লুসাইলে আর্জেন্টিনা-নেদারল্যান্ডস মহারণ
জিতলেই সেমিফাইনাল। হারলে পত্রপাঠ বিদায়। লুসাইল স্টেডিয়ামে শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) কাতার বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে মুখোমুখি হবে আর্জেন্টিনা ও নেদারল্যান্ডস। রাত ১টায় লাতিন বনাম ইউরোপের লড়াইয়ে শেষ হাসি হাসবে কে?
লড়াইটা হবে জম্পেশ। তা সহজেই অনুমেয়। বিশ্বকাপে এই দলের লড়াইয়ের ইতিহাস পুরোনো। ১৯৭৮ বিশ্বকাপের ফাইনালে ডাচদের হারিয়েই নিজেদের প্রথম শিরোপা জিতেছিল আর্জেন্টিনা, ঘরের মাঠে।
বিশ্ব সেরার মঞ্চে এনিয়ে ষষ্ঠবারের মতো দেখা হতে যাচ্ছে তাদের। আগের পাঁচ দেখায় দুটি ম্যাচ জিতেছে নেদারল্যান্ডস, একটিতে আর্জেন্টিনা। সবশেষ মুখোমুখি হয় ২০১৪ আসরে সেমি-ফাইনাল। নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময়ে গোলশূন্য ড্রয়ের পর টাইব্রেকারে জেতে আর্জেন্টিনা।
সেই হারের শোধ নিতে মুখিয়ে আছে ডাচ শিবির। বিশেষ করে গোলপোস্টে আন্দ্রেস নোপার্ট তো আগাম হুমকি দিয়ে রেখেছেন, মেসিকে রুখে দিতে। মেসির পেনাল্টি শুট আটকানো তার স্বপ্নের মধ্যে গেথে গেছে। কিন্তু আর্জেন্টিনার হয়ে মেসি শুধু ছন্দে নেই, গোল দেওয়ার মতো প্লেয়ার একাধিক।
যদিও শেষ আটের ম্যাচের আগে ইনজুরি শঙ্কায় আলবিসেলেস্তেরা। বিশেষ করে ডি মারিয়া ও রদ্রিগো পলের চোট। দুজন যদিও অনুশীলন করেছেন পুরোদমে। তারপরও ডাচদের বিরুদ্ধে এই দুজনকে দেখা যাবে কি না, তা পরিষ্কার করেননি আর্জেন্টিনার কোচ লিওনেল স্কালোনি।
গ্রুপ পর্বে পোল্যান্ডের বিপক্ষে ২-০ গোলে জেতা ম্যাচের ৫৯তম মিনিটে ডি মারিয়া ঊরুর অস্বস্তি নিয়ে মাঠ ছাড়েন। এতে পরের শেষ ষোলোয় অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলতে পারেননি তিনি। শঙ্কা ছিল কোয়ার্টার-ফাইনালে তাকে পাওয়া নিয়ে। অনিশ্চয়তার সেই কালো মেঘ অনেকটাই সরে যায় গত মঙ্গলবার মারিয়া অনুশীলনে ফেরায়। এর মাঝেই ডি পলের চোট নিয়ে পরদিন খবর ছড়ায় আর্জেন্টিনার গণমাধ্যমে। হ্যামস্ট্রিংয়ে নাকি অস্বস্তি অনুভব করছিলেন তিনি, যা শুরু হয়েছিল আগের দিনের অনুশীলন থেকে।
পরে ইনস্টাগ্রামে নিজের অনুশীলনের একটি ছবি পোস্ট করে সমর্থকদের আশ্বস্ত করেন ডি পল। সব কিছু ঠিক আছে বলে নিশ্চিত করেন আর্জেন্টিনার মাঝমাঠের সেনানী। এই দুইজনের অবস্থা নিয়ে বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয় স্কালোনিকে। ডি পলের চোটের কথা শুনে কিছুটা অবাকই হয়েছেন তিনি। পরে বললেন, দলে ডি মারিয়া, ডি পল থাকবেন কি না সেটা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন এদিনের অনুশীলনের পরই।
তিনি বলেন, ‘গতকাল আমরা রুদ্ধদ্বার অনুশীলন করেছি। আমি জানি না, আপনারা কীভাবে জানলেন রদ্রিগোর কোনো সমস্যা থাকতে পারে। তারা যদি ভালো অনুভব করে, এরপর আজকের অনুশীলনে আমরা দেখব তারা দলে থাকবে কি না।’
তিনি আরও বলেন, ‘সে (ডি পল) গতকাল অনুশীলন করেছে। ডি মারিয়াও গতকাল অনুশীলনে ছিল। ম্যাচে যারা ছিল মাঝে মধ্যে তারা পুরোপুরি অনুশীলন করে না। আজকে আমরা দেখব, তারা খেলতে পারবে নাকি না। গণমাধ্যমে যে সব খবর আসে সেগুলো বোঝা খুব কঠিন।’
শেষ ষোলোতে আর্জেন্টিনা হারিয়ে এসেছে অস্ট্রেলিয়াকে। অন্যদিকে নেদারল্যান্ডস হারায় যুক্তরাষ্ট্রকে। সি গ্রুপে সৌদির কাছে হারলেও পরের দুই ম্যাচে মেক্সিকো ও পোল্যান্ডকে হারিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হিসেবে শেষ ষোলোতে আসে মেসির আর্জেন্টিনা। নেদারল্যান্ডসও এ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন। তারা এখন কোন ম্যাচ হারেনি। সেনেগালকে ২-০ গোলে উড়িয়ে শুরুর পর ইকুয়েডরের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র। গ্রুপের শেষ ম্যাচে স্বাগতিক কাতারকে ২-০ গোলে হারিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন ডাচ শিবির।
এমএমএ/