বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৭

আসোয়ান হাই ড্যাম থেকে আগলিকা দ্বীপের দূরত্ব পঁচিশ কিলোমিটারের মতো। পথে মোহামেদ তার মিশ্র আরবি-ইংরেজি ধারা বিবরণীতে ফিলাইয়ের আদি-অন্ত ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করছিল। অতীতকালে নীল নদে বড় ধরনের বন্যার সময় ফিলাই দ্বীপে প্রেমের দেবতা আইসিসের মন্দিরটি এমনিতেই মাঝে মাঝে জলমগ্ন হয়ে পড়তো। ষাটের দশকে আসোয়ানের নতুন বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হলে দ্বীপটি পুরোপুরি প্লাবিত হয়ে ফিলাইয়ের মন্দির চিরদিনের জন্য জলের তলায় চলে যাবার আশঙ্কা দেখা দিয়েছিল।

এ পর্যন্ত শুনে আমার মনে হলো, ভাগ্যিস ষাট দশকে মিশরের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানের সরকার মন্দির ডুবিয়ে দেয়াকে ইসলামের বিজয় মনে করে হাইড্যামের স্লুইসগেট খুলে দেয়নি। বরং ইওনেস্কোর সহযোগিতায় মন্দির কমপ্লেক্সের আসল রূপ এবং বিন্যাস অনুসরণ করে আগের অবস্থান থেকে ফিলাই টেম্পল নতুন দ্বীপটিতে সরিয়ে এনেছে। এই পুনর্বিন্যাসের ক্ষেত্রে সকল জ্যামিতিক মাপজোক, পিলার ও প্রাচীর, অভ্যন্তরের দেয়ালচিত্র এবং শিলালিপিসহ সকল স্থাপনা এতটা যত্নের সাথে নিখুঁতভাবে সংরক্ষণ করা হয়েছে যে আগে থেকে জানা না থাকলে স্থানান্তরের বিষয়টি কারো পক্ষেই বুঝতে পারা সম্ভব নয়।

আমরা যখন ফিলাই টেম্পল এনকোরেজে এসে পাহাড়ের গায়ে পার্কিং এলাকায় গাড়ি থেকে নামলাম তখন সূর্য কিছুটা পশ্চিম আকাশে আকাশে হেলে পড়েছে। দুপুরের রোদের কড়া তাপ আর নেই। দ্বীপে পৌঁছাতে হলে প্রবেশপথে যথারীতি পারের কড়ি পরিশোধ করেই নৌযানে উঠতে হবে। খুব দ্রুত মোহামেদের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হলে মেটাল ডিটেকটরের ছাঁকনি পেরিয়ে ভেতরে ঢুকে পড়লাম। ঘাটের পাথর বাধানো পথে এগিয়ে যাবার সময় দেখা গেল, দুপাশেই পসরা সাজিয়ে বসেছে মিনিয়েচার প্রত্নতত্ত্বের পসারি। তাদের আন্তরিক আহবান উপেক্ষা করেই আমরা একটা ইঞ্জিনচালিত নৌকায় উঠে বসলাম। নৌকাটি ছোট হলেও সহজেই পনের কুড়িজনের জায়গা হতে পারে। গাইড এবং মাঝি মাল্লাসহ আমরা মাত্র দশজন। ইঞ্জিনে গর্জন এবং নীলের জলে ঢেউ তুলে আগলিকা দ্বীপের উদ্দেশ্যে ছোট্ তরী ভেসে চললো। দ্বীপের নাম আগলিকা হলেও পুরো মন্দির কমপ্লেক্স এখনো ফিলাই নামেই পরিচিত, পুরোনো জায়গা ছেড়ে এলেও পুরোনো নাম একে ছেড়ে যায়নি।

মিনিট দশেকের এই জলপথের বাঁ দিকে কোথাও পাহাড়ের খাঁজের ভেতরে আবার কোথাও পাহাড়ের পায়ে ছোট বড় সুন্দর সব স্থাপনা, বাইরে রেলিং দিয়ে ঘেরা। ঘাটে ঘাটে স্পিডবোট অথবা ট্রলারের মতো ছোট নৌযান বাধা। ফিলাইকে কেন্দ্র করে এখানকার চমৎকার উপত্যকা জুড়ে গড়ে উঠেছে বিলাসি পর্যটকদের জন্য ব্যয়বহুল রিসর্ট কিংবা আয়েশী আমিরদের জন্য বিলাসবহুল ভিলা। পাহাড়গুলো দেখে মনে হয় লাইম স্টোন বা গ্রানাইট পাথরের টুকরো কেটে বিভিন্ন উচ্চতায় সাজিয়ে রাখা হয়েছে। তেমনি অনেকগুলো পাথুরে পাহাড় পেরিয়ে নীলের দ্বীপের কাছাকাছি গতি শ্লথ হতে হতে দেখলাম দ্বীপের পাড়ে পাথরের বড় বড় চাঁই এবং ছোট ছোট ঝোপের মতো সবুজ গাছের বেষ্টনী। সম্ভবত দ্বীপের ভূমিক্ষয় রোধ করতেই এই ব্যবস্থা।

নৌকা থেকে ঘাটে নেমে একটা লোহার সেতু পেরিয়ে বাঁ দিকে খানিকটা হেঁটে পৌঁছে গেলাম ফিলাইয়ের মন্দির চত্বরে। সামনে দেবী আইসিসের বিশাল মন্দির আর দু পাশে দীর্ঘ কলামের সারি। প্রায় অক্ষত স্তম্ভগুলোতে খোদাই করা দৃশ্যচিত্র এবং নকশার কারুকাজ কয়েক হাজার বছর পরে এখনও টিকে আছে। আইসিসের মন্দিরের উঁচু দেয়ালে বড় আকারের দৃশ্যপট তার উচ্চতা ও নির্মাণশৈলীর কারণে বিস্ময় জাগায়।

ফারাও যুগের মিশরের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলোর মধ্যে সম্ভবত সবচেয়ে আকর্ষণীয় ফিলাই টেম্পল চারিদিকে জলপরিবেষ্টিত ছোট্ট সুন্দর দৃষ্টি নন্দন একটি দ্বীপ। এর চৌহদ্দি মাত্র সাড়ে চারশ মিটার দীর্ঘ এবং দেড়শ মিটার চওড়া। স্বল্প পরিসরের গ্রানাইট পাথরের ভিত্তিভূমিতে পলি মাটির স্তর জমে জেগে ওঠা ঊর্বর ভূখণ্ডে দিগন্ত রেখায় অপূর্ব দৃশ্য সৃষ্টি করে করে প্রাচীনযুগ থেকে গ্রেকো রোমান সাম্রাজ্যের সাতশ বছর এবং মধ্যযুগে মিশরে আরবের মুসলিম শাসনের প্রায় হাজার বছর পেরিয়ে আজ পর্যন্ত দেশি বিদেশি পর্যটকের কৌতূহলের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ভাই শেথের হাতে নিহত স্বামী ওরেসিসের জীবন ফিরিয়ে আনার জন্যে আইসিসের পূজায় নিবেদিত সর্বশেষ মন্দিরগুলোর একটি ফিলাই। আইসিস এবং ওরেসিসের পুত্র সন্তান হোরাস মিশরিয়দের গুরুত্বপূর্ণ দেবতা। সেই কারণেই আইসিস ‘মাদার অফ গডস’ নামেও নামেও পরিচিতি লাভ করেছিলেন। আজকাল ‘মাদার অফ চ্যারিটি’ বা ‘মাদার অফ ডেমোক্রেসি’ বলে যেসব পদক, পুরস্কারের কথা শোনা যায় তা বোধহয় ফিলাই থেকেই এসেছে।

