সিরাজগঞ্জে রমজানে বেড়েছে সলপের ঘোলের চাহিদা
ফুরসত নেই দোকানিদের। এদিকে ক্রেতাদেরও তাড়া কে কার আগে কিনবেন। মজুদ শেষ হওয়ার আগেই লোভনীয় এ ভোগ্যপণ্যটি হস্তগত করতে চান ক্রেতারা। কারণ এখান থেকেই নিয়ে যান পাইকারি বিক্রেতারাও। আর রমজানে এর ক্রেতা বেড়ে যায় কয়েকগুণ। যা নিয়ে এত কাড়াকাড়ি তা হলো- সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার সলপের ঘোল।
গ্রামের খামারিদের কাছ থেকে গরুর দুধ সংগ্রহ করে তা তিন-চার ঘণ্টা জ্বাল দিয়ে একটা পাত্রে রেখে দেওয়া হয়। তারপর সেই দুধ জমে গেলে তাতে চিনি ও অন্যান্য উপকরণ মিশিয়ে তৈরি করা হয় সুস্বাদু ঘোল।
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় ঐতিহ্যবাহী সুস্বাদু এ ঘোল তৈরি করা হয়। যা সারাদেশে সমাদৃত হয়েছে সলপের ঘোল নামে। সলপের ঘোলের সুনাম শুধু সিরাজগঞ্জে নয়, ছড়িয়ে পড়েছে সারাদেশে। এলাকার প্রবীনদের মতে এ ঘোল তৈরির পেছনে আছে ১০০ বছরের ঐতিহ্য। সারা বছরই এ ঘোলের ক্রেতা আসে বিভিন্ন স্থান থেকে। গরমের সময়ে এ ঘোলের চাহিদা থাকে বেশি। বিশেষ করে রমজান মাসে অন্যান্য সময়ের চেয়ে চাহিদা অনেক বেড়ে যায়। ঘোলের চাহিদা বাড়ায় দিন-রাত কাজ করেন কর্মীরা। এসময় বিভিন্ন এলাকার পাইকারি ও খুচরা ক্রেতারা এ ঘোল কিনতে ভিড় করছেন।
উল্লাপাড়ার সলপ রেলস্টেশন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, স্টেশনের পাশে ঘোলের দোকানগুলো জমে উঠেছে। ক্রেতারা পাত্র নিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। দোকানের সামনে স্টিলের হাড়ি থেকে ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী বিক্রি করছেন বিক্রেতারা। দোকানের পেছনে কর্মীরা ঘোল তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। অনেকেই দূরদূরান্ত থেকে এ ঘোলের জন্য এখানে এসেছেন।
পাইকাররা এখান থেকে ঘোল নিয়ে বিভিন্ন হাট-বাজারে বিক্রি করবেন। আবার অনেকে পরিবার বা আত্মীয়-স্বজনদের জন্য কিনতে এসেছেন এ ঘোল।
সিরাজগঞ্জ শহর থেকে ঘোল কিনতে আসা পাইকারী ব্যবসায়ী রুবেল হোসেন বলেন, রমজান মাসে এখান থেকে ঘোল-মাঠা কিনে নিয়ে এলাকায় বিক্রি করি। প্রতিদিন দুই থেকে আড়াই মণ ঘোল এলাকায় বিক্রির জন্য নিয়ে যাই। হাট-বাজারে সলপের ঘোলের চাহিদা অনেক বেশি। অন্যান্য স্থানের ঘোলের চেয়ে এখানকার ঘোলের দাম প্রতি কেজিতে ১০-১৫ টাকা বেশি। দাম বেশি হলেও সলপের ঘোলের চাহিদা অনেক বেশি।
ঘোল উৎপাদনকারী আবদুল খালেক জানান, সলপের ঘোল সারা দেশে সমাদৃত। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ সলপে আসেন ঘোলের স্বাদ নিতে। সারা বছরই এখানে ক্রেতাদের আনাগোনা থাকে। তবে রমজান মাসে সলপের ঘোলের চাহিদা অনেক বেড়ে যায়। দূরদূরান্ত থেকে পাইকার ও খুচরা ক্রেতারা আসেন ঘোল কিনতে। আমরা ব্যবসায়ীরা সলপের ঘোলের ঐতিহ্য ধরে রাখতে সর্বক্ষণ সচেষ্ট রয়েছি। আশা করছি সলপের ঘোলের সুনাম দেশজুড়ে আরও ছডিয়ে পড়বে।
এসএন
আজকের সেহরির শেষ সময় (ঢাকা)
ঘণ্টা
মিনিট
সেকেন্ড