উইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে সুসম্পর্ক নষ্ট করবে না বিসিবি
সেন্ট লুসিয়া থেকে ডোমিনিকায় বাংলাদেশ দলের ফেরি যাত্রা নিয়ে সৃষ্ট ঘটনা ব্যাপক তোলপাড় করেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় এ নিয়ে সমালোচনা হয়েছে বেশি। বিসিবিকে তুলোধুনো করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এভাবে সমুদ্র যাত্রা নিয়ে বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরী সুজন গত শুক্রবার (১ জুলাই) ঢাকাপ্রকাশ-কে বিস্তারিত জানিয়েছিলেন। যা তিনি আজ (মঙ্গলবার) আবার ঘটা করে মিরপুরে সংবাদিকদের জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি বিষয়টা যেভাবে এসেছে আসলে ওরকম ছিল না। আমাদের সঙ্গে যখন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ড যোগাযোগ করে আমরা কিন্তু সঙ্গে সঙ্গেই আমাদের উদ্বেগ জানিয়েছিলাম। আমাদের দলের এই ধরনের ভ্রমণের অভিজ্ঞতা নেই। পরবর্তীতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ড জানায়, বর্তমান পরিস্থিতিতে অনেক ফ্লাইট বন্ধ হয়ে গেছে। বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের বিমান চলাচল সীমাবদ্ধ হয়ে গেছে। খুব ছোট ছোট বিমান এখানে যাতায়াত করে। একই সঙ্গে আমাদের জানায়, তারা ফেরি সার্ভিস ব্যবস্থা করছে যা ছোট ক্রুজ শিপের মতো। এটা নিয়মিত চলাচল করে। বাংলাদেশ দল, ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল, আইসিসির অফিসিয়াল, টিভি ক্রু ও ধারাভাষ্যকাররা একই সঙ্গে যাবেন। এ বিষয় নিশ্চিত করার পর আমাদেরও আলোচনা থামিয়ে দিতে হয়। কারণ দুই দল একই সঙ্গে ভ্রমণ করছে। তখন বিষয়টা মেনে নিতে হয়। যখন আমাদের দল কোনো দেশে যাবে, যাবতীয় সব দায়িত্ব ওই বোর্ডেরই। যেমন- কোনো বিদেশি দল আসলে আমাদের ওপর নির্ভর করতে হয়।’
প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে ফেরি যাত্রা একদিন পেছানো হয়েছিল জানিয়ে বিসিবির প্রধান নির্বাহী বলেন, ‘ফেরি যাত্রাও আবহাওয়ার অবস্থা দেখে একদিন পিছিয়েছে। এ ধরনের ভ্রমণে কিছু মোশন সিকনেস হয়। এটার ব্যাপারেও সতর্ক করা হয়েছে। কী কী গাইডলাইন মানতে হবে আগে বলা হয়েছে। এটা যে একদম অস্বাভাবিক কিছু তা কিন্তু না। সমুদ্রে নড়াচড়ার সময় এসব সমস্যা হয়। শুধু বাংলাদেশের দলের খেলোয়াড়রাই অসুস্থ হয়েছেন তা না। ওয়েস্ট ইন্ডিজের খেলোয়াড়দেরও একই রকম অবস্থা হয়েছে। কিন্তু আমাদের খেলোয়াড় ও সাপোর্ট স্টাফদের এই অভিজ্ঞতা নেই তাই তাদের প্রতিক্রিয়া বেশি ছিল। এটাই স্বাভাবিক। এটাই আমাদের গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসেছে। এর কারণে আপনারা উদ্বেগ জানাচ্ছেন।’
দ্বি-পাক্ষিক সিরিজে দুই দেশের বোর্ডের সঙ্গে পারস্পরিক যোগাযোগের মাধ্যমে হয়ে থাকে। তবে আগামীতে যাতে এমন না হয় সেই ব্যাপারে বিসিবি সজাগ থাকবে জানিয়ে সুজন বলেন, ‘এটা পুরোপুরি স্বাগতিক বোর্ডের বিষয়। বোর্ডের সঙ্গে বোর্ডের একটা যোগাযোগ থাকে। এটাকেই গুরুত্ব দেই। অবশ্যই আমাদের দেশ হলে ভিন্ন ব্যাপার হতো। আমরা সফরকারী দলকে আগে প্রাাধান্য দিতাম। ওদেরও কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ডের ভেন্যুগুলো এক দ্বীপ থেকে আরেক দ্বীপে। ওদেরও কিছু লজিস্টিক চ্যালেঞ্জ থাকে। করোনা পরিস্থিতির পর এই পরিস্থিতি তাদের জন্য আরও চ্যালেঞ্জিং হয়েছে। এসব কারণেই হয়তো এমন হচ্ছে। আমরা অবশ্যই ওয়েস্ট ইন্ডিজ বোর্ডের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলব এবং আমাদের কনসার্ন জানাব, যেন ভবিষ্যতে এমন না হয়।’
কিন্তু এসব কারণে উইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে সর্ম্পক নষ্ট করতে চান না জানিয়ে নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন বলেন, ‘আরেকটা জিনিস মাথায় রাখতে হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ বোর্ডের সঙ্গে অত্যন্ত সুসম্পর্ক বজায় রেখেই আমাদের ফিউচার ট্যুর প্ল্যান বা এ দলের প্ল্যান করে থাকি। এক্ষেত্রে বোর্ড টু বোর্ড সুসম্পর্ক অনেক গুরুত্বপূর্ণ। একটা বিষয় হলো আর সঙ্গে সঙ্গে আমরা ঝাঁপিয়ে পড়লাম এ বিষয়টা ঠিক হবে না বলে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি।’
এমপি/এসজি/