দ্বাদশ সংসদের প্রস্তুতি নিতে আলোচনার দুয়ার খুলছে ইসি

আগামী বছর শেষে বা ২০২৪ সালের প্রথম দিকে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন হতে পারে। ওই সময়সীমা মাথায় রেখে প্রস্তুত হচ্ছে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বে গঠিত নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তাদের একটাই লক্ষ্য একাদশ সংসদের মত যেন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুলতে না পারে। সেজন্য সংশ্লিষ্ট সকল মহলের সঙ্গে বসে রোডম্যাপ ঠিক করবে ইসি। তারই ধারাবাহিকতায় ১৩ মার্চ থেকে সংলাপ শুরু করতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন। ১৩ মার্চ বিকাল ৩ টায় বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন ভবনে বুদ্ধিজীবীদের সঙ্গে বৈঠকের মধ্য দিয়ে আলোচনার দুয়ার খুলবে নতুন ইসি।
আলোচনার জন্য এরইমধ্যে বুদ্ধিজীবীদের একটি তালিকাও করেছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টিতে বুদ্ধিজীবী বলতে নির্বাচন নিয়ে কাজ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন অভিজ্ঞ শিক্ষক। জানাগেছে ৩০ জনের মতো শিক্ষাবিদ-বুদ্ধিজীবীর তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। তাদের প্রত্যেককে ফোন করে এবং ইমেলেইলের মাধ্যমে আমন্ত্রণপত্র পাঠাচ্ছে নির্বাচন কমিশন। তাদের পরামর্শ নিয়ে স্টেকহোল্ডারসহ বিভিন্ন মহলের সঙ্গে পরবর্তীতে ধারাবাহিক সংলাপে বসবে কমিশন।
বুধবার (৯ মার্চ) নির্বাচন ভবনের নিজ দপ্তরে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। তিনি বলেন, আগামী ১৩ মার্চ থেকে ধারাবাহিক সংলাপে বসবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। পর্যায়ক্রমে শিক্ষাবিদ, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, নির্বাচন বিশ্লেষক, সাংবাদিক ও রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে বসবে সংস্থাটি।
মো. আলমগীর বলেন, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন পরিচালনায় সবার পরামর্শের আলোকে তৈরি করা হবে রোডম্যাপ। সংলাপের মাধ্যমে সমস্যা চিহ্নিত করে করণীয় নির্ধারণ করা হবে। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যা যা প্রয়োজন তা করার চেষ্টা করা হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে মতবিনিময় করা হবে সবার শেষে।
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিশনকে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি। পরদিন তারা শপথ নিয়ে প্রথম অফিস করেন ২৮ ফেব্রুয়ারি। পুরোদমে এখনও কাজ শুরু করেনি কমিশন। এর মধ্যে জাতীয় স্মৃতীসৌধ, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন, সমাধিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন, ভোটার দিবস উদযাপন ও অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা করেছেন।
দায়িত্ব নেওয়ার পর এত তাড়াতাড়ি আগের কোনো কমিশন মতবিনিময় বা সংলাপে বসার উদ্যোগ নেয়নি। অবশ্য দায়িত্ব নিয়ে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বলেছিলেন- আমরা দলগুলোকে চা খাওয়ার আমন্ত্রণ জানাতে পারি।
নির্বাচন কমিশন সর্বশেষ বিভিন্ন মহলের সঙ্গে সংলাপে বসেছিলেন ২০১৭ সালে। সে বছর ৩১ জুলাই সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বসার মধ্য দিয়ে কার্যত ওই সংলাপ শুরু হয়েছিল। এরপর ৪০টি রাজনৈতিক দল, নারী নেতৃত্ব, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ও গণমাধ্যমের সঙ্গেও বসেছিল তৎকালীন কেএম নূরুল হুদার কমিশন।
সর্বশেষ সংলাপ থেকে আসা সুপারিশ গুলো দু’টো প্রধান ভাগে ভাগ করে নির্বাচন কমিশন। এর মধ্যে একটি অংশ নিজেদের এখতিয়ারভুক্ত। অন্য অংশটি সরকারের এখতিয়ারভুক্ত। কমিশন সরকারের এখতিয়াভুক্ত সুপারিশগুলো মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠায়। আর অন্যগুলো নিজেদের কর্মপরিকল্পনার ভেতর অন্তর্ভুক্ত করেন।
কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশনের অধীনেই আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
এসএম/এএস
