তিন মাসে দেশে বেকার বেড়েছে ৩ লাখ
তিন মাসের ব্যবধানে বছরের প্রথম প্রান্তিকে দেশে বেকারের সংখ্যা বেড়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি-মার্চ সময়ে আগের তিন মাস, অর্থাৎ ২০২২ সালের শেষ প্রান্তিকের (অক্টোবর-ডিসেম্বর) তুলনায় দেশে বেকার সংখ্যা ২ লাখ ৭০ হাজার বেড়েছে। চলতি বছরের মার্চ মাস শেষে দেশে বেকারের সংখ্যা ছিল ২৫ লাখ ৯০ হাজার মানুষ। যা গত বছরের ডিসেম্বর শেষে ছিল ২৩ লাখ ২০ হাজার।
মঙ্গলবার (২ মে) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রথম প্রান্তিকের শ্রমশক্তি জরিপে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের এনইসি সম্মেলনকেন্দ্রে এ উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম।
তিনি বলেন, শীতকালে কৃষি খাতে কাজের সুযোগ কম থাকে। এ জন্য প্রথম প্রান্তিকে বেকারের সংখ্যা বেড়েছে। তবে এখন ধান কাটার মৌসুম শুরু হয়েছে। এ খাতে কাজের সুযোগ অনেক বেড়েছে। ফলে দ্বিতীয় প্রান্তিকে বেকার মানুষের সংখ্যা আবার কমে আসবে।
বিবিএসের মহাপরিচালক মো. মতিয়ার রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রকল্প পরিচালক আজিজা রহমান।
শ্রমশক্তি জরিপ ২০২৩ এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে দেশে বেকার মানুষের সংখ্যা ছিল ২৫ লাখ ৯০ হাজার। এর মধ্যে পুরুষের সংখ্যা ১৭ লাখ ১০ হাজার এবং নারীর সংখ্যা ৮ লাখ ৮০ হাজার। ২০২৩ সালের প্রথম প্রান্তিকে দেশে বেকার শ্রমিক ছিল ৩ দশমিক ৫১ শতাংশ। পুরুষের ক্ষেত্রে তা ৩ দশমিক ৫৪ শতাংশ এবং নারীদের ক্ষেত্রে তা ৩ দশমিক ৪৬ শতাংশ। অপরদিকে, গত প্রান্তিকে দেশে বেকার শ্রমশক্তি ছিলে ৩ দশমিক ২ শতাংশ। এরমধ্যে পুরুষ ছিল সাড়ে ৩ শতাংশ ও মহিলা ছিল ২ দশমিক ৬ শতাংশ।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, শ্রমশক্তি জরিপ ২০২২ অনুযায়ী, ২০২২ সালে দেশে মোট বেকার মানুষের সংখ্যা ছিল ২৬ লাখ ৩০ হাজার। এর মধ্যে পুরুষের সংখ্যা ছিল ১৬ লাখ ৯০ হাজার এবং নারীর সংখ্যা ছিল ৯ লাখ ৪০ হাজার।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেকার জনগোষ্ঠী মূলত তারাই, যারা গত সাত দিনে কমপক্ষে এক ঘণ্টাও কাজ করেনি। কিন্তু গত সাত দিনে কাজ করার জন্য প্রস্তুত ছিলেন এবং গত ৩০ দিনে বেতন মজুরি বা মুনাফার বিনিময়ে কাজ খুঁজেছেন।
শ্রমশক্তি জরিপ ২০২৩-এর প্রথম প্রান্তিকের (জানুয়ারি-মার্চ) ফলাফল অনুযায়ী, দেশের শ্রমশক্তিতে নিয়োজিত মোট জনগোষ্ঠী প্রায় ৭ কোটি ৩৭ লাখ। তাতে কর্মে নিয়োজিত জনগোষ্ঠী বর্তমানে ৭ কোটি ১১ লাখ।
শ্রমশক্তির বাইরে জনগোষ্ঠী ৪ কোটি ৬৪ লাখ।
যারা কর্মে নিয়োজিত নয় বা বেকার হিসেবেও বিবেচিত নন তারাই মূলত শ্রমশক্তির বাহিরে। এর সংখ্যা হচ্ছে ৪ কোটি ৬৪ লাখ। যা আগের প্রান্তিকে ছিল ৪ কোটি ৬৭ লাখ।
এ ছাড়া বছরের প্রথম প্রান্তিকে দেশের যুব শ্রমশক্তি দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ৭৩ লাখ। শ্রমশক্তিতে নিয়োজিত মোট জনগোষ্ঠী ৭ কোটি ৩৬ লাখ। সেই হিসাবে দেশের মোট যুব শ্রমশক্তি হচ্ছে ২০ দশমিক ১৫ শতাংশ। গত প্রান্তিকে যুব শ্রমশক্তি ছিল ২ কোটি ৬০ লাখ। তবে গত বছরের প্রথম প্রান্তিকে তা ছিল ২ কোটি ৭৮ লাখ।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে— ৭ কোটি ১১ লাখ শ্রমশক্তির মধ্যে অর্থনৈতিক খাত অনুযায়ী কৃষিতে নিয়োজিত আছে সবচেয়ে বেশি ৩ কোটি ১৯ লাখ। এরপরই সেবা খাতে ২ কোটি ৬৯ লাখ ও শিল্প খাতে ১ কোটি ২২ লাখ ৫০ হাজার। ৩ মাস আগে বা গত প্রান্তিকে ৭ কোটি ৯ লালে মধ্যে কৃষিতে নিয়েজিত মানুষ ছিল ৩ কোটি ২৩ লাখ, এরপরই সেবাখাতে ছিল ২ কোটি ৫৬ লাখ ও শিল্পে কর্মে নিয়োজিত ছিল ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ।
জেডএ/আরএ/