শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ফিরে দেখা ২০২১

টিগ্রের যুদ্ধে কি খাদ্যই হাতিয়ার!

একবছর আগে ২০২০ সালের নভেম্বরে ইথিওপিয়ার স্বায়ত্তশাসিত উত্তরাঞ্চল টিগ্রেতে সরকারের সঙ্গে বিরোধীদের লড়াই শুরু হয়েছিল। বিরোধী ফৌজের নাম টিগ্রে পিপলস লিবারেশন ফ্রন্ট (টিপিএলএফ)। প্রাথমিকভাবে টিগ্রে দখলের জন্য তারা লড়াই শুরু করেছিল। টিপিএলএফকে রুখতে সেনা পাঠিয়েছিল সরকার। দুইপক্ষের লড়াইয়ে কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। গত নভেম্বরে দুই পক্ষের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হ‌ওয়ার এক পর্যায়ে রাজধানী থেকে পিছু হটে বিদ্রোহীরা। তবে আবারও রাজধানী টিপিএলএফের দখলে।

গত ১৩ মাস ধরে ইথিওপিয়ার সরকারের সঙ্গে তীব্র লড়াই হয়েছে টিগ্রে যোদ্ধাদের। ইথিওপিয়ার সেনা টিগ্রে পুনর্দখল করার চেষ্টা করলেও তা টিগ্রে যোদ্ধা বা টিগ্রে পিপলস লিবারেশন ফোর্সের (টিপিএলএফ) হাত থেকে ছিনিয়ে নিতে পারেনি। দেশের একাধিক জায়গা এখন তারা দখল করে বসে আছে।

সোমবার (২০ ডিসেম্বর) টিপিএলএফ প্রধান জাতিসংঘকে একটি চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, ইথিওপিয়ার সমস্ত এলাকা থেকে তারা যোদ্ধাদের টিগ্রেতে ফিরিয়ে নিচ্ছে। টিগ্রে ছাড়া দেশের বাকি সমস্ত অঞ্চল থেকে তারা টিপিএলএফ যোদ্ধাদের প্রত্যাহার করে নিচ্ছে। এটাই তাদের শান্তির পথে প্রথম পদক্ষেপ।

জাতিসংঘ, আফ্রিকার দেশগুলি এবং আমেরিকা দ্রুত শান্তি ফেরানোর জন্য দুই পক্ষকেই অনুরোধ করছিল। সেই আহ্বানে প্রথম সাড়া দিল টিপিএলএফ। তবে এর পাশাপাশি টিপিএলএফের দাবি, ইথিওপিয়ার সেনাও টিগ্রেতে তাদের উপর আর আঘাত হানবে না। টিগ্রে ঘিরে কার্যত যে অর্থনৈতিক বয়কট তৈরি করেছে, তাও তুলে দিতে হবে। তবে ইথিওপিয়ার কোনো প্রশাসক বা রাজনীতিক এখনো পর্যন্ত সরকারিভাবে এ বিষয়ে মুখ খোলেননি।

গৃহযুদ্ধে বিপর্যস্ত দেশটির উত্তরাঞ্চলে অস্থিরতা চলছে সেই ১৯৬১ সাল থেকে। ইথিওপিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন হতে সেপ্টেম্বর ১৯৬১ সাল থেকে মে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত লড়াই করে এরিত্রিয়ার বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। ইতালির ঔপনেবেশিক শাসন থেকে মুক্ত হওয়ার পরে ১৯৪৭ সালে এরিত্রিয়া স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই ইথিওপিয়া রাজার শাসন দাবি করে। ১৯৯৩ সালে এরিত্রিয়া স্বাধীন হলেও ইথিওপিয়ার সঙ্গে সংঘাত বন্ধ হয়নি। বছরের পর বছর ধরে চলা সংঘাতে লাখো লাখো মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে। দুই দেশেই দেখা দিয়েছে চরম দুর্ভিক্ষ।

১৯৮০-র দশকের শুরুতে ইথিওপিয়ায় ভয়াবহ দুর্ভিক্ষে চার লাখ থেকে ১০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। তখন এটিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ হিসেবে, ভুল প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিল। অথচ দুর্ভিক্ষ কখনোই একমাত্র খরার কারণে হয় না। মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ পরে জানিয়েছিল, ইথিওপিয়ার প্রতিটি সংকট, বিশেষ করে ১৯৮৩-৮৫ সালের ধ্বংসাত্মক সংকটের বড় অংশই সরকারি নীতি, বিশেষ করে বিদ্রোহ দমন কৌশলের কারণে সৃষ্টি হয়েছে।

