শুক্রবার, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ১৪ ফাল্গুন ১৪৩১
Dhaka Prokash

ফিরে দেখা ২০২১

পুতিন যেখানে সবকিছুর ঊর্ধ্বে

সম্প্রতি ইউক্রেন সীমান্তে লক্ষাধিক সৈন্য সমাবেশ ঘটিয়ে রাশিয়া অনেকটা প্রত্যক্ষভাবেই পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোকে যুদ্ধের হুমকি দিচ্ছে। আর এর মূলে রয়েছে–রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নিরঙ্কুশ ক্ষমতা সংহত করার প্রচেষ্টা। পুতিন সংবিধান সংশোধন ও আইন করে আজীবন ক্ষমতাসীন থাকার পথ নিশ্চিত করেছেন। কার্যত সেখানে রাষ্ট্র, সরকার ও পুতিন হয়ে উঠেছে এক অবিচ্ছেদ্য সত্তা।

ভিন্নমত দমন

ক্ষমতার পরিধি বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে ভিন্নমত দমনেও একের পর এক সিদ্ধান্ত ও বাস্তবায়নের প্রতিফলন দেখা যায়। পুতিনের কঠোর সমালোচক আলেক্সেই নাভালনির ওপর বিষ প্রয়োগ করা হয় গত বছরের ২০ আগস্ট। ফলে সাইবেরিয়া থেকে আকাশপথে মস্কো যাওয়ার সময় অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। নাভালনিকে মস্কো শহরের একটি হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখান থেকে তাকে জার্মানিতে নেওয়া হয় চিকিৎসার জন্য।

পরে জার্মান সরকার জানায়, নাভালনির ওপর নোভিচক গ্রুপের নার্ভ এজেন্ট বিষ প্রয়োগ করা হয়েছিল। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এজন্য রাশিয়া সরকারকে দায়ী করলেও, তারা এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

এ বছরের ১৭ জানুয়ারি জার্মানি থেকে সুস্থ হয়ে মস্কোর শেরেমেতিয়েভো বিমানবন্দরে নামার পর ৪৪ বছর বয়সী নাভালনিকে আটক করে রুশ পুলিশ। এর পর থেকে কারাগারেই রয়েছেন তিনি।

কর্তৃত্ববাদে আটক মিডিয়া

ক্ষমতা কঠোরভাবে সংহত করতে মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ অনেকটা অপরিহার্য হয়ে দাঁড়ায়। ২০১২ সালের ‘বিদেশি চর’ আইন সংশোধনের মাধ্যমে বিদেশি ও মুক্ত সংবাদমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণের যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, সম্প্রতি এর সেন্সরশিপের আওতা ভয়াবহ মাত্রায় বাড়ানো হয়েছে। ২০১৯ সালে আইনটি আবারও সংশোধন করা হয়। এবার শুধু প্রতিষ্ঠানই নয়, ব্যক্তিকেও এর আওতায় আনা হয়। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে তিন সাংবাদিক, একজন শিল্পী-অ্যাকটিভিস্ট ও ৭৯ বছর বয়সী মানবাধিকারকর্মী লেভ পোনোমারিয়ভকে এ আইনে অভিযুক্ত করা হয়। এর আগে লেভের গড়ে তোলা এনজিও ‘ফর হিউম্যান রাইটস’-এর কার্যক্রম বন্ধ করা হয়।

চলতি বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি প্রচারমাধ্যম আরএফই/আরএলকে দেড় লাখ ডলার জরিমানা করা হয়। মূলত নাভালনির হত্যাচেষ্টা, কারাগারে বন্দি রাখা এবং এ নিয়ে গড়ে উঠা আন্দোলন ও তা দমন নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জন্যই প্রতিষ্ঠানটিকে ‘বিদেশি চর’ আইনে অভিযুক্ত করা হয় বলে মনে করা হচ্ছে।