মোহামেদ যখন বাঁ দিকের কলামগুলোর সামনে দাঁড়িয়ে আমাদের চারজন সহযাত্রীকে ইতিকথা শোনাচ্ছেন তখন রানাভাই মূল মন্দিরে ঢুকে পড়েছেন। আমি ছবি তুলতে তুলতেই দেখছিলাম, আইসিসের মন্দিরের সামনে দুজন তরুণ তরুণী নানা ঢংয়ে সেলফি তোলার কসরৎ করছে। হঠাৎ তরুণটি সামনে এগিয়ে এসে তার ভাঙা ইংরেজির সাথে যথেষ্ট বিনয় যুক্ত করে যুগলের দুই একটি ছবি তুলে দেয়ার অনুরোধ জানালো। মোবাইল ফোনে ছবি তুলতে আমি সাচ্ছন্দ্যবোধ করি না, তারপরেও বিদেশি তরুণের অনুরোধ উপেক্ষা না করে দু তিনটি ছবি তুলে মোবাইল ফোন ফিরিয়ে দেবার সময় জিজ্ঞেস করে জানলাম যুগলের আগমন রাশিয়া থেকে।

মন্দিরের ভেতরে ঢুকে পাথরের প্রশস্ত দেয়াল, ভারি কলাম ও বিমসহ পুরো কাঠামো দেখে এর হাজার হাজার বছর টিকে যাবার মজবুত নির্মাণ সম্পর্কে ধারণা করা যায়। বোঝা যায় সে সময়ের স্থাপত্যের শক্তি ও স্থায়ীত্বের রহস্য। তবে সবচেয়ে আকর্ষণীয় মন্দিরের দেয়ালের গায়ে রিলিফের কাজ এবং হায়রোগ্লাফিক লিপিতে উৎকীর্ণ কথা কাহিনি কিংবা কোনো তথ্য পরিচয়। শিল্প সুষমায় সমৃদ্ধ প্রতিটি ছবিতে প্রকাশ পেয়েছে জীবনযাত্রার নানা প্রসঙ্গ। অভ্যন্তরের কক্ষগুলোতে আলোর পরিকল্পিত বিন্যাসের ফলে রিলিফের দৃশ্যাবলী দর্শনার্থীদের সামনে ফুটে উঠেছে তার পূর্ণ রূপ বৈচিত্র্য নিয়ে। ভেতরের একটি কক্ষে পাথরের বেদী আছে কিন্তু কক্ষের দেয়ালচিত্র ছাড়া এই বেদীতে অথবা অন্য কোনোখানে কোনো মূর্তি নেই। প্রাচীন দেব দেবী মূর্তির বিকৃতি অথবা পুরোপুরি ধ্বংসের কাজটি সম্পন্ন করেছে আদিযুগের খ্রিস্টান ধর্মধারী এবং তাদের অনুসারিরা। খ্রিস্টান শাসনামলেও দীর্ঘকাল সনাতন ধর্মের চর্চা টিকে ছিল ফিলাইয়ের মন্দিরকে কেন্দ্র করে এবং এটিই ছিল শেষ সনাতন মন্দির। দেশ থেকে পৌত্তলিকতার চিহ্ন মুছে দিয়ে যিশুর রাজত্ব কায়েম করার পবিত্র কর্ম সম্পাদন করে স্বর্গ লাভের অভিপ্রায়ে ৫৫০ খ্রিস্টাব্দে প্রাচীন মন্দির এবং মন্দিরর পূজা পাট আনুষ্ঠানিকভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়। ফিলাইয়ের মূল মন্দিরটি তখন ব্যবহৃত হতো গির্জা হিসাবে। তবে শেষপর্যন্ত ফারাওদের দেব-দেবী অপসারণ করে মা মেরি বা স্বয়ং যিশুখ্রিস্টের মূর্তি কেন স্থায়ীভাবে স্থাপন করা সম্ভব হয়নি মোহামেদের কাছে সে প্রশ্নের কোনো উত্তর ছিল না।

