স্ত্রীকে নির্যাতন করে মাথা ন্যাড়া
মামলার ৫ দিন পরেও গ্রেপ্তার হয়নি আসামি
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় স্ত্রীকে মারধর করে মাথা ন্যাড়া করার ঘটনায় মামলা দায়েরের পাঁচ দিন পার হলেও আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এদিকে আসামি ভুক্তভোগীকে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) স্ত্রীকে নির্যাতন করে মাথা ন্যাড়া করে দেন ওই নারীর স্বামী এহসান মামুন। এ ঘটনায় রুহিয়া থানায় একটি মামল দায়ের করেছেন স্ত্রী সবুরা খাতুন।
অভিযোগে বলা হয়, একই ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামের হামিদুর ইসলামের মেয়ের সঙ্গে ১৩ বছর আগে এহসান মামুনের বিয়ে হয়। তাদের সংসারে একটি ৩ বছরের মেয়ে ও ১২ বছরের একটি ছেলে রয়েছে। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য মামুন তার স্ত্রীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে আসছেন। গত ১৭ মার্চ দুপুরে মামুন ভাত খাওয়ার সময় থালায় একটি চুল পাওয়াকে কেন্দ্র করে তার স্ত্রীকে বাঁশেরলাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করে মাথা ন্যাড়া করে দেন। তার পরেও দুই সন্তানের কথা চিন্তা করে মামুনের সঙ্গে সংসার করে আসছিলেন তিনি। এরই মধ্যে গত বুধবার দুপুরে তার স্ত্রীকে এক প্রতিবেশির সঙ্গে কথা বলতে দেখে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন এবং বাঁশের লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করেন। স্ত্রীর নাক ও হাতের গহনা খুলে নিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় বাড়িতে থেকে বের করে দেন। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করান। একটু সুস্থবোধ করলে পরের দিন স্বামী মামুনের বিরুদ্ধে রুহিয়া থানায় মামলা দায়ের করে স্ত্রী সবুরা খাতুন।
নির্যাতনের বিষয়ে ওই গৃহবধূ বলেন, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমার স্বামী আমাকে প্রায় সময় অমানবিক নির্যাতন করতেন। শুধু সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে সংসার করছি। মামুন আমার পরিবারের কাছ থেকে এর আগে ৩০ হাজার টাকা যৌতুক নিয়েছে। এখন আবারও টাকা জন্য মা-বাবার কাছে বলার জন্য আমাকে চাপ দেয়। আমার বাবা অনেক গরিব। টাকা চাইতে পারব না জানালে মারধর করে আমার চুল কেটে ন্যাড়া করে দেয়।
তিনি আরও জানান, মামলা তুলে না নিলে আমার দুই সন্তানকে হত্যা করে আমার উপর হত্যা মামলা করবে বলে হুমকি দেন মামুন। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত এহসান মামুনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করলে তাকে পাওয়া যায়নি।
অভিযুক্ত এহসান মামুন ওই ইউনিয়নের মাধবপুর নওয়াপাড়া গ্রামের মৃত মহির উদ্দীনের ছেলে। স্থানীয় ইউপি সদস্য হোসেন আলী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এহসান মামুন মারধর করে তার স্ত্রীর মাথা ন্যাড়া করে দিয়েছে। এর আগেও অনেকবার তার স্ত্রীকে তিনি নির্যাতন করেছেন। আমার কাছে তার স্ত্রী বিচার চাইতে এলে আমি থানার যাওয়ার নেওয়ার পরামর্শ দিই।
এ বিষয়ে কথা বলতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান অখিল চন্দ্র রায় এর কার্যালয়ে গেলে তিনি জানান, আমি এ ব্যাপারে কিছুই বলব না। যে ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটেছে সেখানে যান।
এ প্রসঙ্গে রুহিয়া থানার ওসি চিত্তরঞ্জন রায় বলেন, সবুরা খাতুন নামে এক গৃহবধূ স্বামী নির্যাতনের অভিযোগ এনে একটি মামলা করেছেন। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসএন