চাঁদা দাবির অভিযোগে বিএনপির পাঁচ নেতার বিরুদ্ধে মামলা
রাজশাহীর গোদাগাড়িতে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে ‘জমি জালিয়াত চক্রের মূলহোতা’ বিএনপি নেতাসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। গোদাগাড়ী মডেল থানার ওসি কামরুল ইসলাম রবিবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
শনিবার (২৩ এপ্রিল) রাতে জেলার গোদাগাড়ী উপজেলার বিজয়নগর এলাকার বাসিন্দা মো. ইব্রাহিম আলী এ মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার আসামিরা হলো, গোদাগাড়ীর দেওপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি বিজয়নগর এলাকার আবদুল হাই টুনু (৬৫), তার ভাই গোলাম মোস্তফা সিবাজি (৫০), পার্শ্ববর্তী রাণীনগর এলাকার জামায়াত সমর্থক সেরাজুল ইসলাম (৫০) এবং বান্দুরিয়া হাজিপুর এলাকার নরেশ হেমব্রম (৬০)।
এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ডিসেম্বরে জমির মালিক রাজশাহী মহানগরীর মহিষবাথান এলাকার বাসিন্দা সাদিকুল হক এবং গোদাগাড়ীর বিজনগরের মো. ইব্রাহিম প্রায় আট বিঘা জমি প্লট আকারে বিক্রির জন্য প্রস্তুতি নেন।
এরপর থেকেই বিএনপি নেতা টুনুর নেতৃত্বে তার ক্যাডার বাহিনী সাদিকুল এবং ইব্রাহিমকে নানাভাবে হুমকি দিতে থাকেন।
এ বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি বাঁশলিতলা এলাকায় জমিতে উপস্থিত হয়ে টুনু এবং তার ১৫-২০ জন ক্যাডার দেশীয় ধারালো অস্ত্র নিয়ে সেখানে উপস্থিত হন। এরপর জমির মালিক এবং সাদিকুলকে ভয়ভীতি দেখান টুনু।
টুনু এ সময় জমির দুই মালিককে বলেন, জমি প্লট আকারে বিক্রি করতে হলে আমাকে ২০ লাখ টাকা দিতে হবে। অন্যথায় তোমাদের (জমির দুই মালিক) প্রাণে মেরে ফেলা হবে। এ সময় টুনু এবং তার ক্যাডাররা ইব্রাহিমের কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকা ছিনেয়ে নেয়। এছাড়া ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে মিথ্যা মামলা দায়ের এবং প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বিএনপি নেতা টুনু গোদাগাড়ী এবং পার্শ্ববর্তী পবা উপজেলায় জমি জালিয়াত চক্রের মূলহোতা। ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে জমি জোর করে দখলের জন্য তার নিজস্ব ক্যাডার বাহিনী রয়েছে। টুনু গোদাগাড়ীর উপজেলার বসন্তপুর এলাকায় তার সহযোগীদের দিয়ে আদিবাসীদের একটি দামি জমি দীর্ঘদিন থেকে দখল করে রেখেছেন। সম্প্রতি পার্শ্ববর্তী চৌদুয়ার এলাকাতেও আরেকটি জমি জোর করে দখলে নিয়েছেন। তিনি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ২০টি স্থান দখল করে রেখেছেন। এছাড়া তার বাড়িতে ভুয়া দলিলসহ বিভিন্ন ধরনের সিল রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তার বাড়ি তল্লাশি করলে বিষয়টির সত্যতা পাবে।
মামলার বাদী মো. ইব্রাহিম বলেন, আমাদের জমির মূল্য প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা। মূল্যবান জমিটি দখলে নেয়ার জন্য টুনু এবং তার বাহিনী গত সাড়ে চার মাস থেকে অপৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। তার ক্যাডার বাহিনীর প্রতিনিয়ত হুমকিতে নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি। শুধু আমরা নয়, এ এলাকায় টুনু এবং তার বাহিনীর সন্ত্রাসী তৎপরতায় এলাকার মানুষ জমি-ভিটা হারিয়ে চরম আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন।
এ ব্যাপারে গোদাগাড়ী মডেল থানার ওসি কামরুল ইসলাম বলেন, জমি নিয়ে চাঁদা দাবির অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছে। আসামি টুনুর বিরুদ্ধে এ সংক্রান্ত অভিযোগে আরও কয়েকটি মামলা রয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান শুরু করেছে।
এমএসপি