আবারও দুর্ভিক্ষ টিগ্রেতে। দুর্ভিক্ষের জন্য দায়ী ইথিওপিয়ান সরকার ও টিগ্রে পিপলস লিবারেশন ফ্রন্টের (টিপিএলএফ) মধ্যে চলমান যুদ্ধ। যুদ্ধের কারণে প্রায় ১৭ লাখ লাখ বাসিন্দা বাস্তুচ্যুত হয়েছে। নানা ধরণের প্রতিবন্ধকতা নিত্যনৈমেত্তিক বিষয়। তবে এর চেয়েও ভয়াবহ বিষয়টি সামনে এনেছে জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক শীর্ষ কর্মকর্তা মার্ক লোকক। তিনি সাবধানবাণী উচ্চারণ করে বলেছেন, এই যুদ্ধে খাদ্যকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। তিনি অভিযোগ করেন, ইথিওপীয় প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদের সমর্থনে প্রতিবেশী ইরিত্রিয়া থেকে আসা বাহিনী টিগ্রয়ী জনগোষ্ঠীর লোকজনকে অনাহারে বাধ্য করে বিদ্রোহীদের মোকাবেলার চেষ্টা করছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছে, সরকার সমর্থক সেনারা ইচ্ছাকৃতভাবে জনগণের ফসল ও শস্যের দোকানে আগুন দিচ্ছে এবং জমি চাষে ব্যবহৃত গবাদি পশুগুলো জবাই করে ফেলছে। মার্ক লোকক বলেছেন, সেনারা ইচ্ছাকৃতভাবে সাহায্যের চালানও বন্ধ করে দিয়েছে।

সোমালিয়ায় এক দশক আগে দুর্ভিক্ষে দুই লাখ ৫০ হাজার মানুষ মারা যাওয়ার পর এটাই হচ্ছে সবচেয়ে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ। এটা আরো ভয়ংকর হতে পারে। মার্ক লোকক সতর্ক করেছেন যে ১৯৮৩-৮৫ সালের মাত্রায় আরেকটা বিপর্যয়ের আশঙ্কা রয়েছে। এখন উপায় হলো, দুর্ভিক্ষ যখন মানুষের করা একটা কাজ, তখন মানুষেরই ক্ষমতা রয়েছে এটা বন্ধ করার।

বিশ্বব্যাপী মিডিয়াগুলোতে টিগ্রের মানবাধিকার লঙ্ঘন, বাস্তুচ্যুতি, যৌন সহিংসতা, জাতিগত দাঙ্গা এবং যুদ্ধাপরাধের কথা উঠে আসলেও দুর্ভিক্ষের কথা তেমন একটা প্রচার পায়নি। অঞ্চলটিতে সহিংস পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে চলা মানুষজনকে বেঁচে থাকার জন্য মানবিক সহায়তার দরকার এগুলো খবরের কাগজের রিপোর্ট হয়েছে। তবে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায়, ব্যাংকিং বা অন্য আর্থিক খাতগুলো থেকে অঞ্চলটি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় শুরু হয় দুর্ভিক্ষ। লক্ষ লক্ষ মানুষ ভয়াবহ অবস্থার মধ্য দিয়ে গেলেও টিগ্রের এ পরিস্থিতি খুব কমই প্রথম পাতার খবর হয়েছে এমনকি এ সমাস্যা আন্তর্জাতিক এজেন্ডার শীর্ষে স্থান পায়নি।

তবে টিগ্রের দুর্ভিক্ষের কারণ হিসেবে বরাবরই দায়ী মানুষের সৃষ্টি করা সঙ্কট। এবারও পরিস্থিতি একই দিকে মোড় নিচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। টিগ্রেতে গত নভেম্বর থেকে সেনাবাহিনী ও টিপিএলএফের লড়াইয়ের ফলে টিগ্রের ৯১ শতাংশ মানুষের জরুরিভিত্তিতে খাদ্যসাহায্য দরকার বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম (ডব্লিউএফপি)।

