ভেড়ার জন্য খাবার ‘প্লানটেইন ঘাস’ ও ‘রসুনের পাতা’
রাকিবুল হাসান, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
‘অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট’ একটি জৈব উপাদান। মানুষের শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরত্বপূর্ণ। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। হৃদরোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। মানবশরীরে ক্যান্সার প্রতিরোধে ভূমিকা পালন করে। ভেড়ার মাংসে এই প্রতিরোধক ও কাযকর এন্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধকরণে সফলতা পেয়েছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পশুপুষ্টি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আল মামুন। তিনি ভেড়ার উৎপাদনশীলতা বাড়ানো এবং মাংসের গুনগত মান উন্নয়নে গবেষণা করেও সাফল্য পেয়েছেন।
গতকাল ২২ মে রবিবার দুপুর ১২টায় তার পশুপালন অনুষদের সম্মেলন কক্ষে ‘অধিক এন্টিঅক্সিডেন্টসমৃদ্ধ ভেড়ার মাংস উৎপাদনে নতুন প্রযুক্তি’ কর্মশালাটিতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেছেন বিভাগের এই অধ্যাপক ও নামকরা গবেষক। তখন তিনি এই তথ্যগুলো জানিয়েছেন তার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, ছাত্রী সাংবাদিকদের।
এই বিশেষ কমশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম।
সম্মানিত অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়টির সাবেক অধ্যাপক ও নতুন প্রতিষ্ঠিত ‘কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়’ উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে এম জাকির হোসেন। কমশালাটির প্রধান পৃষ্ঠপোষক ছিলেন ডিন কাউন্সিলের আহবায়ক অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপস্থিত ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. খান মো. সাইফুল ইসলাম। তারাসহ পশুপুষ্টি বিভাগের সভাপতি ও বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. রাখী চৌধুরী বৈজ্ঞানিক আলোচনা করেছেন।
অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আল মামুন বলেছেন, “ভেড়ার খাবার হিসেবে এন্টিঅক্সিডেন্টসমৃদ্ধ ‘প্লানটেইন ঘাস’ ও ‘রসুনের পাতা’ ব্যবহার করে আমি মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো এবং হৃদরোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করা, মানবশরীরে ক্যান্সার প্রতিরোধে ভূমিকা পালন করার মতো ‘অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট’ বাড়াতে পেরেছি।”
এই গবেষক-অধ্যাপক আরো বলেছেন, ‘ঘাস হিসেবে ভেড়াকে এই দুটি খাবার খাইয়ে মাংসে ৩০ ভাগ পর্যন্তও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বাড়ানো সম্ভব হয়েছে। সবই আমার দীর্ঘকালের গবেষণার ফলাফল। এই গবেষণাতেই নির্দিষ্ট ভেড়াকে ২০ থেকে ২৬ শতাংশ আকার ও আয়তন বাড়ানো সম্ভব হয়েছে। ৫ থেকে ৭ শতাংশ মাংস উৎপাদনও বৃদ্ধি সম্ভব হয়েছে।’
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পশুপুষ্টির অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আল মামুন জানিয়েছেন, ‘আমার গবেষণার ফলাফলের ভিত্তিতে ভেড়ার শরীরের অভ্যন্তরীণ চর্বিও ২৪ শতাংশ কমে গিয়েছে। এই ঘাসগুলো ব্যবহারে ভেড়ার মল থেকে ১১ থেকে ১৪ শতাংশ মিথেন গ্যাস কম নির্গত হয় বলে পরিবেশ দূষণ কমে।’
তিনি জানিয়েছেন, ‘এই দুটি ভেড়ার অত্যন্ত উপযোগী ওষুধি গুণসম্পন্ন ঘাস। পাশাপাশি ভেড়ার মাংসের স্বাদ এবং গন্ধেরও পরিবর্তন এনেছে।’
ড. মোহাম্মদ আল মামুন শেষে বলেছেন, ‘প্লানটেইন ও রসুন পাতায় এন্টিঅক্সিডেন্ট আছে। এটিসহ আরো নানা কারণে এই ঘাসগুলোর মাধ্যমে ভেড়ার বৃদ্ধি, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও মাংসের গুনগত মানের উপর যথেষ্ট প্রভাব পড়েছে।’
ওএস।