‘পণ্যমূল্য অস্থিতিশীল হলেই বাজার কমিটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা’
বাজারের পণ্যের ঘাটতি নেই। এরপরও বাজারে কেন অস্থিরতা তৈরি হয় তা বোধগম্য নয় বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।
তিনি বলেন, ‘রমজানে যে এলাকার বাজারে পণ্যমূল্যে অস্থিতিশীল হবে সেই বাজারের কমিটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
রবিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে টিসিবি অডিটোরিয়ামে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
রমজান উপলক্ষে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল ও সরবরাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন ও ঢাকা সিটির অধীন সব বাজারের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের অংশগ্রহণে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
জাতীয় ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) এএইচএম সফিকুজ্জামানের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ।
বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারপারসন প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী, এফবিসিসিআই এর সভাপতি মো জসিম উদ্দিন, কনজুমার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর সভাপতি গোলাম রহমান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাণিজ্য সংগঠন অনুবিভাগের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো. হাফিজুর রহমান, ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ এর চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আরিফুল হাসান, এবং বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দীন।
সফিকুজ্জামান বলেন, খুচরা ও পাইকারী ব্যবসায়ীদের অভিযোগ সরবরাহকারীরা বাজারে পণ্য কম দিচ্ছে। কিন্তু আমদানি ও বাজারজাতকারীদের মিল থেকে প্রতিদিন কী পরিমাণ পণ্য বাজারে সরবরাহ করা হয় সেই তথ্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে আসে। সেই তথ্য অনুসারে বাজারের পণ্যের ঘাটতি হওয়ার কথা নয়। কিন্তু এরপরও বাজারে কেন অস্থিরতা তৈরি হয় তা বুঝে আসছে না।
তিনি বলেন, পণ্যের কোনো ঘাটতি নেই, ব্যবস্থাপনার ঘাটতি আছে। আমাদের উপর চাপ আছে, বলা হচ্ছে আমরা রিফাইনারি বা মিল পর্যায়ে অভিযানে যাচ্ছি না। সরকার নির্ধারিত দামের ব্যত্যয় হলে এবার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও নেওয়া হবে। পণ্য মজুদ রেখে বাজার অস্থিতিশীল করা হলে ওই বাজার কমিটিকে তার দায় নিতে হবে।
আসন্ন রমজানে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে সকলের সাথে সমন্বয় করে নিবিড়ভাবে বাজার অভিযান পরিচালনা জোরদার করা হবে। প্রতিদিন অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ৫০টি এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ৪টি টিম বাজার মনিটরিং করবে।
মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, ডলারের মূল্য স্থিতিশীল থাকলে আসন্ন রমজান মাসের জন্য নিত্য প্রয়োজনীয় ৬টি পণ্য (চাল, ডাল, তেল, ছোলা, চিনি, ও খেজুর) এর মূল্য স্থিতিশীল ও সরবরাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকবে। এ ব্যাপারে আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।
সভায় টিসিবি চেয়ারম্যান রমজান মাসে ভোক্তাদের সংযমী হতে আহবান জানিয়ে বলেন এ মাসে টিসিবির ভর্তুকি মূল্যে পণ্য বিক্রির কার্যক্রম আরও গতিশীল হবে।
মো. হাফিজুর রহমান ভোক্তাদের মিতব্যয়ী এবং ব্যবসায়ীদের কম লাভ করে যৌক্তিক মূল্যে পণ্য বিক্রয় করার অনুরোধ করেন। ক্যাব সভাপতি গোলাম রহমান জানান, বাজারে প্রতিযোগিতা থাকলে ভোক্তা সঠিক মূল্যে ন্যায্য পণ্য পাবে। এফবিসিসিআই এর সভাপতি বলেন, কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ীরা হঠাৎ করে পণ্যের দাম বাড়ালে এর দায় সব ব্যবসায়ী নিবে না।
বাণিজ্যসচিব বলেন, ব্যবসায়ীদের নিয়ম মেনে ব্যবসা করতে হবে। ২০৪১ সালের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্নের যে স্মার্ট বাংলাদেশ হবে, সেখানে আমাদের অর্থনীতি হবে স্মার্ট ইকোনমি, বাজার হবে সিস্টেমেটিক। স্মার্ট ইকোনমির গঠনের মাধ্যমে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করা হবে।
পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া কঠিন। আর মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া হলে সেটা অবশ্যই মানতে হবে। স্বচ্ছতার সাথে যার যার অবস্থান থেকে নিয়ম মেনে ব্যবসা করলে এবং যার যার দায়িত্ব ঠিকভাবে পালন করলে সুষ্ঠু বাজার ব্যবস্থার সৃষ্টি হবে, যোগ করেন তিনি।
জেডএ/এমএমএ/