দুর্ভিক্ষের কারণ

চলতি বছর ৮ আগস্ট জাতিসংঘ ঘোষণা করে যে, টিগ্রে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে্। এখানে দুর্ভিক্ষের শিকার ৩৫ লাখ মানুষ। ঠিক তার মাত্র দুই মাস পর ইউএসএইড এর পক্ষ থেকে ঘোষণা আসে এ সংখ্যা প্রায় তিনগুণ অর্থাৎ ৯০ লাখ। জাতিসংঘের ফামিন আর্লি ওয়ার্নিং সিস্টেম নেটওয়ার্কের (এফইডাব্লিউএসএনইটি) রিপোর্ট অনুযায়ী অঞ্চলটিতে প্রায় ৫২ লাখ মানুষ চরম দুর্ভিক্ষের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তাদের জীবন রক্ষায় খাদ্যসহ অন্যান্য সহায়তা প্রয়োজন।

চলতি বছর জুনের শেষে ইথিওপিয়ান সরকার টিগ্রেতে অবরোধ আরোপ করে। তারপর থেকে প্রয়োজনীয় ত্রাণ সহায়তার মাত্র ১০ শতাংশ এই অঞ্চলে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে ইউএসএইড। অথচ ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম (ডব্লিউএফপি) এর হিসাব অনুযায়ী প্রতিদিন অন্তত ১০০ ট্রাক খাদ্য সহায়তা দরকার এখানে। আর এ থেকে বুঝা যায় যে, এ অঞ্চলের মানুষ কতোটা দুর্ভোগে মধ্য দিয়ে দিন কাটাচ্ছে, যা আমাদের ধারণার বাইরে।

অবরোধে চরম মানবিক দুর্ভোগ সৃষ্টি হচ্ছে। জুন মাসে অবরোধ কার্যকর হওয়ার পর থেকে, ব্যাংকগুলি বন্ধ রয়েছে, বেসামরিক নাগরিকরা খাদ্য কেনার জন্য টাকা তুলতে পারছে না। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় টিগ্রেকে আটকে পড়া মানুষজনের কোন খবর পাচ্ছে না তাদের পরিবার। সেখানে জ্বালানি তেল প্রবেশের অনুমতি দেয়া হতো না, চিকিৎসা পরিষেবা দেবার জন্য হাসপাতাল খোলা রাখা সম্ভব হচ্ছিল না। এমনকি বন্ধ হয়ে যায় কলকারখান, পানির পাম্প এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র।

চাহিদা বাড়ছে কিন্তু সেই তুলনায় সরবরাহ কম। জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা বিষয়ক সংস্থা সম্প্রতি ওই অঞ্চলের সঙ্কট নিয়ে বলেছে, আটকে পড়া লক্ষাধিক মানুষের জন্য সহায়তার চরম ঘাটতি দেখা দিয়েছে। জীবন-রক্ষাকারী প্রতিটি জিনিস যেমন-খাদ্য, স্বাস্থ্য, পানি, স্যানিটেশন, আশ্রয় সবই প্রয়োজন।

শিশুরা অকারণে কষ্ট পাচ্ছে এখানে। জাতিসংঘের শিশু তহবিল (ইউনিসেফ) রিপোর্টে বলা হয়েছে, টিগ্রেতে মারাত্মক অপুষ্টিতে ভোগা পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের সংখ্যা তিন মাসে ৩৩ হাজার থেকে বেড়ে এক লাখ ৬০ হাজারে পৌঁছেছে। আগামী ১২ মাসে এখানে অপুষ্টির শিকার শিশুর সংখ্যা ১০ গুণ বৃদ্ধির পাবে বলে অনুমান ইউনিসেফের। বুকের দুধ পান করানো মা এবং অন্তঃসত্ত্বাদের ৫০ শতাংশ তীব্র অপুষ্টির শিকার।

এটা মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ। মানবিক সংস্থাগুলি উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যে, অবরোধের ফলে খাদ্য সরবরাহ এবং মৌলিক পরিষেবার চরম ঘাটতির ফলে এ অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ অব্যাহত থাকবে। ইথিওপিয়ান সরকার এবং সংঘাতে বিদ্যমান বিরোধী পক্ষগুলিকে অবশ্যই বেসামরিক নাগরিকদের অধিকারে বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচান করতে হবে। প্রয়োজনীয় মানবিক ত্রাণ সহায়তার অনুমতি দিতে হবে। তারা চাইলেই এটা হবে।

