পথচারী বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ গেল কাউন্সিলরের
জীবনের শেষ মুহূর্তেও মানুষকে বাঁচাতে নিজের জীবন উৎসর্গ করলেন রুবেল। পথচারীকে বাঁচাতে নিজেই মৃত্যুকে বেছে নিলেন। তাইতো তার অন্তিম যাত্রায় সকলেই ফেলেছে চোখের জল। শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় কাউন্সিলর রুবেলকে বিদায় জানিয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। রুবেল পৌর শহরের চিকনমাটি এলাকার বাবলু রহমানের ছেলে ও ডোমার পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর।
নীলফামারীর জলঢাকায় মোটরসাইকেলের সঙ্গে ট্রাকের সংঘর্ষে ডোমার পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিল রুবেল ইসলাম (৩৩) নিহত হয়েছেন। সোমবার (১৭ এপ্রিল) রাত ৯ টার দিকে জলঢাকা-ডোমার সড়কের সলেমানের চৌপতি ও তিনবটের মধ্যবর্তী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার সকাল ১০ টার দিকে ডোমার মহিলা কলেজ মাঠে নামাজে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত দুই দিন থেকে রুবেলের শ্বাশুড়ি অসুস্থ্য হয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন। সোমবার দুপুরে স্থানীয় দুলাল হোসেনকে নিয়ে অসুস্থ শাশুড়িকে দেখতে যান তিনি। শাশুড়ীকে দেখে রংপুর থেকে ফেরার পথে জলঢাকায় ইফতার শেষে চা খেয়ে ডোমারের উদ্দেশ্যে রওনা দেন।
জলঢাকা-ডোমার সড়কের তিন বট এলাকায় তিন পথচারীকে দুর্ঘটনার হাত থেকে বাঁচাতে গিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে মোটরসাইকেলের ব্রেক চাপলে রংপুর গামী পাথর বাহী ট্রাকের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে চালক রুবেল মাথায় আঘাত পেয়ে ঘটনাস্থলে মারা যান। এসময় বাইকে থাকা আরোহী দুলাল আহত হন। স্থানীয়রা আহত আরোহীকে উদ্ধার করে ডোমার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। বর্তমানে তিনি সুস্থ আছেন।
জলঢাকা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) ফিরোজ কবীর বলেন, তিনজন পথযাত্রীকে বাঁচাতে গিয়ে ট্রাকের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষে কাউন্সিলর রুবেল মাথায় আঘাত পেয়ে ঘটনাস্থলে মারা যান। অপর আরোহী সুস্থ আছেন। এ বিষয়ে একটি ইউডি মামলা হয়েছে। রুবেলের আকস্মিক মৃত্যুর খবরে উপজেলার সর্বত্র শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
হাজার হাজার মানুষ তার জানাযায় অংশ নেয় চোখের জলে। মিথুন নামে তার এক বন্ধু জানায়, রুবেল ছোটবেলা থেকেই মানুষের বিপদে ছুটে যেত। নানা সামাজিক কাজে সব সময় সে মানুষের বিপদে সাথে থেকেছে। মৃত্যুর শোষ বেলায়ও মানুষকে বাঁচাতে নিজের প্রান উৎসর্গ করোছেন। তিনি আরো বলেন, আজ থেকে আর কারো বিপদে সে আর ছুটে আসবেনা। ঘাতক ট্রাক তার প্রান কেড়ে নিয়েছে।
এএজেড