মিডিয়া বন্দি করার ফলে তথ্যের ইন্টারনেটভিত্তিক উৎসের ওপর রুশদের আস্থা পাল্লা দিয়ে বেড়েছে। রাশিয়ার ১৮ থেকে ২৪ বছর বয়সী তরুণ-তরুণীদের ৮২ শতাংশই সংবাদ পেতে ইউটিউবে চোখ রাখছেন। আলেক্সেই নাভালনি খুব ভালো করেই জানেন, রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত টিভি চ্যানেলে তার খবরাখবর আসার সুযোগ নেই। তাই দুটি ইউটিউব চ্যানেল খুলে তাতে নিজের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রচারণা শুরু করেন। আর এতে ব্যাপক সাড়া পান তিনি।

সাংবিধানিক কর্তৃত্ববাদ

চলতি বছরের এপ্রিলে প্রেসিডেন্টের মেয়াদ সংক্রান্ত এক নতুন আইনে পুতিন স্বাক্ষর করেন। নতুন আইনের ফলে পুতিন চলতি মেয়াদ শেষ হওয়ার পর নির্বাচনের মাধ্যমে আরও দুই দফা প্রেসিডেন্ট পদে থাকার সুযোগ পাবেন।

আইন অনুযায়ী, পরপর দুই মেয়াদের বেশি কেউ ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না। ২০২৪ সালে পুতিনের চলতি শাসনামল শেষ হবে। ওই আইন সংশোধন না হলে পরের মেয়াদে তিনি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারতেন না। তবে এই আইন ও গত বছরের সংবিধান সংশোধনীর ফলে এখন ২০২৪ সাল থেকে আবার নতুন করে নির্বাচনী মেয়াদের গণনা শুরু হবে। অর্থাৎ, ২০৩৬ সাল পর্যন্ত রাশিয়ায় ক্ষমতার শীর্ষে থাকার ব্যবস্থা পোক্ত করেছেন পুতিন। তাই ধরে নেওয়া যায়, আজীবন প্রেসিডেন্ট পদে বহাল থাকছেন পুতিন।

এর আগে ২০১৯ সালের ১৯ ডিসেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে পুতিন সংবিধান সংশোধনের ঘোষণা দেন। এরপর গত বছরের ২০ জানুয়ারি তিনি পার্লামেন্টের নিম্ন কক্ষ ডুমায় সংশোধনী প্রস্তাবটি উত্থাপন করেন। ওই প্রস্তাব অনুযায়ী, সংবিধানের ১৪টি ধারায় পরিবর্তন আনা হয়। প্রস্তাবটি উত্থাপনের সময়ই পুতিন গণভোট আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছিলেন। গণভোটের মাধ্যমে এর স্থায়ীকরণ নিশ্চিত করা হয়।

গত বছর সপ্তাহব্যাপী (২৫ জুন থেকে ১ জুলাই) চলা ওই গণভোটে অংশগ্রহণকারী ভোটারদের প্রায় ৭৮ শতাংশ সংবিধান সংশোধনের পক্ষে মত দেন বলে জানায় রাশিয়ার নির্বাচন কমিশন। ওই গণভোটে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ উঠে।

সংবিধান সংশোধনে প্রধানভাবে যে বিষয়গুলো যুক্ত হচ্ছে, তার মধ্যে রয়েছে–সাংবিধানিকভাবে ঈশ্বরে বিশ্বাস করাকে স্বীকৃতি; সমলৈঙ্গিক বিয়ে নিষিদ্ধ; রাশিয়াজুড়ে রুশ ভাষা ও ইতিহাসের বিকাশে সাংবিধানিক স্বীকৃতি; আন্তর্জাতিক আইনের ওপর রাশিয়ার আইনকে প্রধান্য দেয়া; সরকারি কর্মচারীদের অন্য দেশের নাগরিকত্ব থাকার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা; প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হতে হলে নির্বাচনের আগে অন্তত ২৫ বছর রাশিয়ায় বসবাস করার বাধ্যবাধকতা, আগে এটি ছিল ১০ বছর।

সংশোধনীতে স্টেট সিকিউরিটি কাউন্সিলকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এ সংস্থাটিকে ‘পুতিনের মিনি সরকার’ বলে মনে করা হচ্ছে। যা কাজ করবে রাষ্ট্রের মাঝে রাষ্ট্র হিসেবে।

