শেরপুরে অটোরিকশাচালক হত্যা মামলায় দুজনের কারাদণ্ড
শেরপুরে অটোরিকশাচালককে হত্যা মামলায় দুজনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়েছেন আদালত। তাদের মধ্যে সাগর (২৫) নামে এক যুবককে ৪২ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও মিল্টন (২৪) নামে অপর যুবককে ৯ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এদিকে একই মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় রেজুয়ান (২৪) নামের অপর এক আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে। বুধবার (৬ এপ্রিল) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ আল মামুন এ সাজা দেন।
দণ্ডিত সাগর শেরপুর সদর উপজেলার যোগিনীমুরা ডাকাতপাড়া এলাকার শাজাহান আলীর ছেলে ও মিল্টন শহরের দমদমা কালীগঞ্জ মহল্লার বাদশা মিয়ার ছেলে।
মামলার নথি সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের ৭ মার্চ সন্ধ্যায় ভাড়ায় নেওয়া একটি অটোরিকশা নিয়ে শেরপুর শহরের দমদমা কালীগঞ্জ এলাকা থেকে বের হয় অটোচালক আব্দুর রাজ্জাক। কিন্তু গভীর রাতেও তিনি বাড়িতে না ফেরায় তার খোঁজ নিতে গিয়ে নিজের ব্যবহৃত মোবাইলটি বন্ধ পায় পরিবারের লোকজন। পরে জেলা কারাগার মোড় থেকে সাগর ও মিল্টন তাকে ভাড়ায় পার্শ্ববর্তী আখের মামুদের বাজার এলাকায় নিয়ে গেছে-প্রত্যক্ষদর্শীদের দেওয়া এমন তথ্য থানায় জানানো হয়। রাতেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে মিল্টনের বসতঘর থেকে রক্তাক্ত জামা-কাপড়, তার বাড়ির পাশের এক কবরস্থান থেকে ছিনতাই হওয়া অটোরিকশা এবং পরদিন ভোরে পার্শ্ববর্তী মোবারকপুর এলাকার একটি ইটের ভাটা থেকে ইট দিয়ে অর্ধঢাকা অবস্থায় আব্দুর রাজ্জাকের ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করে। পরে ওই ঘটনায় রাজ্জাকের স্ত্রী সাজেদা বেগম বাদী হয়ে মিল্টন, সাগর ও রেজুয়ানকে আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় গত ১৩ মার্চ মিল্টন পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
পরে একই বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর ওই তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন সদর থানার এসআই আনছার আলী। বিচারিক পর্যায়ে মামলার বাদী, চিকিৎসক, জবানবন্দি গ্রহণকারী ম্যাজিস্ট্রেটসহ ১৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।
রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে দায়রা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট চন্দন কুমার পাল জানান, দণ্ডিতদের মধ্যে আসামি সাগরকে হত্যার দায়ে যাবজ্জীবন (৩০ বছর) কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড ও অনাদায়ে আরও ৩ মাস, ছিনতাইয়ের দায়ে ৭ বছর কারাদণ্ড এবং ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড ও অনাদায়ে আরও এক মাস এবং আলামত গোপন করার দায়ে ৫ বছর কারাদণ্ড এবং ৩ হাজার টাকা অর্থদণ্ড ও অনাদায়ে আরও ১৫ দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সব দণ্ডই একটির পর আরেকটি কার্যকর হবে। হত্যার দায় থেকে মিল্টনকে অব্যাহতি দিয়ে ছিনতাইয়ের দায়ে ৬ বছর ৩ মাস কারাদণ্ড এবং ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড ও অনাদায়ে আরও এক মাস এবং আলামত গোপন করার দায়ে ৩ বছর কারাদণ্ড এবং ৩ হাজার টাকা অর্থদণ্ড ও অনাদায়ে আরও ১৫ দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তার ওই সাজা একইসঙ্গে কার্যকর হবে। সেই সঙ্গে ইতিপূর্বের ভোগকৃত হাজতবাসকাল ওই দণ্ড থেকে বাদ যাবে। এদিকে মামলায় রেজুয়ান নামে অপর এক আসামি গ্রেপ্তার হয়ে জামিনে গেলেও সাগর শুরু থেকেই পলাতক থাকে। আর মিল্টন গ্রেপ্তারের পর থেকে কারাগারে রয়েছে।
এসআইএইচ