নালিতাবাড়ীতে বন্য হাতির তাণ্ডবে হুমকির মুখে বোরো ধান
ভারতীয় বন্য হাতির তাণ্ডবে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্তবর্তী গারো পাহাড়ের কৃষকরা। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার পর হাতির দল নেমে আসে পাহাড় থেকে। তাণ্ডব চালায় ফসলি জমিতে। ফসল খেয়ে ও পা দিয়ে পিষিয়ে নষ্ট করছে বোরো আবাদ। এতে উঠতি ফসল হারিয়ে ক্ষতির মুখে পড়েছেন ওই এলাকার কৃষকরা।
এ অবস্থায় ঢাকঢোল বাজিয়ে ও আগুন জ্বালিয়ে হাতি তাড়ানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হচ্ছেন এলাকাবাসী।
শুক্রবার (৭ এপ্রিল) ওই এলাকায় গিয়ে জানা গেছে, গত দুই সপ্তাহ ধরে বন্য হাতির বিশাল একটি দল অবস্থান করছে ভারতীয় মেঘালয় রাজ্যের সীমান্তঘেষা দলদামা-জমটিলার পাহাড়ি অঞ্চলে। হাতির এ দল প্রায় প্রতিদিন উপজেলার পানিহাটা এলাকার মারং গোঁফ ও তালতলা দিয়ে নেমে আসছে ফসলের জমিতে। পানিহাটা মৌজার বোরো আবাদ বিনষ্ট করে দিচ্ছে হাতি। কয়েক দিনের অব্যাহত হাতির অত্যাচারে পানিহাটায় বিনষ্ট হয়েছে ছয়জন কৃষকের প্রায় ৫ একর জমির বোরো ধান। এতে দিশেহারা হয়ে পড়ছেন সীমান্তের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক।
ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রতি মৌসুমে বন্য হাতির দল আমনের বীজতলা, আমনের ধানক্ষেত, বোরো আবাদ এমনকি গাছের কাঁঠাল পর্যন্ত খেয়ে সাবাড় করে ফেলে। খাদ্যের সন্ধানে অভুক্ত হাতিগুলো লোকালয়ে এসে ছুটোছুটি করে। হাতির তাণ্ডবে এখন তাদের রাত কাটে নির্ঘুম।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক হিলসন ডিও, জয়নাল আবদীন, মোতালেব হোসেন ও হযরত আলী জানান, প্রতি বছর বন্য হাতিগুলো ফসলের ব্যাপক ক্ষতি করে। তারা বন্যহাতির আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে সরকারের সহযোগিতার দাবি জানান।
পানিহাটা এলাকার এলিফ্যান্ট রেসপন্স টিমের সদস্য বিজার কুবি বলেন, হাতিগুলো পাহাড় থেকে দল বেঁধে নেমে আসে ফসলের ক্ষেতে। রাত জেগে পাহারা দিয়েও রক্ষা হচ্ছে না। বছরের পর বছর ধরে বন্য হাতির তাণ্ডবে পাহাড়ি মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।
ইউনিয়ন আনসার ভিডিপির কমান্ডার আব্দুর রেজ্জাক বলেন, সীমান্তবর্তী ক্ষুদ্র কৃষকদের উঠতি ফসল রক্ষায় দ্রুত সরকারি উদ্যোগ প্রয়োজন। শুধু ঢাক, ডোল পিটিয়ে ও মশাল জ্বালিয়ে কৃষকের ফসল রক্ষা হবে না।
ময়মনসিংহ বন বিভাগের মধুটিলা রেঞ্জ কর্মকর্তা আবদুল করিম বলেন, কয়েকদিন থেকে ২৫-২৬টির বন্য হাতির একটি দল পানিহাটা জঙ্গলে অবস্থান করছে। সন্ধ্যার পর পর হাতির দলটি ক্ষেতে নেমে পড়ে ফসলি জমি পা দিয়ে নষ্ট করে ফেলেছে। আমি ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের নিয়ম মেনে ক্ষতিপূরণের জন্য আবেদন করতে বলেছি।
এসএন