ওয়েবেও খড়গ

কর্তৃত্ববাদী কাঠামোর মূল বৈশিষ্ট্যই হলো তথ্যপ্রবাহকে সীমিত করা। ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণ জরুরি হয়ে পড়ে পুতিনের জন্য। সরকারবিরোধী যে কোনো তথ্যকে ‘ফেক নিউজ’ বলে আখ্যা দেওয়া হচ্ছে। রাষ্ট্রীয়, সরকারি বা সরকার-সমর্থিত মিডিয়া ও ইন্টারনেটে ব্যাপক প্রপাগান্ডা তো চলছেই।

বছর দুয়েক আগে রাশিয়ায় ফেক নিউজ প্রতিরোধে ‘ডিজিটাল সার্বভৌমত্ব’ শীর্ষক নতুন আইন পাস হয়। এই আইনের আওতায় যে তথ্যকে সরকারের কাছে মিথ্যা বলে মনে হবে, তা নিষিদ্ধ করে দেওয়া যাবে। এর শাস্তি হিসেবে চার লাখ রুবল (রাশিয়ার মুদ্রা) পর্যন্ত জরিমানা করা যাবে। মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর অভিযোগ তুলে যে কোনো ওয়েবসাইট ব্লকও করে দিতে পারবে সরকার। এখন পর্যন্ত লক্ষাধিক ওয়েবসাইট কালো তালিকাভুক্ত করেছে রুশ কর্তৃপক্ষ। রুশ তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকানায় ঢোকানো হচ্ছে পুতিনের অনুসারীদের। ধীরে ধীরে এগুলোর নিয়ন্ত্রণ নেয়া হচ্ছে সরকারের হাতে।

সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ আন্দ্রেই সোলদাতোভ বলেন, ‘কোনো বিদেশি হুমকি বা ফেসবুক, গুগল ঠেকাতে এই আইন করা হয়নি। ওই কাজ আগের আইনেই করতে পারে রুশ সরকার। বেসামরিক বিক্ষোভের সময় কোনো নির্দিষ্ট এলাকায় ইন্টারনেটের পুরো ট্রাফিক সিস্টেমই নিয়ন্ত্রণ করা যাবে এই আইনের আওতায়। ফলে সরকারবিরোধী প্রচার সহজেই শনাক্ত করে দমন করা যাবে।’

বিশ্লেষকরা বলছেন, চীনের পথেই হাঁটতে চাইছে রাশিয়া। তবে রাশিয়ার ক্ষেত্রে সব বন্ধ রাখাটা প্রায় অসম্ভব। অভিযুক্তদের আইনি ও সামাজিকভাবে হেনস্থা করাও নিয়ন্ত্রণের একটি বড় মাধ্যম, যা ব্যাপকহারে জনগণের মধ্যে সেলফ সেন্সরশিপ আরোপ করছে।

যুদ্ধ-যুদ্ধ খেলায় উগ্র-জাতীয়তাবাদ

গত ২ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) সুইডেনে ইউরোপীয় নিরাপত্তা বিষয়ক এক বৈঠকে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেনের পাশে দাঁড়িয়ে স্পষ্ট করেই বলেছেন, রাশিয়া তার ঘরের পাশে ন্যাটোর নতুন কোনো তৎপরতা কোনোভাবেই সহ্য করবে না। ইউক্রেনের ন্যাটোভুক্তি এবং আশপাশের দেশগুলোতে ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপন প্রসঙ্গে রাশিয়া এই অবস্থা গ্রহণ করে।

লাভরভ বলেন, ‘ন্যাটো জোটের সামরিক অবকাঠামো রাশিয়ার সীমান্তে নিয়ে আসা হচ্ছে। রোমানিয়া এবং পোল্যান্ডে মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র বিধ্বংসী ব্যবস্থা মোতায়েন করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি মধ্যপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ইউরোপে নিয়ে আসা হচ্ছে। যার অর্থ ইউরোপে সামরিক সংঘাতের দুঃস্বপ্ন পুনরায় ফিরে আসছে।’

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের মার্চে ক্রিমিয়া দখলে নেয় রুশ সেনারা। রাশিয়া ২০১৮ সালে দুই ভূখণ্ডকে বিচ্ছিন্নকারী ক্রেচ প্রণালীর উপরে ব্রিজ নির্মাণ করে কুবান অঞ্চলের সঙ্গে ক্রিমিয়াকে সংযুক্ত করা হয়। এতে ওই অঞ্চলে রাশিয়ার নৈতিক এবং সামরিক অবস্থান পাকাপোক্ত করে। বর্তমানে ক্রিমিয়ায় রুশ নৌবাহিনীর কৃষ্ণসাগর বহরের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি রয়েছে।

