ঋতু বদলায়, মানুষের মনও বদলায়: প্রধানমন্ত্রী
অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে সমালোচকদের উচিত জবাব দেওয়ার জন্য স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘তোমাদের মানুষের জন্য কাজ করতে হবে। উন্নয়নের কথাগুলো মানুষের কাছে তুলে ধরতে হবে। প্রত্যেকটা অঞ্চলে যেয়ে একেবারে মানুষের কাছে বার বার তুলে ধরতে হবে। এরা যারা যাই বলুক তারা ঘেউ ঘেউ করতেই থাকুক ওদিকে নজর দেওয়ার দরকার নাই। ওদের জবাব দেওয়ার দরকার নাই। আমাদের জবাব হবে সেটাই যে তারা এটা বলছে আমরা কি করেছি।’
বুধবার (২৭ জুলাই) দুপুরে স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে সরকার প্রধান এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, কে কি বলল সে জবাব না দিয়ে আমরা যে মানুষের জন্য উন্নয়ন করেছি এই উন্নয়নের কথাগুলো মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। বার বার বলতে হবে।
কারণ, ছয় ঋতুর দেশ তো আমাদের। দুই মাস পর পর ঋতু বদলায় মানুষের মনও বদলায়, আর ভুলেও যায়। তো দুই মাস পরে তো সব ভুলে যাবে, ভুলে যাতে না যায় আমরা কি কাজ করছি মানুষকে বার বার বলতে হবে। বোঝাতে হবে যে এই যে একটা শ্রেণি আছে অনবরত মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চায় তাদের এই জ্ঞানীদের কথা শুনে বিভ্রান্ত না হয় সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে। কারণ, ওরা বাংলাদেশে যে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে সেটা চায় না।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে যতটুকু সংস্কার সেটা তো আমাদের প্রস্তাব অনুযায়ী হয়েছে। স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স ছবিসহ ভোটার তালিকা যেন ভুয়া ভোটার না থাকে। এগুলো আমরাই করেছি। বিএনপি করেছে ভুয়া ভোটার, আমরা করেছি ভুয়া ভোটারহীন স্বচ্ছ ভোটার তালিকা। আগে স্টিলের বাক্স ছিল সেখানে কেউ ছিল মেরে ভরে ফেলতে পারত, এখন স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স আগে থেকে কেউ ভরতে পারবে না, দেখা যাবে।’
মানুষের ভোটের অধিকার সেটা মানুষের হাতে ফিরিয়ে দিয়েছি। মানুষের ভোট চুরি করলে জনগণ তাকে ক্ষমতায় থাকতে দেয় না। সেটা বিএনপি প্রমাণ পেয়েছে।
তিনি বলেন, ‘মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো একে একে বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। স্বেচ্ছাসেবক লীগের কাজ মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছি এগুলো প্রচার করতে হবে। উন্নয়নের কথাগুলো মানুষের কাছে তুলে ধরতে হবে। প্রত্যেকটা অঞ্চলে যেয়ে একেবারে মানুষের কাছে বার বার তুলে ধরতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘যারা যাই বলুক তারা ঘেউ ঘেউ করতেই থাকুক, ওদিকে নজর দেওয়ার দরকার নাই। ওদের জবাব দেওয়ার দরকার নাই। আমাদের জবাব হবে সেটাই যে তারা এটা বলছে আমরা কি করেছি। আমরা যেটা করেছি সেটা মানুষের কাছে নিয়ে গেলে ওটাই হবে আসল জবাব।’
অগ্রযাত্রা ব্যহত করতে অনেক চক্রান্ত আছে, আমি বিশ্বাস করি যত চক্রান্তই করুক বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রা কেউ ঠেকাতে পারবে না। আমরা যে অপপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছি, আমরা এগিয়ে যাব। ঝড় ঝাপ্টা আন্তর্জাতিক কারণে মোকাবিলা করতে হবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করে যেমন চলি বৈশ্বিক দুর্যোগ সেটা মোকাবিলা করে আমরা এগিয়ে যেতে পারব সেই বিশ্বাস আমার আছে, যোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, করোনাভাইরাস থেকে একটু উত্তরণ ঘটাতে যখন আমরা চেষ্টা করছি, তখন শুরু হয়ে গেলো ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধ। ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধ শুধু না সেই সঙ্গে স্যাংশন দেওয়া। পাল্টা পাল্টি স্যাংশন দেওয়ার ফলাফলা সারাবিশ্বে এখন খাদ্য ঘাটতি। বিশেষ করে জ্বালানী তেলের অভাব ভোজ্য তেলের অভাব। সারাবিশ্বে মুদ্রাস্ফীতি রক্ষা করতে উন্নত দেশগুলো হিমশিম খাচ্ছে। প্রত্যেকটা দেশে তারা বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী, জ্বালানী ব্যবহারে সাশ্রয়ী এমনকি ভোজ্য তেল কিনতে গেলে লন্ডনে নির্দিষ্ট পরিমাণ দেওয়া আছে।’
প্রত্যেকটা দেশ এই দৃশ্য। বাংলাদেশে যেন এরকম দৃশ্য না আসে সেজন্য আগাম পদক্ষেপ নিয়েছি। সবাইকে আহ্বান করেছি বিদ্যুতে সাশ্রীয় হতে, পানি ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে হবে, নিজেদের সঞ্চয় নিজেদের করতে হবে। বিশ্ব ব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিয়েছে তার ঢেউ থেকে বাংলাদেশ বাদ যাচ্ছে না। যায় না। আজকের পৃথিবীটা সেরকম। যেগুলো আমদানি নির্ভর সেগুলো তো আরও সমস্যা।
পরিবহন খরচ বেড়ে গেছে বিদ্যুতে ভর্তুকি দিচ্ছি, জ্বালানীতে ভর্তুকি দিচ্ছি। ভর্তুকি দিয়েই যাচ্ছি। তারপরও আমাদের লক্ষ্য উৎপাদন যেন অব্যাহত থাকে। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশ দিয়েছি যার যেখানে যতটুক জায়গা আছে চাষাবাদ করবেন। যার যতটুক জমি আছে উৎপাদন করতে পারবেন।
এসএম/এমএমএ/