বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব ২৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান

আর্নেস্ট মামার রাগের আরেকটা ঘটনা মনে আছে জ্যাকের: সেটা খুব বেশি গুরুতর। কারণ আর্নেস্ট মামা আর যোসেফিন মামার বাগবিতণ্ডা শেষ পর্যন্ত ঘুষোঘুষিতে গড়িয়েছিল। যোসেফিন মামা রেলওয়েতে কাজ করত। সে রাতে কোনোদিন বাড়িতে ঘুমাত না। অবশ্য কোথায় ঘুমাত তা সে-ই জানে। পাড়ায় কোথায় যেন একটা রুম ছিল তার। বাড়ির কাউকে সেখানে কোনোদিন নেয়নি। জ্যাকও দেখেনি সে জায়গাটা। খাবার খেত বাড়িতেই এবং সেজন্য সামান্য কিছু টাকা তার মাকে দিত। ভাই হিসেবে যতখানি আলাদা হওয়া যায় ঠিক ততটাই আলাদা ছিল সে আর্নেস্টের থেকে। আর্নেস্টের চেয়ে বয়সে সে দশ বছরের বড় ছিল। ঠোঁটের ওপরে হালকা একগাছি গোঁফ আর নাবিকদের মতো করে কাটা চুলের যোসেফিন মামা ছিল ধীর-স্থির মেজাজের, চাপা এবং হিসেবি। আর্নেস্ট বলত তার ধনসম্পদের প্রতি লোভ বেশি। তার দোষ ধরার ধরনটা ছিল আরো সোজাসাপটা; বলত, ও একটা মোজাবাইট।

তার ব্যাখ্যায় মোজাবাইট মানে হলো, পাড়ার মুদি দোকানদার যারা মোজাব থেকে এসে বহু বছর এই এলাকায় দোকানদারী করত। থাকত তেল আর দারুচিনির গন্ধে ভরা দোকানের পেছনে। তাদের বউ বাচ্চা কেউ থাকত না এখানে। তাদের এই নির্বাসনের মতো জীবনের একটাই উদ্দেশ্য ছিল: এভাবে একাকী জীবন যাপন করে পরিবার পরিজনের জন্য টাকা পয়সা যোগাড় করা। তাদের পরিবার পরিজন সব বাস করত মোজাব এলাকার পাঁচটা শহরে। মরুভূমির যেখানে ওইসব খারেজি গোঁড়া ইসলামপন্থীরা বাস করত সেখানে ধর্মীয় কারণে মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত শাস্তির প্রচলন ছিল। সেখানে তাদের আগমন ঘটে বহু শত বছর আগে। ওই এলাকাটাকে তারা নিজেদের বলে বেছে নেয়। কারণ তারা জানত, ওই পাথুরে এলাকায় তাদের কাছ থেকে জমিজমা কেড়ে নেওয়ার জন্য যুদ্ধ করতে আসবে না কেউ। পৃথিবী থেকে গর্তে ভরা প্রাণহীন অন্য কোনো গ্রহ যত দূরে ওই জায়গাটা উপকূলীয় আধা সভ্য এলাকা থেকে ঠিক ততেটাই দূরে। সেখানে তারা বসতি স্থাপন করে এবং অগভীর টোলের পাশে অল্প জায়গায় শহর গড়ে তোলে। অদ্ভূত কৃচ্ছব্রতী বিশ্বাসকে আঁকড়ে ধরে তাদের সবল শরীরের পুরুষদের উপকূলবর্তী এলাকায় পাঠিয়ে ব্যবসায়ে নিয়োজিত করে যাতে তারা একমাত্র আত্মিক লাভালাভের জগৎ তৈরি করতে পারে। এরপর আরেক দল যখন আসে তাদের ব্যবসায় কর্ম চালাতে তখন শেষ পর্যন্ত তারা ফিরে আসে তাদের মাটি আর কাদা ঘেরা শহরে যাতে এতদিনের বিশ্বাসে অর্জিত রাজত্বে ভালোভাবে থাকতে পারে। এভাবেই তাদের ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা জীবন যাপন এবং মিতব্যয়িতাকে তাদের গভীর বিশ্বাসের আলোকে বিচার করা হতো। কিন্তু পাড়ার শ্রমজীবি শ্রেণির কেউ ইসলাম ধর্ম এবং এর নবতন্ত্র সম্পর্কে তেমন কিছু জানত না বলে শুধু তাদের ওপরের অবস্থাটাই দেখত।

অন্য সবার মতো আর্নেস্টও যখন তার ভাইকে মজাবাইট বলে দোষারোপ করত তখন তাকে হারপাগোনের সঙ্গেও যেন তুলনা করা হয়ে যেত। যোসেফিন মামা ছিল টাকা পয়সার ব্যাপারে ব্যয়কুণ্ঠ। অন্যদিকে আর্নেস্ট মামা নানির মতে ছিল ‘উদারহস্ত’। আর্নেস্টের ওপর নানি কখনও ক্ষিপ্ত হলে অভিযোগ করে বলতেন, ওর আঙুলের ফাঁক দিয়ে টাকাপয়সা বের হয়ে যায়। দুজনের মধ্যে অমিলের বাইরে আরো একটা বিষয় হলো, আর্নেস্ট মামার চেয়ে যোসেফিন মামার উপার্জন একটু বেশি ছিল। যার কিছুই নেই তার পক্ষেই উদার হওয়া সম্ভব। উদার হওয়ার সামর্থ অর্জনের পর খুব কম মানুষই উদার থাকতে পারে। এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম শুধু রাজকুমারেরা যাদের সামনে সবাইকে মাথা নত করতে হয়। যোসেফিনের আর্থিক অবস্থা টাকার বিছানায় গড়াগড়ি দেওয়ার মতো পর্যায়ের ছিল না। খুব হিসাবের সঙ্গে কিছু ব্যবসায় করে তার বেতনের বাইরেও কিছু টাকা উপার্জন করত সে। তথাকথিত খাম ব্যবস্থাপনা চালু করেছিল যোসেফিন।

অবশ্য নতুন খাম কেনার মতো উদারতা তার ছিল না। সে পুরনো খবরের কাগজ কিংবা মুদির দোকানের ঠোঙা থেকে খাম তৈরি করত। রেলওয়েতে কাজ করার সুবাদে সে দুসপ্তাহে একবার করে ভ্রমণের সুযোগ পেত। এক রবিবার পর পর সে ট্রেন ধরে প্রত্যন্ত অঞ্চলে জংলা এলাকায় চলে যেত। আরব লোকদের খামারে গিয়ে ডিম, মুরগির বাচ্চা কিংবা খরগোশ কিনে নিয়ে এসে পাড়ার লোকদের কাছে বিক্রি করত। তাতে মোটামুটি ভালো মুনাফা পেত। তার জীবন সব দিক থেকেই গোছানো ছিল। তার কোনো নারী সংসর্গ ছিল না। সপ্তাহের কাজের দিনগুলো এবং রবিবারের অবসর সময়ের ফাঁকে নারী সংসর্গ লাভের জন্য ব্যয় করার মতো সময় তার ছিল না। তবে সে সব সময় বলে এসেছে চল্লিশ বছর বয়সে প্রতিষ্ঠিত কোনো মহিলাকে বিয়ে করবে। তার আগ পর্যন্ত সে ভাড়া করা ওই রুমে থাকবে, টাকা পয়সা জমাবে এবং মায়ের বাড়ির সঙ্গে খণ্ডকালীন সম্পর্ক রাখবে।