জনগণের মধ্যে যে সমালোচনা, ভিন্নমত রয়েছে; সেসব ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে উগ্র-জাতীয়তাবাদ খুবই কার্যকর একটি পন্থা। ইউক্রেন বা ন্যাটোর বিরুদ্ধে যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করা কার্যত পুতিনের পক্ষে, তথা উগ্রবাদী রুশ জাতীয়তাবাদে হাওয়া দেওয়ারই নামান্তর। আর এসবের মধ্য দিয়ে জনগণকে শাসন কাঠামো থেকে বিচ্ছিন্ন রেখে এক কর্তৃত্ববাদী ব্যবস্থা গড়ে তুলছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, যে ব্যবস্থায় তিনি সব মতের ঊর্ধ্বে।

এসএ/ 

Header Ad
Header Ad

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্ণাঢ্য তারুণ্য উৎসবের আয়োজন

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ‘তারুণ্য উৎসব-২০২৫' আয়োজিত হয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি)। বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে এ আয়োজন হয়।

অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলীর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এনডিসি শীষ হায়দার চৌধুরী। অন্যান্য অতিথিরা হলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরে মহাপরিচালক (অতিরিক্ত) জনাব মোহাম্মদ আনোয়ার উদ্দিন, পেনিনসুলা কনসোর্টিয়ামের নির্বাহী পরিচালক এম. এ. এন শাহীন, কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পঙ্কজ বড়ুয়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাসুদা কামাল এবং তারুণ্যে উৎসবের আহ্বায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোলায়মান।

অনুষ্ঠানের সঞ্চালনায় ছিলেন বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সুমাইয়া আফরিন সানি এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের  উপসচিব মোহাম্মদ সাইফুল হাসান। অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র ধর্মগ্রন্থ থেকে পাঠ করা হয়। এরপর 'জুলাই বিপ্লব ও তথ্য প্রযুক্তি' বিষয়ক ডকুমেন্টারি এবং 'জুলাই বিপ্লবে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়' দুইটি পৃথক ডকুমেন্টারি দেখানো হয়। তারুণ্য উৎসবে অনলাইন ভিত্তিক কুইজ এবং একটি প্রীতি ক্রিকেট ম্যাচের আয়োজন করা হয়। 

বিশেষ অতিথি শীষ হায়দার চৌধুরী বলেন, 'তারুণ্য উৎসবের মাধ্যমে ড. ইউনূস সরকারের পক্ষে আমরা একটি মেসেজ দেওয়া চেষ্টা করছি এদেশের তরুণরাই সবকিছুর চালিকা শক্তি। উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থান এবং চব্বিশের জুলাই বিপ্লবে এটা প্রমাণিত। তারুণ্য উৎসবের কেন্দ্রীয় অনুষ্ঠান কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে করার কারণ হলো জুলাই বিপ্লবের অন্যতম স্থান ছিল কুমিল্লা। এছাড়া এই এলাকা একটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ এডুকেশন হাব। এই অঞ্চলে একসঙ্গে অনেক ভালো শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান রয়েছে। পরবর্তী ইনোভেশন হাবটি আমরা কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থাপন করবো।'

অনুষ্ঠানের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো হায়দার আলী বলেন, 'আমি আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি আইসিটি মন্ত্রণালয়কে তাদের অনুষ্ঠানের ভেন্যু কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে করার জন্য এবং আন্তরিকভাবে স্বাগত জানাচ্ছি আইসিটি মন্ত্রণালয়কে। তরুণদের এগিয়ে যাএয়ার পথ এখন সেটা তথ্যপ্রযুক্তি দিয়ে এগিয়ে যাওয়ার পথ।  তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় একটি সুন্দর উদ্যোগ নিয়েছে  তরুনদের উদ্ভাবন ও উদ্দোক্তা হিসেবে গড়ে তোলার জন্য। আজকের আইসিটি মানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার জগৎ এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার জগৎ খুব দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। এখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যুগ এখন এসব বিষয়ে তরুণদের টার্গেট হওয়া উচিত। যদি মন্ত্রণালয় থেকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিষয়ক কিছু প্রজেক্ট হাতে নেয় সেখানেও আমরা সহযোগিতা করবো।'