প্রথম মন্দির পার হয়ে ভেতরের আয়তকার চত্বরে প্রবেশের পরেও দুপাশের দীর্ঘ কলামের সারি এবং সামনে আরো একটি বিপুলায়তন ভবন স্থাপত্যের চিরায়ত শৈল্পিক নির্মাণরীতির কথাই মনে করিয়ে দেয়। দ্বিতীয় ভবনের বাইরের চত্বরে ঠিক নদীর ধার ঘেঁষে আরো একটি ছোট আকারের স্থাপনা। সন্দেহ নেই এটিও কোনো নির্ধারিত দেবতার উপাসনালয়। বর্তমানে এর স্তম্ভ এবং কার্নিশ থেকে কিছু অংশ খসে পড়েছে, কিন্তু তাতে কোনো সৌন্দর্য হানি হয়নি, বরং বেশ একটা প্রাচীন প্রত্নতাত্ত্বিক গাম্ভীর্য সৃষ্টি করেছে। কয়েকটি খেজুর গাছ পাথরের তৈরি ছোট কয়েকটি বেদী এবং নদীর বুকে কিছুটা দূরে এবড়ো থেবড়ো পাথরে সাজানো পাহাড়ের চুড়া মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে। এই স্থাপনাটির নিচেই নদীতে চলছে জলযান আর মন্দির ঘিরে নানা দেশের বিভিন্ন বয়সের পর্যটকের ভিড়।

পশ্চিম আকাশে পাহাড়ের আড়ালে সূর্য অস্তাচলে গেলেও নদীর জলে ছড়িয়ে দিয়ে গেছে লাল রঙ। আমরা দুজন ছোট মন্দিরটি থেকে বাঁ দিকে ঘুরে নদীর পাড় ঘেঁষে পুরো পশ্চিম চত্বর ঘুরে এলাম। বন্যার পানি এবং নদীর ভাঙন ঠেকাতে এদিকে বেশ খানিটা অংশে পাথরের স্ল্যাব বসানো। ফিলাই মন্দির ঘুরে দেখার নির্ধারিত সময় শেষ হয়ে এসেছিল। ঘড়ির সময় অনুসারে আমরা ইতিমধ্যেই পাঁচ মিনিট দেরি করে ফেলেছি। পেছন দিকের সংকীর্ণ পথ দিয়ে আমরা আবার প্রথম আইসিসের মন্দির চত্বরে এসে পড়লাম। এদিকে দলের অন্য পাঁচজনের কারো দেখা নেই। আমাদের ভরসা ছিল রানা ভাই যখন আছেন, সেক্ষেত্রে মোহামেদ তার দলবল নিয়ে নিশ্চয়ই এই প্রাচীন মন্দিরের প্রত্নতাত্ত্বিক ধ্বংসাবশেষে আমাদের ফেলে রেখে চলে যেতে পারবে না।

তাড়াহুড়ো করে ঘাটে পৌঁছে কারোরই দেখা পেলাম না। গোটা দশ বারো নৌকা ভাসছে, কিন্তু দুই একজন নাবিক বা তাদের সহকারি ছাড়া কোনো নৌকাতেই যাত্রী নেই। তাহলে আমাদের নৌকা কি এরই মধ্যে ছেড়ে চলে গেছে! পারের কড়ি দিয়ে নৌকায় উঠলেও মাঝি-মাল্লার নাম বা নৌকার নম্বর কোনোটাই তো জেনে নিইনি। তারপরেও দ্রুতই নিজেদের নৌকা খুঁজে পেলাম। আগলিকা দ্বীপে আসার সময়েই লক্ষ করেছিলাম, নৌকার পাটাতনে যে মলিন কার্পেট পাতা, তাতে ডোরাকাটা বাঘের ছাপ। আমি বোধহয় কাউকে বলেও ছিলাম, আসোয়ানের মরুভূমিতে রয়েল বেঙ্গল টাইগার এলো কোথায় থেকে! সেই বাঘের ছাপওয়ালা নৌকা ছোট ছোট ঢেউ তুলে জলে ভাসছে, কিন্তু চালক বা যাত্রী কারোরই ফিরে যাবার তাড়া আছে বলে মনে হলো না।