তার স্বভাবের মধ্যে চমৎকারিত্বের অভাবসহ যেরকম বলেছিল তেমন করেই চালিয়ে নিয়েছে তার পরিকল্পনা। যোসেফিন বিয়ে করেছিল এক পিয়ানো শিক্ষককে, চেহারাসুরত মোটেও খারাপ নয় এবং আসবাবপত্রসহ প্রায় বছর পাঁচেকের বুর্জোয়া সম্পত্তি নিয়ে এসেছিল যোসেফিনের সংসারে। সত্য কথা হলো, যোসেফিন আসবাবপত্রগুলো রাখতে পারল ঠিকই, স্ত্রীকে রাখতে পারল না। সে অবশ্য আলাদা কাহিনী। কিন্তু যোসেফিন যেটা বুঝতে পারেনি সেটা হলো, আর্নেস্টের সঙ্গে তার ঝগড়ার পর থেকে সে আর মায়ের বাড়িতে খেতে আসতে পারবে না। তাকে বরং বাধ্য হয়ে রেস্তোরাঁর দামী খাবার খেতে হবে। তাদের ঝগড়ার মূল কারণ অবশ্য জ্যাকের মনে নেই।

অনেক সময় আজানা কারণে কলহবিবাদ পরিবারের সদস্যদেরকে ভাগ করে ফেলত এবং সত্যিকার অর্থেই কেউ সেই বিবাদের কারণ আর খুঁজে পেত না। তাদের স্মৃতিশক্তি প্রচণ্ড রকমের দুর্বল থাকার কারণে ঝগড়ার কারণ কারো মনে থাকত না। তবে ঝগড়ার ফলাফল নিজেদের মধ্যে জিইয়ে রাখত এবং সেটাকে হজম করার মতো করে চিরতরে মেনেও চলত। সেদিনের ঘটনা সম্পর্কে জ্যাকের শুধু মনে আছে, আর্নেস্ট খাওয়ার মাঝখানে টেবিলের পাশে দাঁড়িয়ে চিৎকার করে তার ভাইয়ের উদ্দেশে যেসব কথা বলছিল সেগুলোর মধ্যে শুধু মজাবাইট কথাটা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল। যোসেফিন তখন বসা অবস্থাতে খেয়ে যাচ্ছে। তারপর আর্নেস্ট তার ভাইয়ের ওপর চড়াও হলে সেও উঠে দাঁড়িয়ে আর্নেস্টের দিকে তেড়ে আসতে চেষ্টা করে। ততক্ষণে অবশ্য নানি আর্নেস্টকে আড়াল করে দাঁড়িয়েছেন এবং জ্যাকের মা আবেগে ফ্যাকাশে হয়ে যোসেফিনকে পেছন থেকে আটকানোর চেষ্টা করছেন আর বলছেন, বাদ দে, ছেড়ে দে, ওকে কিছু বলিস না।

বালক হেনরি এবং জ্যাক ফ্যাকাশে হা করা মুখে তাকিয়ে সামনের নাটকীয় ঘটনা দেখছে আর একদিকে প্রবাহিত গালিগালাজের বন্যা শুনে যাচ্ছে। অবশেষে যোসেফিন উঠে বলল, ও একটা বোবা পশু; তোমরা ওকে কিছু বলতে পারো না! বলেই টেবিলের এপাশ থেকে ওপাশ পর্যন্ত ঘুরে অর্নেস্টকে ধরার চেষ্টা করল। কিন্তু নানি আর্নেস্টকে ধরে আড়াল করে রেখেছেন বলে আর্নেস্টকে ছুঁতে পারল না সে। আর্নেস্টও মায়ের আড়াল থেকেই হম্বিতম্বি করতে লাগল ভাইয়ের উদ্দেশে।

দরজা ধপাস করে বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরও আর্নেস্ট চিৎকার করতেই লাগল, যেতে দাও আমাকে, যেতে দাও। আমি তোমাকে মারবোই।

কিন্তু নানি তাকে চুল ধরে টেনে এনে মাথা ঝাঁকাতে ঝাঁকাতে বললেন, কী, তুই আমাকে মারবি, তোর মাকে মারবি! এত বড় সাহস তোর!