তিনিও আরো, 'বলেন আইসিটি মন্ত্রণালয়কে সচিব ঘোষণা দিয়েছেন এখানে একটি আইসিটি হাব হবে এতে আমি আমি খুব খুশি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় খুশি। তরুণদের এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দিকে এগিয়ে আসতে হবে। আর এই হাবটিকে আমরা দেশের প্রথম এআই হাব বানানোর জন্য চেষ্টা করবো। কারন, এই সেক্টরে দেশ ও বিদেশে প্রচুর চাহিদা রয়েছে।'

অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোলায়মান বলেন, 'আমাদের পুরো কার্যক্রমকে সুন্দরভাবে পরিচালনার জন্য যারা কাজ করেছেন তাদের সকলকে ধন্যবাদ জানাই। ভাষার মাসে আমাদের যে এই সুন্দর আয়োজন আমি শ্রদ্ধাভাবে স্মরণ করি বায়ান্নোর ভাষা আন্দোলনের শহীদদের প্রতি, একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি, বিশেষ করে চব্বিশে জুলাই বিপ্লবে যে আত্মত্যাগ ছিলো তাদেরকে বিশেষভাবে স্মরণ করি। গভীরভাবে স্মরণ করছি আমাদের ছাত্র শহিদ আবদুল কাইয়ুমকে যিনি চব্বিশের আন্দোলনে আত্মত্যাগ করেছেন।' 

তিনি আরও বলেন, 'কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দেশ ও জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যায়। আমি আরও বলে দিতে চাই বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদেরকে গ্লোবাল প্রডাক্ট হিসেবে নিজেদের পরিচিত করতে হবে।'

Header Ad
Header Ad

নতুন ছাত্রসংগঠন থেকে ২ নেতার পদত্যাগ

সালাহউদ্দিন আম্মার এবং মেহেদী সজীব। ছবি: সংগৃহীত

নবগঠিত ছাত্রসংগঠন ‘বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ’ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) দুই সমন্বয়ক। ঢাকা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক আধিপত্যের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টার দিকে নিজেদের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন তারা।

পদত্যাগকারী দুই নেতা হলেন সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক মেহেদী সজীব ও যুগ্ম সদস্যসচিব সালাহউদ্দিন আম্মার। তারা উভয়েই রাবির বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ছিলেন।

গতকাল (২৬ ফেব্রুয়ারি) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাংশের নেতৃত্বে আত্মপ্রকাশ করে ‘বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ’। সংগঠনের আহ্বায়ক হিসেবে আবু বাকের মজুমদার এবং সদস্যসচিব হিসেবে জাহিদ আহসান-এর নাম ঘোষণা করা হয়। বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের ২০৫ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়।

এই কমিটিতে ৬ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয় মেহেদী সজীবকে, আর ১ নম্বর যুগ্ম সদস্যসচিব হন সালাহউদ্দিন আম্মার। কিন্তু কমিটি ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তারা দুজনই পদত্যাগের ঘোষণা দেন।

ফেসবুকে মেহেদী সজীব লিখেছেন- ‘নতুন বন্দোবস্তের নামে ঢাকা ও ঢাবিকেন্দ্রিক ফ্যাসিবাদী মনোভাবের উত্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে, তার প্রতিবাদেই আমি এই প্ল্যাটফর্মে থাকতে রাজি না।’

তিনি আরও লেখেন- ‘আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে আমাকে সংগঠনে যুক্ত করা হয়েছে, যা আমি প্রত্যাখ্যান করছি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের স্বার্থ উপেক্ষা করে ঢাবিকেন্দ্রিক মনোভাব যেভাবে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে, তাতে আমি এই সংগঠনের সঙ্গে কোনো রাজনৈতিক বোঝাপড়ায় যেতে রাজি নই।’

