কোম্পানীগঞ্জে সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণে অনিয়ম
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহারের ঘর নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ২০টি ঘরের নির্মাণ কাজ ঘুরে দেখার পর ফুটে উঠে নানান অনিয়মের চিত্র।
এ বিষয়ে স্থানীয়দের অভিযোগ, উপজেলার চরএলাহী ইউনিয়নের চরএলাহী বাজার সংলগ্ন সরকারের আশ্রয়ণ প্রকল্প-২’র ২০টি ঘর নির্মাণ কাজের শুরু থেকে নিম্নমানের ইট, বালু, সিমেন্ট, রড দিয়ে কাজ শুরু করে ঠিকাদার। এক পর্যায়ে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ উঠলে ঠিকাদার কিছু খারাপ ইট সরিয়ে নেন। তবে এরপর পুনরায় ঘর নির্মাণের কাজে নিম্নমানের ইট ব্যবহার শুরু করে ঠিকাদার। গত দেড় মাস ধরে এভাবে ঘর নির্মাণ কাজ চলছে।
আরও জানা গেছে, ঘর নির্মাণের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রয়োজনের তুলনায় সিমেন্টের পরিমাণ কম মিশিয়ে চলছে ইটের গাঁথুনি। গাঁথুনির পর দেয়ালে দেওয়া হচ্ছে না পানি। এর পাশাপাশি ব্যবহার করা হচ্ছে নিম্নমানের ইট।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ঠিকাদার জাকির হোসেন ওরফে হাজী নিজাম বলেন, একটি ঘর প্রতি বরাদ্দ ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা। আর ইটের হাজার হচ্ছে ১২ হাজার টাকা। এখনও স্যারের প্রতি ঘরে যাবে ৩০ হাজার টাকা।
এদিকে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য একটি কমিটিও রয়েছে বলে জানা গেছে। ওই কমিটির সভাপতি ইউএনও আর সদস্য সচিব উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও)। কমিটিতে কয়েক জন সদস্যও রয়েছেন। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে, ইউএনও একাই পুরো প্রকল্পের সব কিছু করছেন।
ঠিকাদার জাকির হোসেন আরও বলেন, আমি লেবার দিচ্ছি ইউএওন স্যার রড, সিমেন্ট, বালু, ইটসহ মালামাল কিনে দিচ্ছে। এটা কোনও লাইসেন্সের কাজ নয়, কথা শেষ, এটা ঊনাদের কাজ। ইউএনও স্যার কোন ঘরে ২০ হাজার লস দিচ্ছে কোন ঘরে ৪০ হাজার লস দিচ্ছে। প্রকল্প করতে হবেই মাস্ট।
তবে আশ্রয়ণ প্রকল্পের নির্মাণ সামগ্রী ঠিকাদারকে কিনে দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৎকালীন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জিয়াউল হক মীর। বর্তমানে তিনি চানিন্দা উপজেলার ইউএনও। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখন কিনে দিচ্ছে কিনা সেটা বিষয়। এখনও ইউএনও কিনে দিচ্ছে মনে হয়, জিজ্ঞেস করেন।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) জোবায়ের হোসেন বলেন, কাজে ক্রটি থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে বর্তমান কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. খোরশেদ আলম চৌধুরী বলেন, এমন হওয়ার কথা নয়। গত সপ্তাহে আমি গিয়েছিলাম।
ইউএনও সব মাল ক্রয় করে দিচ্ছে-ঠিকাদারের এমন ভাষ্যের জবাবে তিনি বলেন, ঠিকাদার ভুল বলছে সে সব কিছু কিনবে। আমি ঠিকাদারকে কালকে আমার অফিসে ডাকাব।
ইউএনও আরও বলেন, ‘আমি তাঁর কাছ থেকে ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে অঙ্গীকার নামা নিয়েছি। যদি কোনও দুই নম্বর কিছু করে। ডিজাইন অনুসারে কাজ না করে তাহলে তাকে আমি বিল দিব না।’
এসআইএইচ