আর্নেস্ট ফুপিয়ে কাঁদতে কাঁদতে তার চেয়ারে বসে পড়ে বলল, না, না, তোমাকে না, ওকে। তুমি তো আমার আশীর্বাদের ঈশ্বরের মতো।

জ্যাকের মা খাওয়া শেষ না করেই নিজের ঘরে চলে গেলেন এবং পরদিন তার প্রচণ্ড মাথা ব্যথা শুরু হলো। সেদিনের পর থেকে যোসেফিন আর বাড়ি ফিরে আসেনি। আর্নেস্ট বাড়িতে নেই জানলে কালে ভদ্রে তার মায়ের সঙ্গে দেখা করতে এসেছে।

আর্নেস্ট মামার ক্ষিপ্ত অবস্থার আরেকটা উদাহরণ ছিল। সেটা মনে করতে জ্যাকের ভালো লাগেনি কখনও। কারণ জানারও তাগিদ বোধ করেনি সে। আর্নেস্ট মামার মোাটামুটি পরিচিত আঁতোই নামের একটা লোক তাদের বাড়িতে কিছুদিন আসা যাওয়া করেছে। বাজারে তার মাছের ব্যবসায় ছিল। লোকটা মালতিজ থেকে আগত। দেখতে মোটামুটি ভালোই ছিল। হালকা পাতলা গড়নের এবং লম্বা। অদ্ভূত ধরনের কালো একটা হ্যাট পরত; গলায় একটা দোপাট্টা জাতীয় কাপড় থাকত।

সেটার ভাঁজ করা গিট্টু থাকত শার্টের নিচে। তখন মাথায় না এলেও জ্যাক পরে বুঝতে পেরেছে, ওই লোকটার যাওয়া আসার সময়ে তার মায়ের পোশাক আশাকও অনেকটা কেতাদুরস্ত হয়েছিল। উজ্জ্বল রঙের জামা কাপড় আর মুখে রুজ মাখতেন তিনি। ওই সময়টাতে মহিলারা তাদের চুল ছোট করে কাটা শুরু করে। তার পূর্বে তারা লম্বা চুলই রাখত। মাকে এবং নানিকে চুল বাঁধার দৃশ্যে দেখতে ভালো লাগত জ্যাকের। ঘাড়ের ওপরে একটা তোয়ালে ফেলে দিয়ে মুখে একগুচ্ছ চুলের কাঁটা আটকে রেখে অনেকক্ষণ ধরে তারা চিরুনি চালাতেন চুলের মধ্যে। তারপর চুলের গোছা ওপরের দিকে তুলে একটা ব্যান্ড দিয়ে আটকে দিতেন ঘাড়ের ওপরে। একটুখানি ফাঁকা ঠোঁটের মধ্য দিয়ে দেখা যেত দাঁতের সঙ্গে চুলের কাঁটা আটকে রেখেছেন। একটা একটা করে কাঁটা বের করে এনে চুলের খোপায় গুঁজে দিচ্ছেন। নতুন স্টাইল নানির কাছে হাস্যকর এবং লজ্জাকর মনে হয়েছিল। নতুন ফ্যাশনের কিছু না জানার কারণে যুক্তি-তর্কের বালাই না মেনেই নানি বলতেন যেসব মেয়েরা রাস্তায় ঘুরে বেড়ায় তাদের জন্য ওই রকম হাস্যকর ফ্যাশন প্রযোজ্য।

জ্যাকের মা নানির মতামতের কথা মনে রেখেছিলেন বলা যায়। তবে বছর খানেক পর যখন আঁতোই লোকটার আনাগোনা শুরু হয়েছে তাদের বাড়িতে তখন একদিন সন্ধ্যায় মা চুল কাটা অবস্থায় বাড়িতে ঢুকলেন। সতেজ এবং নবযৌবনা মনে হলো তাকে। মা বললেন সবাইকে চমকে দেওয়ার জন্য তার ওই ধরনের কেতায় চুল কাটা। আসলে মুখে হাসি ফুটিয়ে কথা বললেও তার ভেতরটা উদ্বিগ্নতায় ভরা ছিল।

চলবে...

