রংপুর জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতিকে অব্যাহতি
রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মমতাজ উদ্দিন আহাম্মেদকে সভাপতির দায়িত্ব থেকে সাময়িক ভাবে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে ১৫ দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। জবাব সন্তোষ জনক না হলে তাকে দল থেকে স্থায়ী ভাবে বহিস্কার করারও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ ছাড়াও বেশ কয়েকটি গুরুত্বপুর্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। শনিবার বেলা ১১ টা থেকে দুপুর ৩ টা পর্যন্ত দীর্ঘ ৪ ঘন্টা ব্যাপি জেলা আওয়ামী লীগের বিশেষ সভায় সর্বসম্মত ভাবে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সভার সভাপতি জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ইলিয়াছ আহাম্মেদ এ্যাডভোকেট।
রংপুরের ক্ষমতা সীন দলের সভা সূত্রে জানা গেছে, প্রধান শেখ হাসিনা বার বার দলের কর্মকাণ্ড গতিশীল করা নেতা কর্মীদের আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র চাঙ্গা করা সাধারন মানুষের সাথে দলের নেতা কর্মীদের যোগাযোগ আরও বৃদ্ধি করা উপজেলা পর্যায়ে দলের কর্মকাণ্ডে আরও গতিশীলতা ফিরিয়ে আনার কোন নির্দ্দেশনা বাস্তবায়িত হচ্ছেনা।
বরং জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মমতাজ উদ্দিন দীর্ঘ দেড় বছর ধরে জেলা আওয়ামী রীগের কার্যকরী কমিটির ও সাধারন সভা আহবান না করে দলকে ব্যাক্তিগত প্রতিষ্ঠানে পরিনত করেছেন বলে নেতা কর্মীদের অভিযোগ। শুধু তাই নয় বিশেষ করে হারাগাছ পৌরসভা নির্বাচন, ইউপি নির্বাচন অতিসম্প্রতি জেলা পরিষদ নির্বাচনে দলের প্রধান শেখ হাসিনা যাদের দলীয়ভাবে মনোনয়ন দিয়ে ছিলেন তাদের পক্ষে নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে অংশ না দিয়ে বিদ্রোহি প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান নিয়ে কাজ করছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সহ তার অনুসারী কয়েকজন নেতা। এতে করে দল ক্ষতি গ্রস্থ হচ্ছে।
দলের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি হওয়ায় জেলা আওয়ামী লীগের কার্যক্রম চরম ভাবে স্থবির হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ করেন সভায় উপস্থিত সকল সদস্য। সভায় জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ইলিয়াছ আহাম্মেদ এ্যাডভোকেট বলেন দেড় বছর ধরে সভাপতি মমতাজ উদ্দিন আহাম্মেদ সভা আহবান করছেন না। দলের কর্মকাণ্ডে চরম স্থবিরতা তৈরী হয়েছে। তিনি নিজেও এ ব্যাপারে সভা আহবান করার আহবান জানিয়েছেন। দুই দফা লিখিত ভাবে আবেদনও করা হয়েছে।
বিষয়টি দলের সাধারন সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে জানানো হয়। ফলে দলের হাইকমান্ডের নির্দ্দেশে আজ শনিবার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সভা আহবান করা হয়েছে। সভা আহবানের বিষষয়টি জেলা আওয়োমী লীগের সভাপতি মমতাজ উদ্দিনকে জানানোর পরেও তিনি সভায় উপস্থিত হননি বলে জানিয়েছেন দলের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক মোতাহার হোসেন মওলাসহ বেশ কয়েকজন জেলার শীর্ষ নেতা। আরও জানা গেছে পরে তার অনুপস্থিতিতে জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ইলিয়াছ আহাম্মেদের সভাপতিত্বে সভা শুরু হয়।
সভায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধথারন সম্পাদক রেজাউল করিম রাজু সহ ৫৩ জন নেতা উপস্থিত ছিলেন। দীর্ঘ আলোচনার পর জেলা সভাপতি মমতাজ উদ্দিনকে সভাপতির দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেবার সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। সেই সাথে দলের সিদ্ধান্ত অমান্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া হারাগাছ পৌরসভা, বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা পরিনষদের চেয়ারম্যান প্রার্থীদের বিপক্ষে বিদ্রোহি প্রার্থীদের পক্ষে অবস্থান নেয়া সহ বিভিন্ন অভিযোগে ১৫ দিনের সময় দিয়ে তাকে কারণ দর্শনোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
সেই সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে রংপুরে মিঠাপুকুর উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি না থাকায় সেখানে দলের ত্যাগি নেতা ও সাবেক ছাত্রলীগের নেতাসহ দলের নিবেদিত প্রান নেতাদের জীবন বৃত্তান্ত দ্রুততম সময়ের মধ্যে জমা দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। আপাতত মিঠাপুকুর উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয় সেই কমিটি সম্মেলনের মাধ্যমে পূর্নাঙ্গ কমিটি গঠন করবে বলে সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এ ব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক মোতাহার হোসেন মওলার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জেলা সভাপতি মমতাজ উদ্দিনকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি মিঠাপুকুর উপজেলা কমিটি গঠনের জন্য জীবন বৃত্তান্ত আহবান করার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
পরে সভার সভাপতি জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ইলিয়াছ আহাম্মেদ এ্যাডভোকেট একই কথা জানিয়ে বলেন জেলা সভাপতি দলের সকল নিয়ম নির্দ্ধেশনাকে বৃদ্ধা আঙ্গুলি দেখিয়েছেন দলের চেইন অব কমাণ্ড ভেঙ্গে ফেলেছেন অভিযোগ করে সভায় উপস্থিত সকলেই সর্বসম্মত ভাবে তাকে দল থেকে অব্যাহতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। সার্বিক বিষয়ে জানতে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মমতাজ উদ্দিন আহাম্মেদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এএজেড