রমনা বটমূলে হামলার ২২ বছর, আপিল শুনানি ৯ বছর ধরে হাইকোর্টে
২০০১ সালে রমনা বটমূলে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে জঙ্গি হামলায় নিহত হন ১০ জন। ২২ বছর আগে এ ঘটনায় দায়ের করা মামলার আপিল শুনানি ৯ বছর ধরে হাইকোর্টে ঝুলে আছে।
মামলার কার্যক্রম কবে নাগাদ হাইকোর্টের গণ্ডি পেরোবে তা নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না কেউ।
ওইদিনের ঘটনায় দায়ের করা দুটি মামলার মধ্যে ঢাকার বিচারিক আদালতে হত্যা মামলার বিচার সম্পন্ন হয়েছে। তবে বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে করা মামলার বিচার এখনো শেষ হয়নি।
এ মামলায় ৮৪ আসামির মধ্যে এখন পর্যন্ত ৫৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে। আগামী ১৭ মে আত্মপক্ষ সমর্থনের শুনানির জন্য ঢাকার সপ্তম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন।
আসামিপক্ষের আইনজীবীদের অভিযোগ, রাষ্ট্রপক্ষের সময় চাওয়া এবং বারবার আদালত পরিবর্তনের জন্য এ দীর্ঘসূত্রতা তৈরি হয়েছে। কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বলছেন, বারবার হাইকোর্টের বেঞ্চ পরিবর্তন হওয়ায় মামলাটি শেষ হতে বিলম্ব হচ্ছে।
ঢাকার সপ্তম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসলি মাহবুবুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপক্ষ সচেষ্ট। আমরা আশা করছি, দ্রুত মামলাটি নিষ্পত্তি হবে।’
তিনি বলেন, ‘রমনা বটমূলে বোমা হামলা মামলায় ২০১৪ সালের ২৩ জুন আটজনের ফাঁসি এবং ছয়জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন বিচারিক আদালত। মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন ও জেল আপিল হাইকোর্টে বিচারাধীন।’
মামলায় হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশের (হুজি-বি) শীর্ষ নেতা মুফতি আবদুল হান্নানসহ আট জঙ্গির ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়েছে।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা অন্যরা হলেন-মাওলানা আবু বকর, মাওলানা আকবর হোসাইন, আরিফ হাসান, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আবদুল হাই, সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুর ভাই মাওলানা তাজউদ্দিন এবং হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম।
এদের মধ্যে মুফতি হান্নানের অন্য একটি মামলায় ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে। আর মাওলানা তাজউদ্দিন, জাহাঙ্গীর আলম ও মুফতি আবদুল হাই পলাতক রয়েছেন।
যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত ছয়জন হলেন- হাফেজ আবু তাহের, মাওলানা সাব্বির ওরফে আবদুল হান্নান, হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, মাওলানা শওকত ওসমান ওরফে শেখ ফরিদ, মাওলানা আবদুর রউফ ও শাহাদাত উল্লা।
দণ্ডিত ১৪ জনের মধ্যে শাহাদাত উল্লা ছাড়া সবাই নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হুজি-বির শীর্ষস্থানীয় নেতা।
উল্লেখ্য, ২০০১ সালের ১৪ এপ্রিলে রমনা বটমূলে পয়লা বৈশাখের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান চলছিল। সেখানে সকালে একটি শক্তিশালী বোমা বিস্ফোরিত হয়। এর ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর আরেকটি বোমা বিস্ফোরিত হয়। এতে ঘটনাস্থলেই ৯ জনের মৃত্যু এবং হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যান আরও একজন। এতে আহত হন ২০ থেকে ২৫ জন। এ ঘটনায় রমনা থানায় পৃথক দুটি মামলা করে পুলিশ।
কেএম/এমএমএ/