ঘাটে পৌঁছাবার সংযোগ সেতু পার না হয়ে আমরা নৌকা থেকে নেমে ডকের উপরে দাঁড়িয়ে সহযাত্রীদের খুঁজতে যাবো কিনা ভাবছিলাম। বিস্তৃত পাটাতনে বিচিত্র স্যুভেনিয়ার ছড়িয়ে বসা ফেরওিয়ালাদের একজন আমাদের ধরে বসলো। প্রথমেই ‘হ্যালো ইন্ডিয়া’ বলে খাতির জমাতে চেষ্টা করতেই বললাম ‘নো ইন্ডিয়া।’ এরপরের প্রশ্ন ‘হোয়াট কান্ট্রি?’ বললাম, ‘বংলাদেশ’! প্রথমে বিড়বিড় করে নিজের মনে কয়েকবার আউড়ে নিল বাংলাদেশ। তারপর থেকে প্রতি এক দুই মিনিট পরপরই সে চিৎকার করে বলতে শুরু করলো ‘বাংলাদেশ’ ‘বাংলাদেশ’! সে কি প্রথমবার আমাদের দেশের নাম শুনে তা মুখস্ত করার চেষ্টা করছিল, নাকি বাংলাদেশ শব্দের দ্যোতনায় মুগ্ধ হয়ে বারবার ‘বাংলাদেশ বলে স্লোগান দিচ্ছিল জানি না, তবে সে তার জিনিসপত্র বিক্রির চেষ্টা না বাংলাদেশের নাম গানে মগ্ন থাকায় আমরা বেশ মজা পেয়েছিলাম।

আমরা যখন সেতু পার হয়ে উপরে উঠতে যাচ্ছি তখন মোহামেদ তার তার সঙ্গী সাথীদের নিয়ে ফিরে আসছে। রানা ভাই তখনও বেশ কিছুটা দূরে। একে একে সকলে উঠে পড়লে এবারে ফিলাই মন্দির হাতের বাঁয়ে রেখে দু পাশের পাহাড়ের মাঝখান দিয়ে পথ করে নৌকা চলতে শুরু করলে রানা ভাই বাহরাইন এবং দুবাই থেকে আসা দুই সহযাত্রীর সাথে আলাপ জুড়ে দিলেন। আমি দেখছিলাম সন্ধ্যার ম্লান আলোয় পশ্চিমের লাল আকাশের পটভূমিতে ফিলাই মন্দিরের পিলারগুলো কী অসাধারণ সুন্দর দৃশ্য রচনা করেছে! ‘মিশরের মুক্তা’ নামে খ্যাত এই মনোরম দ্বীপে না এলে কখনোই এই দৃশ্যের সাথে পরিচয় ঘটতো না।

ফিলাই এনকোরেজ থেকে আসোয়ান শহরে পৌঁছাতে আধা ঘণ্টার বেশি সময় লাগেনি। এরই মধ্যে সড়কের বাতিগুলো জ্বলে উঠেছে। আগেই কথা ছিল আমরা কোনো একটা ডিপার্টমেন্ট স্টোরে নেমে যাবো। নির্দেশনা অনুসারে মোহামেদ আমাদের আল রায়াহ ডিপার্টমেন্ট স্টোরের সামনে নামিয়ে দিয়ে বাকি চারজনকে ঘাটে পৌঁছে দিতে যাবার সময় বলে গেল তোমাদের ক্রুইজ শিপ ওই যে দেখা যায়, এখান থেকে পায়ে হাঁটা দূরত্বে। আমাদের যে কোনো মাঝারি ধরনের ডিপার্টমেন্ট স্টোরের মতো ডাল-ডাল, মাছ-মাংস, শাক-সবজির মতো খাদ্য পানীয় থেকে শুরু করে প্রসাধন সামগ্রী, রান্নার সরঞ্জাম, বাসন-কোসন, প্রয়োজনীয় সব কিছুই এখানে বিভিন্ন অংশে নির্দিষ্ট তাকে সাজানো। আমরা আসলে নির্ভেজাল বোতলজাত পানি অর্থাৎ ড্রিংকিংওয়াটার কিনতে এসেছিলাম।