এসএ/

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১

আরও ৩ দিন হিট অ্যালার্ট জারি

হিট অ্যালার্ট জারি। ছবি: সংগৃহীত

দেশজুড়ে চলমান তাপমাত্রার পারদে উঠতি গতার খুব একটা হেরফের না হওয়ায় এখনও অস্বস্তি কমেনি। মাথার ওপর গনগনে সূর্যকে সঙ্গী করেই প্রচণ্ড দাবদাহে নাজেহাল পরিস্থিতি পার করছে মানুষ। যদিও কয়েকদিনের তুলনায় কিছুটা বাতাসের উপস্থিতি থাকলেও পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকার কথা জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান এ তথ্য জানান।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক বলেন, আমরা এর আগে তিন দিনের যে হিট অ্যালার্ট জারি করেছিলাম তার মেয়াদ আজ শেষ হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) থেকে আরও তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি করা হবে। কারণ, আপাতত বড় পরিসরে বৃষ্টি হয়ে তাপপ্রবাহ দূর হওয়ার সম্ভাবনা নেই। আমরা হিট অ্যালার্ট জারি করে সরকারকে জানিয়ে দিই। সরকার সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে। সংশ্লিষ্টরা তাদের করণীয় যা সেটা করবে।

তিনি বলেন, সারাদেশের তাপমাত্রা গতকালের থেকে আজ কিছুটা বেড়েছে। চলতি এপ্রিল মাসে তাপপ্রবাহ পুরোপুরি দূর হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। আমরা দেখছি যে এটা মে মাসের ২ থেকে ৩ তারিখ পর্যন্ত চলবে। এরপর হয়তো বিভিন্ন অঞ্চলে কিছু বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। এর আগে পর্যন্ত বড় পরিসরে বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। স্থানীয়ভাবে বিচ্ছিন্নভাবে কোথাও কোথাও বৃষ্টি হতে পারে।

মো. আজিজুর রহমান বলেন, আপাতত দিনের তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পার হওয়ার কোনো লক্ষণ দেখছি না। ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত তাপমাত্রা আর খুব বেশি বাড়ার সম্ভাবনা নেই।

এদিকে বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় দেওয়া পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে এবং সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। খুলনা বিভাগসহ দিনাজপুর, নীলফামারী, রাজশাহী, পাবনা, ফরিদপুর ও গোপালগঞ্জ জেলাসমূহের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও বান্দরবান জেলাসহ বরিশাল বিভাগ এবং রংপুর, রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগের অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। সারাদেশে দিনের এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। বিরাজমান তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিবিরাজ করতে পারে।

শনিবার (২৭ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে এবং সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। বিরাজমান তাপ প্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বিরাজ করতে পারে।

আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ের গল্প আসছে বাংলাদেশের পর্দায়

ডকুফিল্ম ‘মুচাচোস’ এর পোস্টার। ছবি: সংগৃহীত

৩৬ বছরের আক্ষেপ ঘুচিয়ে ২০২২ সালের কাতার বিশ্বকাপ জিতেছে আর্জেন্টিনা। সৌদি আরবের কাছে হেরে অঘটন দিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করেছিল আলবিসেলেস্তারা। তবে শেষমেশ লিওনেল মেসির হাতেই ওঠে বিশ্বকাপের সোনালি ট্রফি, এমন বিশ্ব আসরকে সেরা বলতে বাধ্য যে কেউ।

অবিস্মরণীয় এই বিশ্বকাপের রোমাঞ্চ নিয়ে এরইমধ্যে নির্মিত হয়েছে বেশ কিছু ডকুফিল্ম। যার মধ্যে আলোচিত একটি স্প্যানিশ ভাষায় নির্মিত ডকুফিল্ম ‘মুচাচোস’।

