ত্যাজ্য করবে বলায় বাবাকে পিটিয়ে হত্যা
ফেনীর পরশুরামে ত্যাজ্য করার কথা বলায় বাবাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে ছেলে। বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১০টায় নিজ বাড়িতে এ ঘটনাটি ঘটে। পরে রাত সাড়ে ১২টায় ফেনী ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। এ ঘটনায় নিহতের ছেলেসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
নিহত বাবার নাম আবদুল মমিন (৬৫)। তিনি পরশুরাম উপজেলার চিথলিয়া ইউনিয়নের পূর্ব আলকা গ্রামের তাজু কন্ট্রাক্টরের পুরাতন বাড়ির বাসিন্দা ছিলেন।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, পরশুরামের চিথলিয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড পূর্ব অলকা গ্রামের বাসিন্দা আবদুল মমিনের এক ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। ছেলে-মেয়েদের বিয়ে হয়েছে। ছেলে মো. ফারুক ওরফে রাজিব (৩৫) পেশায় একজন দলিল লেখক। ছেলের সাথে বাবার ভালো সম্পর্ক ছিল না। আবদুল মমিন ও তার স্ত্রী গ্রামের বাড়িতে থাকতেন। আর ছেলে মো. ফারুক স্ত্রী-সন্তান নিয়ে পরশুরাম উপজেলা সদরে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন।
বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে মো. ফারুক রাজিব তার শ্যালক আবদুল মজিব সুমনকে সঙ্গে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে যান। বৃদ্ধ আবদুল মমিন তখন ঘরে ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচিছলেন। এ সময় ঘরে ঢুকেই ছেলে তার বাবার কাছে জানতে চান-তার মাকে নির্যাতন কেন করা হয়। এ নিয়ে বাবা-ছেলের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও তর্কবিতর্কের এক পর্যায়ে বাবা ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে (ছেলে) ত্যাজ্য পুত্র করবে বলে জানায়। এ কথা শুনে ছেলেও ক্ষুব্ধ হয়ে ঘরে থাকা রান্নার লাকড়ি দিয়ে বাবাকে এলোপাথারি পিটিয়ে মাথা ফাটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। এরপর মাকে শিখিয়ে দেন ‘বাড়িতে ডাকাতের হামলায় তার বাবা আহত হয়েছে’। তার পর ছেলে ফারুক ও তার শ্যালক সুমন দ্রুত বাড়ি থেকে চলে যায়। মায়ের চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসে এবং বৃদ্ধ আবদুল মমিনকে মুমূর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। পরে সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে দ্রুত ফেনী জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
ফেনী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তির পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত সাড়ে ১২টায় আবদুল মমিন মারা যান। ময়নাতদন্তের জন্য তার লাশ হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।
এ ঘটনায় নিহতের মেয়ে পনি আক্তার বাদী হয়ে পরশুরাম মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ রাতেই অভিযান চালিয়ে ছেলে মো. ফারুক রাজিব ও তার শ্যালক আবদুল মজিব সুমনকে গ্রেপ্তার করে।
এ ব্যাপারে থানায় হত্যা মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন পরশুরাম মডেল থানার ওসি মো. সাইফুল ইসলাম। তিনি জানান, রাতেই ছেলে ও তার শ্যালককে গ্রেপ্তার করা হয়ে। লাশ মর্গে রয়েছে। গ্রেপ্তার দুইজনকে শুক্রবার ফেনীর আদালতে পাঠানো হবে।
এসআইএইচ