চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন কি অধরাই থেকে যাবে জেলেপল্লীর মেয়ে মারুফার?
চরম দরিদ্র্যতাকে উপেক্ষা করে জেলেপল্লীর মেধাবী শিক্ষার্থী মারুফা খাতুন সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়েছে। সে সাতক্ষীরার তালা মহিলা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। কিন্তু আর্থিক সংকটের কারণে মেডিকেল কলেজে ভর্তি হতে অনিশ্চিয়তা দেখা দিয়েছে এই মেধাবী শিক্ষার্থীর।
মারুফার বাবা আজিজ বিশ্বাস বলেন, 'আমি দিন আনি, দিন খাই। অনেক দিন না খেয়ে দিন কাটাই। আমার বড় মেয়ের কলেজের স্যার ও এলাকার লোকজন বলাবলি করছে, মারুফা নাকি মেডেকেল চান্স পেয়ে। আমার কাছে তো কোনো টাকা নেই, কেমন করে মেয়েকে ভর্তি করাবো। কিছুই ভেবে পাচ্ছি না। শুনলাম, ভর্তি হতে নাকি ২০-৩০ হাজার টাকা লাগবে। এত টাকাতো আমার কাছে নেই।
জেলেপল্লীর মেয়ে মারুফা মাধ্যমিক পরীক্ষায় তালা এজেএইচ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে পরীক্ষা দিয়ে জিপিএ-৫.০০ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়ে ভর্তি হয় তালা মহিলা কলেজে। সেখান থেকে এবার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়ে কৃতকার্য হয়।
মারুফা খাতুন অদম্য ইচ্ছা শক্তি নিয়ে এমবিবিএস ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষায় ৭৪ টেস্ট স্কোর পেয়ে ৩৫৩৪ মেরিট পজিশনে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজে চান্স পেয়েছেন।
তালা উপজেলার সদর ইউনিয়নের জেয়ালা নলতা গ্রামের নিকারীপাড়া (জেলে পল্লীর) আর্থিক ভাবে অনাটনের পরিবার মো. আজিত বিশ্বাস ও গৃহিণী তাছলিমা বেগমের দম্পর্তির ৩ কন্যার মধ্য বড় কন্যা মারুফা। পরিবারটির নুন আনতে পানতা ফুরানোর মতন। বাবা আজিত বিশ্বাস পরিবারের একমাত্র উর্পাজনকারী ব্যক্তি।
এ বিষয়ে তালা মহিলা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সাইফুল ইসলাম জানান, মারুফার পরিবার দরিদ্র হলেও তার পড়াশোনায় করার ইচ্ছা শক্তি ছিল প্রবল। সেই প্রবল ইচ্ছা শক্তিকে কাজে লাগিয়ে ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় মারুফা খাতুন সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ চান্স পেয়েছে।
মারুফা খাতুন বলেন, আমার পরিবার দারিদ্র হওয়ার সত্ত্বে পড়াশোনার প্রতি প্রবল ইচ্ছাশক্তি নিয়ে আজ এ পর্যায়ে পৌঁছতে পেড়েছি। অনেক কষ্ট করে পড়াশোন করেছি। মা-বাবাসহ কলেজের শিক্ষকদের মুখ উজ্জ্বল করেছি। আপনারা সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।
মেধাবী মারুফা খাতুনকে আর্থিকভাবে সাহায্য করতে ০১৩০০৬৩২৯৫৮ (মারুফার বাবা) যোগাযোগ করতে পারেন।
এমএসপি