সালাহউদ্দিন আম্মারের বক্তব্য- ‘এই সংগঠন সর্বজনীন হতে পারত, কিন্তু বর্তমান অবস্থানের কারণে শিক্ষার্থীরা বিশ্বাস রাখতে পারছে না। আমাদের আন্দোলনের প্রধান শক্তি ছিল সাধারণ শিক্ষার্থীরা, তাদের ইচ্ছার বাইরে গিয়ে রাজনীতি করা সম্ভব নয়।’

ফেসবুক পোস্টে তিনি আরও লেখেন- ‘রাবি শিক্ষার্থীরা চাইছে না ঢাবিকেন্দ্রিক আধিপত্য বজায় থাকুক। তাই আমরাও থাকতে চাই না।’

এই পদত্যাগের ঘটনায় সংগঠনের অভ্যন্তরীণ বিভক্তি স্পষ্ট হয়েছে। সংগঠনটি কতটা সর্বজনীন হতে পারবে, তা এখন সময়ই বলে দেবে।

Header Ad
Header Ad

রাত পোহালেই বিএনপির নওগাঁ সদর ও পৌরসভা ভোট

ছবি: সংগৃহীত

একযুগ পর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) নওগাঁয় সদর উপজেলা ও পৌরসভার কাউন্সিল হতে যাচ্ছে। রাত পোহালেই যেখানে ভোটাররা ব্যালট পেপারের মাধ্যমে তাদের প্রত্যক্ষ ভোট প্রদান করবেন। দীর্ঘদিন পর কাউন্সিল হওয়ায় প্রার্থী ও সদস্যদের মাঝে ব্যাপক উদ্দীপনা দেখা যাচ্ছে। প্রার্থীরা নিজেদের জানান দিতে গত কয়েকদিন থেকে শহর ও গ্রামে মাইকের মাধ্যমে প্রচার-প্রচারণা করেছেন। তবে কার গলায় উঠবে বিজয়ের মালা তা ঠিক করবেন ভোটাররা।

দলীয় সূত্রে জানা যায়- নওগাঁ পৌরসভা বিএনপির সর্বশেষ কাউন্সিল হয়েছিলো ২০১০ সালে। যেখানে ১০১ সদস্য বিশিষ্ট কিমিটির সভাপতি নাছির উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ নুরুন নবী সাজা। বর্তমানে মোট ভোটার রয়েছে ৬৩৯ জন।

অপরদিকে, নওগাঁ সদর উপজেলা বিএনপির সর্বশেষ কাউন্সিল হয়েছিল ২০১২ সালে। যেখানে ৭১সদস্য বিশিষ্ট কমিটির সভাপতি আবু বক্কর সিদ্দিক নান্নু এবং সাধারণ সম্পাদক আ শ ম আল কাফী তুহিন। বর্তমানে মোট ভোটার রয়েছে ৮৫২ জন।

নওগাঁ পৌরসভা বিএনপির সভাপতি পদে দুই প্রার্থী- মোঃ নুরুন নবী সাজা ও শেখ মোঃ মিজানুর রহমান। সাধারণ সম্পাদক পদে তিনজন প্রার্থী- শাহ্ আজিজুর রহমান চৌধুরী হিরু, মোঃ আব্দুল মতিন তালুকদার এবং মোঃ দিদারুল হক রতন। সাংগঠনিক সম্পাদক পদে পাঁচজন প্রার্থী-আগফা উদ দৌলা সবুজ, মোঃ মতিউর রহমান (বুলু), মোঃ মহসিন আলী, এস,এম শহীদুল ইসলাম (সাথী) এবং মোঃ শাহীদুজ্জামান (সাইদ)।
নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করবেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক মোঃ আমিনুল হক বেলাল।

অপরদিকে, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি পদে দুই প্রার্থী- দেওয়ান মোস্তাক আহমেদ (রাজা) ও মো. সারওয়ার কামাল প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। সাধারণ সম্পাদক পদে চারজন প্রার্থী- মোঃ আব্দুস সালাম পিন্টু, মোঃ নাদিম কুদ্দুস, সরদার সাইফুল ইসলাম সাজু এবং শ.ম.আ. আল কাফী তুহিন। সাংগঠনিক সম্পাদক পদে চারজন প্রার্থী- মোঃ খালেদ হাসান (লিপ্ত), মোঃ রফিকুল ইসলাম, মোঃ আরিফুল হক রানা এবং মোঃ ওবাইদুর রহমান।

নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করবেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান নির্বাচন কমিশনার মো. ফারুকুজ্জামান ফারুক, সহকারি নির্বাচন কমিশনার এ্যাড. মিনহাজুল ইসলাম ও মো. মোশারফ হোসেন।

পৌরসভা বিএনপির সভাপতি পদপ্রার্থী মোঃ নুরুন নবী সাজা ঢাকাপ্রকাশকে বলেন- ‘দলকে শক্তিশালী ও গতিশীল করতে কাউন্সিল খুবই দরকার। এতোদিন দলে যে দূর্বলতা ছিলো তা কাটিয়ে উঠবে। সেইসাথে এ কমিটির মাধ্যমে দল আগামীতে মজুত হবে এবং গতিশীল বাড়বে।’

সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি পদপ্রার্থী দেওয়ান মোস্তাক আহমেদ (রাজা) ঢাকাপ্রকাশকে বলেন- দীর্ঘদিন পর নির্বাচন হতে যাচ্ছে। নির্বাচন নিয়ে সদস্যদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আশাবাদী নির্বাচনে ভোটাররা আমাকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করবেন।

নির্বাচনের দায়িত্বরতা জানান- সকাল ১০ টায় নওগাঁ সরকারি কেডি উচ্চ বিদ্যালয়ে পৌর বিএনপি এবং সকাল ৯টায় নওগাঁ প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইন্সটিটিউট (পিটিআই) নওগাঁ সদর উপজেলা বিএনপির ভোট গ্রহণ শুরু হবে। চলবে বিকেল ৩ টা পর্যন্ত। ব্যালট পেপারের মাধ্যমে ভোট হওয়ায় স্বচ্ছতা থাকবে। যেখানে কোন ধরনের প্রতিবন্ধকতা থাকবে না।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্ণাঢ্য তারুণ্য উৎসবের আয়োজন
নতুন ছাত্রসংগঠন থেকে ২ নেতার পদত্যাগ
রাত পোহালেই বিএনপির নওগাঁ সদর ও পৌরসভা ভোট
দেশের বাজারে ফের কমলো সোনার দাম
চুয়াডাঙ্গায় গুণগতমানসম্পন্ন বীজ আখ উৎপাদন কৌশল ও ব্যবহারবিষয়ক দুদিনব্যাপী কৃষক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত
টাঙ্গাইলে শিক্ষা সফরের ৪ বাসে ডাকাতি-লুটপাট, গ্রেফতার ৪
সবার জন্য উন্মুক্ত কনসার্ট, জেমসসহ গাইবেন আরও পাঁচ ব্যান্ড
বাবা সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন এমন সংবাদ দিয়ে ছেলেকে অপহরণ
রামপুরায় গাড়িচাপায় মোটরসাইকেল চালক নিহত, বাসে আগুন
একযোগে পুলিশের ঊর্ধ্বতন ৫৩ জন কর্মকর্তাকে রদবদল
‘টাকা-পয়সা-গয়না কেড়ে নেওয়াতে দুঃখ পাইনি, কিন্তু ধর্ষণের মিথ্যা খবর প্রচারে আমি ভেঙে পড়েছি’
বৈষম্যবিরোধীদের নতুন দল ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’, নেতৃত্বে যারা
নিরাপদ পানি পাওয়া নাগরিকের মৌলিক অধিকার: হাইকোর্টের ঐতিহাসিক রায়
সারাদেশে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’: বিশেষ অভিযানে গ্রেপ্তার ৭৪৩ জন
বৃষ্টির কারণে বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচ পরিত্যক্ত
বেক্সিমকোর শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ শুরু ৯ মার্চ, সরকারের ব্যয় ৫২৫ কোটি টাকা
চা দোকানির ছেলে হলেন বিচারক
টাঙ্গাইলে ট্রাক-অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে ঝরে গেল চালকের প্রাণ
বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীতে ২৭১ পদে বিশাল নিয়োগ
বাংলাদেশ-জার্মানি সম্পর্ক জোরদারে আগ্রহী ঢাকা: প্রধান উপদেষ্টা