(চলবে)

এসএ/

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১

Header Ad

খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ

ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে কুশল বিনিময় করেছেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে তাদের এ কুশল বিনিময় হয়।

সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়া পৌঁছালে উপস্থিত সবাই তাকে স্বাগত জানান। অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৩ সমন্বয়ক ও সরকারের উপদেষ্টা তার পাশে এসে দাঁড়ান এবং শারীরিক খোঁজখবর নেন। এ সময় খালেদা জিয়া তাদের অভিনন্দন জানান এবং দেশকে এগিয়ে নিতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার পরামর্শ দেন।

এ সময় এই ৩ উপদেষ্টা বিএনপি চেয়ারপারসনের কাছে দোয়া চান এবং সরকারের সংস্কার কাজে তার সর্বাত্মক সহযোগিতা চান।

এদিকে সেনাকুঞ্জে গেলে খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্ত্রী খালেদা জিয়া এখানে এসেছেন। একযুগ তিনি আসার সুযোগ পাননি। আমরা গর্বিত এই সুযোগ দিতে পেরে। দীর্ঘদিনের অসুস্থতা সত্ত্বেও বিশেষ দিনে সবার সঙ্গে শরিক হওয়ার জন্য আপনাকে আবারও ধন্যবাদ। আপনার আশু রোগমুক্তি কামনা করছি।

Header Ad

দেশের বাজারে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম

ছবি: সংগৃহীত

আবারও স্বর্ণের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। এবার ভরিতে ১ হাজার ৯৯৪ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা আজকেও ছিল এক লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৯ টাকা।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাজুস। শুক্রবার (২২ নভেম্বর) থেকেই নতুন এ দাম কার্যকর হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্য বেড়েছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

নতুন দাম অনুযায়ী, প্রতি ভরি ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম পড়বে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩৩ হাজার ৯৮ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১৪ হাজার ৮৬ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯৩ হাজার ৬৭৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস আরও জানায়, স্বর্ণের বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে গয়নার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে।

স্বর্ণের দাম কমানো হলেও দেশের বাজারে অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। দেশে ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫৭৮ টাকায়। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ৪৪৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ১১১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫৮৬ টাকায়।

এর আগে, সবশেষ গত ১৯ নভেম্বর দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম সমন্বয় করেছিল বাজুস। সে সময় টানা চার দফা কমার পর ভরিতে ২ হাজার ৯৪০ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৯ টাকা নির্ধারণ করেছিল সংগঠনটি।

এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩১ হাজার ১৯৭ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১২ হাজার ৪৫৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯২ হাজার ২৮৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যা কার্যকর হয়েছে গত ২০ নভেম্বর থেকে।

এ নিয়ে চলতি বছরে এখন পর্যন্ত দেশের বাজারে ৫১ বার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হয়েছে। যেখানে ৩০ বার দাম বাড়ানো হয়েছে, আর কমানো হয়েছে ২১ বার।

Header Ad

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

ছবি: সংগৃহীত

দেশের জনপ্রিয় নির্মাতা আশফাক নিপুন। কাজের পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমেও বেশ সরব তিনি। কথা বলেন নানা ইস্যু নিয়ে। সেই ধারাবাহিকতায় সরকার পতনের পর অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠনেও বিভিন্ন সময় নিজের আকাঙ্ক্ষা, প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যেও বিভিন্ন বার্তা দিয়েছেন। এবার এমনি একটি বার্তায় দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি জনগনের আস্থার বিষয়ে আক্ষেপ জানালেন এই নির্মাতা।