স্প্যানিশ পরিচালক জেসাস ব্র্যাসেরাস নির্মাণ করেছেন ১০০ মিনিটের এই ডকুফিল্ম। গত ডিসেম্বরে আর্জেন্টিনায় মুক্তি পাওয়া ‘মুচাচোস’ সেখানকার দর্শকদের মধ্যে দারুণ সাড়া তুলেছিল।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে স্টার সিনেপ্লেক্স জানিয়েছে, আগামী শুক্রবার ‘মুচাচোস’ মুক্তি পাবে এই মাল্টিপ্লেক্সের সবগুলো শাখায়।

বাংলাদেশে ডকুফিল্মটি মুক্তি নিয়ে স্টার সিনেপ্লেক্সের মিডিয়া ও মার্কেটিং বিভাগের সিনিয়র ম্যানেজার মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, “বাংলাদেশে আর্জেন্টিনার বিপুলসংখ্যক সমর্থক রয়েছে। কাতার বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার খেলা উপভোগ করেছে কোটি মানুষ। বিশ্বকাপ জয়ের পর ঢাকাসহ সারাদেশ উৎসবমুখর হয়ে উঠেছিল। বাংলাদেশের সমর্থকদের উন্মাদনা দেখে রীতিমত অবাক হয়েছেন আর্জেন্টিনার মানুষও।

“লিওনেল মেসির হাত ধরে বিশ্বকাপ জয়ের এই মুহূর্ত নিয়ে ভক্তদের উৎসাহ ফুরাবে না সহজে। এই ভক্ত-সমর্থকদের জন্যই ‘মুচাচোস’ নিয়ে এসেছি আমরা। আশা করি এই ছবি দেখাটা চমৎকার একটা ব্যাপার হবে দর্শকদের জন্য।’’

‘মুচাচোস’এ অভিনয় করেছেন জেসুস ব্র্যাসেরাস, বসসি অগাস্টিন বসি, হার্নান ক্যাসশিয়ারি, ম্যাক্সিমিলিয়ানো লাসানস্কিসহ আরও অনেকে।

শরীয়তপুরে দুপক্ষের সংঘর্ষে শতাধিক ককটেল বিস্ফোরণ, আহত ৫

হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন সংঘর্ষে আহত এক ব্যক্তি। ছবি: সংগৃহীত

শরীয়তপুরের জাজিরায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও তার প্রতিপক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত ৫ জন আহত হয়েছেন। এ সময় শতাধিক ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকাল থেকে দফায় দফায় উপজেলার বিলাসপুর ইউনিয়নের সারেংকান্দি এলাকায় এ সংঘর্ষ হয়।

আহতরা হলেন- শাহাবুদ্দিন সারেং (৩০), মো. আরশাদুল (১১), সৈকত সরদার (১৯), হাজেরা বেগম (৭৫) ও আকাশ হাওলাদার (২৮)।

পুলিশ ও স্থানীয় সুত্র জানায়, জাজিরা উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও বিলাসপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস বেপারী এবং তার নির্বাচনি প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা আব্দুল জলিল মাদবরের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। এই নিয়ে বেশ কয়েকবার দুপক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। গত ২৭ মার্চ দুপক্ষের সংঘর্ষে বোমার আঘাতে সজীব মুন্সী নামের এক যুবক গুরুতর আহত হন। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

সেই ঘটনার সূত্র ধরে আজ আবারও দুপক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়ায়। সকাল থেকে দফায় দফায় সংঘর্ষ চলে। এসময় তারা সারেংকান্দি এলাকায় ফসলি জমিতে নেমে একে–অপরকে লক্ষ্য করে হাতবোমা (ককটেল) ছুঁড়তে থাকে। ককটেলের মুহুর্মুহু শব্দে ভারী হয়ে উঠে আশপাশ। এই ঘটনায় শাহাবুদ্দিন, আরশাদুল, সৈকত, আকাশ ও হাজেরা নামে ৫ জন গুরুতর আহত হয়। পরে তাঁদের উদ্ধার করে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এরমধ্যে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য শাহাবুদ্দিন, আরশাদুল, সৈকত ও আকাশকে ঢাকায় পাঠান। এছাড়া দুপক্ষের বেশকিছু বাড়িঘর ভাংচুর করা হয়। বর্তমানে এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এলাকায় পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