৪০ বছরেরও কম সময়ের মধ্যে টিগ্রে দ্বিতীয়বারের মতো দুর্ভিক্ষের শিকার হলো। ১৯৮৪-৮৫ সালেও এখানে দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়া। সেসময় এখানে ২০ লাখ মানুষ খাদ্যের অভাবে এবং অপুষ্টির শিকার হয়ে মারা যায়। এই ইতিহাসের পুনাবৃত্তি আর দেখতে চায় না বিশ্ব।

বর্তমানে টিগ্রেবাসীর খাদ্য নেই এমনকি শিশু খাদ্যেরও ঘাটতি। পরিস্থিতি যেন আরও ভয়াবহ না হয় সে লক্ষ্যে এখন সবাইকে কাজ করতে হবে। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ এবং আফ্রিকান ইউনিয়নকে অবশ্যই রাজনৈতিক বিভেদ ভুলে চরম দুর্ভিক্ষের হাত থেকে বাঁচাতে হবে।

 

কেএফ/জেডএকে

 

Header Ad

২৪ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের আশঙ্কা

ফাইল ছবি

আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় লঘুচাপ সৃষ্টি হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ড. মো. বজলুর রশিদের দেওয়া পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়।

আবহাওয়া অফিস জানায়, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। শেষরাত থেকে ভোর পর্যন্ত দেশের উত্তরাঞ্চলের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা এবং দেশের অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। সারাদেশে রাতের এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে

রোববার (২৪ নভেম্বর) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। শেষরাত থেকে ভোর পর্যন্ত সারাদেশের কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। এছাড়া সারাদেশে রাতের এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে।

সোমবার (২৫ নভেম্বর) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। শেষরাত থেকে ভোর পর্যন্ত সারাদেশের কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। সারাদেশে রাতের এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। এছাড়া আগামী পাঁচদিনে আবহাওয়া পরিস্থিতি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই।

Header Ad

অক্টোবরে সড়কে প্রাণ গেছে ৪৭৫ জনের

ছবি: সংগৃহীত

গত অক্টোবর মাসে দেশজুড়ে সড়ক, রেল ও নৌ-পথে সর্বমোট ৫৩৪টি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৫৭৫ জন এবং আহত হয়েছেন ৮৭৫ জন। এরমধ্যে ৪৫২টি সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৪৭৫ জন এবং আহত হয়েছেন ৮১৫ জন। একই সময়ে রেলপথে ৬৩টি দুর্ঘটনায় ৭৬ নিহত, ২৪ জন আহত হয়েছেন। নৌ-পথে ১৯টি দুর্ঘটনায় ২৪ জন নিহত, ৩৬ জন আহত এবং ৯ জন নিখোঁজ রয়েছেন।

এছাড়া এই সময়ে ১৩৮টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৬৩ জন নিহত, ২৩৯ জন আহত হয়েছে। যা মোট দুর্ঘটনার ৩০.৫৩ শতাংশ, নিহত ৩৪.৩১ শতাংশ ও আহত ২৯.৩২ শতাংশ।

শনিবার (২৩ অক্টোবর) সংবাদ মাধ্যমে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরীর পাঠানো এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা যায়। সংগঠনটি বহুল প্রচারিত ও বিশ্বাসযোগ্য জাতীয়, আঞ্চলিক, অনলাইন এবং ইলেক্ট্রনিক সংবাদপত্রে প্রকাশিত সড়ক, রেল ও নৌ-পথের সংগঠিত দুর্ঘটনার সংবাদ মনিটরিং করে এই প্রতিবেদন তৈরি করেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে ১৭ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ১৪৯ চালক, ১৩৭ পথচারী, ৫১ পরিবহন শ্রমিক, ৭৩ শিক্ষার্থী, ১৮ শিক্ষক, ৭৬ নারী, ৬২ শিশু, ৫ চিকিৎসক, ৯ সাংবাদিক এবং ১৩ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীর পরিচয় মিলেছে। এদের মধ্যে নিহত হয়েছে ৬ জন পুলিশ সদস্য, ৩ সেনা সদস্য, ১ আনসার সদস্য, ১২৪ জন বিভিন্ন পরিবহনের চালক, ১১৭ জন পথচারী, ৫৮ জন নারী, ৫১ জন শিশু, ৪৯ জন শিক্ষার্থী, ৩২ জন পরিবহন শ্রমিক, ১৫ জন শিক্ষক, ৪ জন চিকিৎসক, ৬ জন সাংবাদিক, ১৬ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী।