বুধবার (২০ নভেম্বর) আশফাক নিপুন তার ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে লেখেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সর্বস্তরের ছাত্র এবং সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল, বাসায় বসে বসে দোয়া করেছিল, যার যা সামর্থ্য দিয়ে সহায়তা করেছিল। কারণ, তারা দেখেছিল লড়াইটা আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শাসক বনাম সাধারণ ছাত্র-জনতার। এটাও অস্বীকার করার কোনো উপায় নাই যে এই আন্দোলন বেগবান করতে বিরোধী সকল দলের কর্মীদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাদের সংগ্রামও গত দেড় দশকের। কিন্তু এটা যদি শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার লড়াই হতো তাহলে সাধারণ মানুষ এই লড়াই থেকে দূরে থাকত। সেই প্রমাণ বিগত ১৫ বছরে আছে।

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, দেশের সাধারণ মানুষ এখনো দেশের কোনো রাজনৈতিক দলকেই পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারে না। এটাই বাস্তবতা। এই বাস্তবতা মেনে সকল রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত কীভাবে সাধারণ জনগণের ভেতর নিজের দলের প্রতি আস্থা তৈরি করা যায় সেই বিষয়ে নিরলস কাজ করা। এই আস্থা ক্ষমতায় গিয়ে অর্জন করা সম্ভব না। কারণ, সাধারণ মানুষ আজীবন এস্টাবলিশমেন্টের বিপক্ষে। এই আস্থা অর্জন করতে হয় ক্ষমতা বলয়ের বাইরে থেকেই।

নিপুন আরও লিখেন, অরাজনৈতিক সরকার দিয়ে দীর্ঘদিন দেশ চালানো যেমন কাজের কথা না ঠিক তেমনি রাজনৈতিক সরকার হতে চাওয়া সকল রাজনৈতিক দলগুলোর বোঝা উচিত মুক্তিযুদ্ধের পরে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে সকল প্রকার পূর্বানুমান (যেমন- বর্ষাকালে আন্দোলন হয় না, নির্বাচনের আগেই কেবল জোরেশোরে আন্দোলন হয়, ঘোষণা দিয়ে বিরোধী সকল পক্ষ আন্দোলনে শামিল না হলে সফল হয় না) অগ্রাহ্য করেই। সেটা সম্ভব হয়েছে সাধারণ মানুষের ন্যায্যতার আকাঙ্ক্ষা থেকেই।

সবশেষ এই নির্মাতা লিখেছেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষার দুই পয়সার দাম দেন নাই। সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষা, ইচ্ছা আর দেশপ্রেমকে পুঁজি করে অরাজনৈতিক এবং রাজনৈতিক যারাই রাজনীতি রাজনীতি খেলতে চাইবে, তাদের দশাও কোন একসময় যেন পলাতক শেখ হাসিনার মতো না হয়, সেই বিষয় নিশ্চিত করতে হবে তাদেরকেই।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ
দেশের বাজারে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম
‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’
‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা
নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু
২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ৫ জনকে রোবটিক হাত উপহার
সেনাকুঞ্জের পথে খালেদা জিয়া
সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়ব: জেড আই খান পান্না
নির্বাচন কমিশন গঠন, সিইসি হলেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দীন
ডিএনএ টেস্টের ফলাফল: ভিনিসিয়ুসের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের
জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান
বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা সেই শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার
মিরপুর ও মহাখালীতে অটোরিকশা চালকদের সেনাবাহিনীর ধাওয়া
‘শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’, এমন কথা বলেননি ট্রাম্প
লেবাননে ৮ শতাধিক ইসরায়েলি সেনা নিহত
ভারতে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরল ২৪ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী
ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে অবরোধ করে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের বিক্ষোভ
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ৮৮ ফিলিস্তিনি নিহত