সাবেক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আব্দুল জলিল মাদবর অভিযোগ করে বলেন, ‘কুদ্দুস বেপারীর লোকজন গতকাল মঙ্গলবার আমাকে উদ্দেশ্য করে ফেসবুকে স্টাটাস দিয়ে বলেন, ‘‘বাবার জন্মে হয়ে থাকলে সবার সামনে গিয়ে মারামারি করিস। পোলাপান সামনে দিয়ে মারামারি করিস না। আগামীকাল সকালে শুরু হবে।’’ এ বিষয়ে আমি পুলিশকে জানিয়েছি। পরে আজ কুদ্দুস বেপারীর লোকজন আমার লোকজনের বাড়িঘর ভাংচুর করে ও আমাদের লোকজনের ওপর হামলা চালায়।’

তবে আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল কুদ্দুস বেপারী বলেন, ‘জলিল মাদবর মারামারি করার জন্য কয়েক গ্রাম থেকে লোকজন এনে আমার লোকজনের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে। পরে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে আমার একজন লোক মুমূর্ষু অবস্থায় আছে।’

এ বিষয়ে জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান বলেন, কয়েক বছর যাবত বিলাসপুর ইউনিয়নে দুইটি গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্ব, হামলা-মামলা চলছে। তারই জেরে আজ দুই পক্ষ সংঘর্ষে জরায়। আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে সংঘর্ষ থামাতে চেষ্টা করি। কিন্তু আমরা পৌঁছানোর আগেই দুপক্ষের অন্তত চারজন লোক আহত হয়। তারা বেশ কিছু ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় ও বাড়িঘর ভাংচুর করেছে। যারা এসব ঘটিয়েছে তাদের আটকের চেষ্টা চলছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ সংবাদ

আরও ৩ দিন হিট অ্যালার্ট জারি
আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ের গল্প আসছে বাংলাদেশের পর্দায়
শরীয়তপুরে দুপক্ষের সংঘর্ষে শতাধিক ককটেল বিস্ফোরণ, আহত ৫
মুক্তি পেল ইমতু রাতিশ ও অলংকার এর 'বরিশাইল্লা সং'
জরুরি সাংগঠনিক নির্দেশনা দিলো ছাত্রলীগ
সাহিত্য চর্চার আড়ালে শিশু পর্নোগ্রাফি বানাতেন টিপু কিবরিয়া
সাজেকে শ্রমিকবাহী ট্রাক খাদে পড়ে নিহত ৬
ধাওয়া খেয়ে গরু ও গাড়ি রেখে পালালো চোর, গাড়িতে আগুন দিল জনতা
আর্জেন্টাইন ফুটবলার কার্লোস তেভেজ হাসপাতালে ভর্তি
সাংবাদিকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে এফডিসিতে মানববন্ধন
রাজবাড়ীতে হিটস্ট্রোকে স্কু‌লশিক্ষকের মৃত্যু
প্রসূতির পেটে গজ ও ফুল রেখে সেলাইয়ের অভিযোগ, তদন্ত কমিটি গঠন
তাপদাহ কমে গেলে লোডশেডিং থাকবে না: বিদ্যুৎ সচিব
ইন্টারনেট ছাড়াই হোয়াটসঅ্যাপে ছবি-ভিডিও পাঠাবেন যেভাবে
ইতিহাস গড়লেন বাংলাদেশি নারী বক্সার জিন্নাত ফেরদৌস
নিজে না মেরেও সাংবাদিকদের কাছে ক্ষমা চাইলেন রিয়াজ
নারী কর্মীদের বোরকা ও নেকাব পরা নিষিদ্ধ করল চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতাল
ব্যাংককে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লাল গালিচা সংবর্ধনা
কালশী উড়ালসেতুর নাম বদলে হলো শেখ তামিম মহাসড়ক
ক্যান্সারে না ফেরার দেশে পেপার রাইম ব্যান্ডের সাদ