এই সময় সড়ক দুর্ঘটনায় সংগঠিত ৬৩১টি যানবাহনের পরিচয় মিলেছে। এতে দেখা যায়, ২৪.৪১ শতাংশ মোটরসাইকেল, ২২.৫০ শতাংশ ট্রাক-পিকাপ-কাভার্ডভ্যান ও লরি, ১৮.৫৪ শতাংশ বাস, ১৭.৯১ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক, ৩.৯৬ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ৬.৬৫ শতাংশ নছিমন-করিমন-মাহিন্দ্রা-ট্রাক্টর ও লেগুনা, ৬.০২ শতাংশ কার-জিপ-মাইক্রোবাস সড়কে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। সংগঠিত মোট দুর্ঘটনার ৪৯.৪৮ শতাংশ গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনা, ২৫.২৫ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৪.৭৭ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে, ৯.৫১ শতাংশ বিবিধ কারণে, ০.২৫ শতাংশ ট্রেন যাববাহনে সংঘর্ষ। এবং চাকায় ওড়না পেছিয়ে ০.৭৫ শতাংশ।

সেপ্টেম্বর মাসে সড়ক দুর্ঘটনার উল্লেখযোগ্য কারণ হিসেবে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে— দেশের সড়ক-মহাসড়কে ট্রাফিক পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশের অনুপস্থিতি সুযোগে আইন লঙ্ঘন করে যানবাহনের অবাধ চলাচল; জাতীয় মহাসড়কে রোড সাইন বা রোড মার্কিং, সড়কবাতি না থাকায় এবং অতি বৃষ্টির কারণে সড়কের মাঝে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হওয়া; এসব গর্তের কারণে যানবাহন চলাচলে ঝুঁকি বেড়েছে; জাতীয়, আঞ্চলিক ও ফিডার রোডে টানিং চিহ্ন না থাকার ফলে নতুন চালকের এসব সড়কে দুর্ঘটনায় পতিত হয়েছে; মহাসড়কের নির্মাণ ত্রুটি, যানবাহনের ত্রুটি, ট্রাফিক আইন অমান্য করার প্রবণতা; উল্টোপথে যানবাহন চালানো, সড়কে চাদাঁবাজি, পণ্যবাহী যানে যাত্রী পরিবহন এবং অদক্ষ চালক, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, অতিরিক্ত যাত্রী বহন, বেপরোয়া যানবাহন চালানো এবং একজন চালক অতিরিক্ত সময় ধরে যানবাহন চালানোকে।

দুর্ঘটনার প্রতিরোধে সুপারিশ হিসেবে বলা হয়েছে— জরুরি ভিত্তিতে মোটরসাইকেল ও ইজিবাইকের মত ছোট ছোট যানবাহন আমদানি ও নিবন্ধন বন্ধ করা; জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে রাতের বেলায় অবাধে চলাচলের জন্য আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা; দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ, যানবাহনের ডিজিটাল পদ্ধতিতে ফিটনেস প্রদান; ধীরগতির যান ও দ্রুতগতির যানের জন্য আলাদা লেনের ব্যবস্থা করা; সড়কে চাদাঁবাজি বন্ধ করা, চালকদের বেতন ও কর্মঘণ্টা সুনিশ্চিত করা; মহাসড়কে ফুটপাত ও পথচারী পারাপারের ব্যবস্থা রাখা, রোড সাইন, রোড মার্কিং স্থাপন করা; সড়ক পরিবহন আইন যথাযতভাবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রয়োগ করা; উন্নতমানের আধুনিক বাস নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিআরটিএর সক্ষমতা বৃদ্ধি করা; মানসম্মত সড়ক নির্মাণ ও মেরামত সুনিশ্চিত করা, নিয়মিত রোড সেফটি অডিট করা; মেয়াদোত্তীর্ণ গণপরিবহন ও দীর্ঘদিন যাবৎ ফিটনেসহীন যানবাহন স্ক্যাপ করার উদ্যোগ নেওয়া এবং বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক-মহাসড়ক দ্রুত মেরামতের ব্যবস্থা করা।

