দেশে আগামী ছয় মাসের জ্বালানি নিশ্চিত রয়েছে : বিপিসি
পেট্রোল পাম্পগুলোতে জ্বালানি তেল রেশনিং করা হচ্ছে, এমন খবরের মধ্যেই বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) বলছে, ডিজেল অকটেনসহ পর্যাপ্ত জ্বালানি রয়েছে বাংলাদেশে। বিপিসি চেয়ারম্যান এবিএম আজাদ জানিয়েছেন, আগামী ছয় মাসের তেল সরবরাহ নিশ্চিত করতে আমদানি শিডিউল করা আছে।
বুধবার একটি সংবাদ সম্মেলনে বিপিসির চেয়ারম্যান বলেন, পেট্রোল পাম্পগুলোয় গ্রাহকদের কম তেল দেয়ার কোন নির্দেশনা দেয়া হয়নি। তিনি বলেন, 'বাংলাদেশে যে পরিমাণ তেল আছে এবং আমদানির পথে রয়েছে, তাতে ছয় মাসের জ্বালানি নিশ্চিত রয়েছে। আর কোন তেল আমদানি না করলেও দেশে ৩২ দিনের ডিজেল ও ফার্নেস অয়েল রয়েছে'। এর বাইরে ৪৪ দিনের জেট ফুয়েল রয়েছে।
এবিএম আজাদ বলেছেন, ‘জ্বালানি তেলের আমদানি, মজুদ করা, সরবরাহ করার প্রক্রিয়াগুলো স্বাভাবিকভাবে চলমান রয়েছে। আগামী ছয় মাস এই স্বাভাবিক প্রক্রিয়া চলবে। যে পরিমাণ মজুদ রয়েছে, তা নিয়ে আশঙ্কা করার বা আতঙ্কিত হওয়ার কোন কারণ নেই।’
বাংলাদেশে প্রতিদিন ১৩ থেকে ১৪ হাজার টন ডিজেল ব্যবহার করা হয়ে থাকে। আমদানি করা ডিজেলের বড় অংশ পরিবহন খাত এবং কৃষিকাজে সেচের কাজে ব্যবহার হয়ে থাকে।
এবিএম আজাদ জানান, বর্তমানে দেশে ৩১ হাজার ৮৩৫ টন, অকটেন ১২ হাজার ২৩৮ টন, পেট্রোল ২১ হাজার ৮৩৩ টন, জেট ফুয়েল ৬২ হাজার ৮৯১ টন এবং ফার্নেস অয়েল ৮৫ হাজার ৪১ টন মজুদ রয়েছে। তিনি বলছেন, ‘যদি ধরে নেই, বিপিসি আর তেল আমদানি করলো না, তাহলে ডিজেল দিয়ে চলবে ৩২ দিন, অকটেন দিয়ে ৯ দিন, পেট্রোল দিয়ে ১৫ দিন, জেট ফুয়েল দিয়ে ৪৪ দিন আর ফার্নেস অয়েল দিয়ে চলবে ৪৪ দিন। কিন্তু বিপিসি কি আমদানি আজ বন্ধ করে দেবে? এটা কখনোই আমদানি বন্ধ করবে না। আগামী বিপিসির আগামী ছয় মাসের আমদানি পরিকল্পনা কনফার্ম করা আছে।’
আগামী এক থেকে দুই দিনের ভেতর আরও ৫০ হাজার টন অকটেন আসবে বলে তিনি জানান। সেই সঙ্গে দুই দিনের ভেতর ৩০ হাজার টন ডিজেলের একটি চালান আসছে বলে তিনি জানান।
দেশে জ্বালানি সংকট নিয়ে সংকট হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই।
বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়া ও বৈদেশিক মুদ্রার সংকটের কারণে জুলাই মাস থেকে কৃচ্ছতার পথে হাঁটতে শুরু করেছে বাংলাদেশের সরকার। সঙ্কটের জন্য বিশ্ববাজারে তেল এবং তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস বা এলএনজির চড়া দামকে দায়ী করছে সরকার।
ডিজেল বাঁচাতে তেলনির্ভর বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো আপাতত বন্ধ রেখেছে সরকার। ফলে বিদ্যুৎ ঘাটতিতে লোডশেডিং বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে জ্বালানি তেলের সংকট তৈরি হয়েছে বলে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। অন্ততঃ একটি পেট্রোল পাম্পে সীমিত আকারে তেল বিক্রির নোটিশ দেয়া হয়। তবে বিপিসি চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, এরকম কোন সিদ্ধান্ত তারা নেননি। যারা এরকম নোটিশ দিয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান।
সূত্র: বিবিসি বাংলা