেন। বুধবার (৮ মে) সন্ধ্যায় এক বিশেষ ফ্লাইটে তিনি বিমানবন্দরে অবতরণ করেন বলে জানিয়েছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পর এ‌টি দি‌ল্লির কোনো প্রতি‌নি‌ধির প্রথম ঢাকা সফর।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিনয় কোয়াত্রা বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পাঠানো দিল্লি সফরের আমন্ত্রণপত্র তুলে দেবেন। ওই দিন তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের পাশাপাশি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গেও সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।

ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিনয় কোয়াত্রা ঢাকা সফরের সময় পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে আলোচনা করবেন।

কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ ও ভারত আগামী জুন মাসের শেষ দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি সফরের বিষয়টি মোটামুটি চূড়ান্ত করেছিল। এখন প্রধানমন্ত্রীর ওই সফর পিছিয়ে জুলাইয়ে আয়োজন করতে চাইছে ভারত। ঢাকা সফরের সময় বিনয় কোয়াত্রা এটি বাংলাদেশের কাছে তুলে ধরতে পারেন।

ছেলে-পুত্রবধূর অপমান সইতে না পেরে বৃদ্ধ মা-বাবার বিষপান

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। ছবি: সংগৃহীত

নাটোরের গুরুদাসপুরে ছেলের ওপর অভিমান করে মা-বাবার এক সঙ্গে বিষ পানের ঘটনা ঘটেছে। স্বজন ও স্থানীয়রা উদ্ধার করে তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছেন।

বুধবার (৮ মে) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার বিয়াঘাট ইউনিয়নের হামলাইকোল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

বিষপানে গুরুতর অসুস্থ বাবা-মা হলেন- মো. আলম শেখ (৬০) ও নাজমা বেগম (৫০)।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আলম শেখ বলেন, আমার দুই মেয়ে এক ছেলে। ছেলে সবুজ শেখকে সব জমি-জমা লিখে দিয়েছি। ছেলে কথা দিয়েছিল সংসারের সকল দায়িত্ব নেবে এবং আমার সব ঋণ পরিশোধ করবে। কিন্তু জমি লিখে নেওয়ার পর ছেলে কথা রাখেনি। এদিকে ঋণের কারণে পাওনাদারদের অপমান-অপদস্থ সহ্য করতে হচ্ছে। পাশাপাশি ছেলে ও ছেলের বউ এর দুর্ব্যবহার তো রয়েছেই। তাই অতিষ্ঠ হয়ে স্বামী-স্ত্রী এক সঙ্গে বিষপান করেছেন বলে জানান তিনি।

মা-বাবার বিষপানে আত্মহত্যাচেষ্টার বিষয়ে জানতে চাইলে ছেলে সবুজ শেখ কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত মেডিকেল অফিসার ডা. স্নিগ্ধা আক্তার জানান, বিষপান করে দুজন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তবে আলম শেখের স্ত্রী নাজমা বেগমকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ সংবাদ

গণমাধ্যমের তথ্য প্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিত করা হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
দুই দিনের ঢাকা সফরে এসেছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব
ছেলে-পুত্রবধূর অপমান সইতে না পেরে বৃদ্ধ মা-বাবার বিষপান
৪৬তম বিসিএস প্রিলির ফল প্রকাশ হতে পারে আগামীকাল
জনগণের কষ্ট লাঘবে সরকার সবসময় সচেষ্ট: প্রধানমন্ত্রী
ফের আলিয়া ভাটের আপত্তিকর ভিডিও ফাঁস!
‘কাচ্চি ভাই’ রেস্টুরেন্টের মালিক সিরাজ গ্রেপ্তার, দুই দিনের রিমান্ডে
এক লাফে ডলারের দাম বাড়ল ৭ টাকা
আজ বিশ্ব গাধা দিবস, পালন করা হয় যেভাবে...
প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে ৩০-৪০ শতাংশ ভোট পড়েছে: সিইসি
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে জাইকার প্রতিনিধি দলের সাক্ষাৎ
প্রথম ধাপে ১৩৯ উপজেলায় ভোটগ্রহণ শেষ, চলছে গণনা
বগুড়ায় ব্যালট পেপার বাইরে দেওয়ায় প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ও প্রার্থীর এজেন্ট আটক
জাতীয় দলে ফিরলেন সাকিব-মুস্তাফিজ-সৌম্য
ওমরাহ পালন শেষে দেশে ফিরলেন মির্জা ফখরুল
মাদারীপুরে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষ, বিস্ফোরণ, আহত ১০
দেশে অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নিয়ে অনুসন্ধান চলছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
ভোট কারচুপির অভিযোগে ফুলছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির ভোট বর্জন
মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে দুপক্ষের মারামারি, আহত ৫০
নওগাঁর ভোট কেন্দ্রগুলোতে নেই ভোটার উপস্থিতি