Header Ad

গায়ানায় দলের সঙ্গে যোগ দিলেন সাকিব

ছবি: সংগৃহীত

আর মাত্র তিন পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের গায়ানায় পর্দা উঠবে গ্লোবাল সুপার লিগের প্রথম আসরের। বৈশ্বিক ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টগুলোর চ্যাম্পিয়নদের নিয়ে উইন্ডিজ ক্রিকেট আয়োজন করছে গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট লিগ, আর এই টুর্নামেন্টের জন্য তরুণ পেসার তানজিম হাসান সাকিবকে দলে ভিড়িয়েছে স্বাগতিক গায়ানা অ্যামাজন ওয়ারিয়র্স।

শুক্রবার (২২ নভেম্বর) দলের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন এই টাইগার পেসার।

এর আগে বাংলাদেশ সময় বুধবার দুপুরে ঢাকা ত্যাগ করেছিলেন সাকিব। এরপর গায়ানায় সাকিবকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেয় ফ্যাঞ্চাইজিটি। নিজেদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্ট করে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে গ্লোবাল সুপার লিগ কতৃপক্ষ।

চোটের কারণে এই আসরে সাকিবের খেলা নিয়ে এতদিন অনিশ্চয়তায় ভুগছিলেন সাকিব। কিন্তু গত সোমবার ফিটনেস টেস্ট দিয়ে সেই অনিশ্চিয়তা দূর করেছেন তিনি। যার ফলে বিসিবির কাছ থেকে এই লিগে খেলার অনুমতি পান সাকিব।

রংপুর রাইডার্স ও গায়ানা আমাজন ওয়ারিয়র্সসহ টুর্নামেন্টটিতে অংশ নেবে পাকিস্তান সুপার লিগের (পিএসএল) লাহোর কালান্দার্স, ইংল্যান্ডের হ্যাম্পশায়ার ও অস্ট্রেলিয়ার ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিত খেলা ভিক্টোরিয়ান ক্রিকেট দল।

টুর্নামেন্টটির প্রথম রাউন্ডে প্রতিটি দলই একে অপরের মুখোমুখি হবে। পাঁচ দলের মধ্য থেকে চার দল যাবে সেমিফাইনালে। এরপর আগামী ৭ ডিসেম্বর হবে টুর্নামেন্টের ফাইনাল।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

২৪ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের আশঙ্কা
অক্টোবরে সড়কে প্রাণ গেছে ৪৭৫ জনের
গায়ানায় দলের সঙ্গে যোগ দিলেন সাকিব
আইপিএল নিলামের আগেই নিষিদ্ধ হলেন ভারতের ২ ক্রিকেটার
গাজীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু
কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া
পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...
অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পরীমণির প্রথম স্বামী
বিচারের আগে আ.লীগের মাঠে থাকার সুযোগ নেই: উপদেষ্টা নাহিদ
মাকে হত্যার পর থানায় হাজির ছেলে
৮ ক্রিকেটারসহ ৯ জনকে নিষিদ্ধ করলো বিসিবি
উপদেষ্টাদের যাচ্ছেতাই কর্মকাণ্ড মেনে নেওয়া হবে না: রিজভী
ভিসা কবে উন্মুক্ত করবে সেটা ভারতের নিজস্ব ব্যাপার: হাসান আরিফ
জুরাইন রেলক্রসিং ছাড়লেন রিকশাচালকরা, ৪ ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল শুরু
পাঁচ দেশে যাওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশিদের জন্য সতর্কতা
সাফজয়ী নারী ফুটবলার আইরিনকে নওগাঁয় সংবর্ধনা
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপ দেবে পাকিস্তান
বেনাপোলে সীমান্ত থেকে বিপুল পরিমাণ ফেনসিডিল উদ্ধার
পুলিশ-অটোরিকশা চালক সংঘর্ষ, ঢাকা-পদ্মা সেতু ট্রেন চলাচল বন্ধ