বরগুনায় থামছে না বোমা মেশিনের তাণ্ডব, ধ্বংস হচ্ছে পরিবেশ
বরগুনার বিভিন্ন এলাকায় অবৈধ ড্রেজার (বোমা পাওয়ার পাম্প) মেশিন বসিয়ে ভূগর্ভস্থ বালু উত্তোলনের মহোৎসব চলছে। গ্রামের নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের সময় টাস্কফোর্সের অভিযানে অসংখ্য বোমা মেশিন জব্দ হলেও হচ্ছে না মামলা।
সরকারের জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এর ফোনে গত বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) বরগুনা সদরের গৌরিচন্না ইউনিয়নের আমতলী খাল থেকে একটি বোমা মেশিন জব্দ করে পুলিশ। পরে মেশিনটি স্থানীয় ইউপি সদস্য মানিক চন্দ্র রায়ের জিম্মায় রাখা হয়।
জব্দের বিষয় শিকার করে অভিযানের দায়িত্বে থাকা সদর থানার এএসআই মাসুম বলেন, মেশিনটি চাইলে মালিক নিয়ে নিতে পারে। তবে আমরা এ মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করতে দেব না।
মেশিন জিম্মায় রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করে ইউপি সদস্য মানিক চন্দ্র রায় বলেন, পুলিশের পক্ষ থেকে একটি অবৈধ ড্রেজার মেশিন আমার জিম্মায় রাখা হয়েছে। মেশিনটি আমি মাসুদ নামের এক স্থানীয় ব্যক্তির নিকট রেখেছি।
সূত্র জানায়, ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২০২১-২২ অর্থবছরে হেরিং বোন বন্ড (এইচবিবি) দ্বিতীয় পর্যায়ের দুটি প্যাকেজ অনুমোদন পায় সদর উপজেলা। যেখানে গৌরিচন্না ইউনিয়নে ৩৩৫ মিটার রাস্তার কাজ পান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্মান কনস্ট্রাকশন। অথচ সেখানে ঠিকাদার নয়ন অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে পার্শ্ববর্তী খাল থেকে বালু উত্তোলন করে উক্ত রাস্তায় ব্যবহার করছেন।
বিষয়টি এলাকাবাসীর নজরে এলে তারা সরকারের জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করেন। পরে বরগুনা থানা পুলিশ গিয়ে অবৈধ ড্রেজার (বোমা) মেশিনটি জব্দ করে।
এ বিষয়ে নির্মাণ কনস্ট্রাকশনের ঠিকাদার নয়ন জানান, বালু ফেলার চুক্তি স্থানীয় বালু ব্যবসায়ী রাজিবকে দিয়েছি। তিনি সিএফটি ১১ টাকা করে নেয়।
বালুব্যবসায়ী রাজিবের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার সঙ্গে কোনো চুক্তি হয়নি। আমরা ঠিকাদার নয়নের কোনো কাজ করি না। তবে বালু তোলার জন্য আমরা জরিমানা দিয়েছি।
এ বিষয়ে বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আহম্মদ বলেন, ৯৯৯-এ সংবাদ পেয়ে পুলিশ পাঠিয়ে বালু উত্তোলন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বোমা মেশিনটি স্থানীয় ইউপি সদস্যের জিম্মায় রাখা হয়েছে। তবে এখনো কারো কাছ থেকে লিখিত কোনো অভিযোগ পাইনি।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামিয়া শারমিন জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
এমএসপি